“এতবড় একজন মানুষ, বাঙালির ঐতিহ্য হিসেবে…” মেসিকে পকেট পরোটা খাইয়েছেন রাজু দা? যুবভারতীর বিশৃঙ্খলার মাঝেই অন্য গল্প, ফুটবলের ঈশ্বর কি তবে পেলেন ফুটপাতের স্বাদ? কী জানালেন ভাইরাল পরোটা বিক্রেতা?

মেসির কলকাতা সফর (Messi Kolkata Visit) নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ফুটবল ভক্তদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। আর সেই উত্তেজনার মাঝেই হঠাৎ করে এক অচেনা প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছিল সমাজ মাধ্যমে, মেসি কলকাতা এলে কি রাজু দা (Raju Da Pocket Porota), নিজের সেই বিখ্যাত পকেট পরোটা খাওয়াবেন? গতকাল রাজু দার সঙ্গে সত্যিই সাক্ষাৎ হয়েছে ফুটবলের রাজপুত্রর। তবে কি, বিশ্ব ফুটবলের মহাতারকাকে কি সত্যিই নিজের হাতে বানানো পকেট পরোটা খাইয়েছেন ভাইরাল রাজু দা?

প্রসঙ্গত, যুবভারতীর বিশৃঙ্খলা থেকে টিকিট কেটেও মেসিকে দেখতে না পারার আক্ষেপ বিতর্কের মাঝে, ভিড় ঠেলে এই গল্পটাই যেন আলাদা করে জায়গা করে নিয়েছিল মানুষের কৌতূহলে। মাঠে বসে মেসিকে দেখা না পাওয়া হাজারো সমর্থকের মনে তখন প্রশ্ন, যিনি রোজ ফুটপাতে পরোটা বিক্রি করেন, তাঁর ভাগ্যে কীভাবে এমন মুহূর্ত জুটল? উল্লেখ্য, রাজু দা এখন আর শুধু পকেট পরোটা বিক্রেতা নন, তিনি সমাজ মাধ্যমের সেনসেশন। মেসির ভারত সফরের ঘোষণার পর থেকেই তাঁর নাম ঘুরছিল আলোচনায়।

আগে একটি এডিটেড ছবি ভাইরাল হয়েছিল, যেখানে দেখা গিয়েছিল রাজু দার পাশে পরোটা হাতে মেসিকে। অনেকেই ভেবেছিলেন মজা বা কাকতাল, কিন্তু সেই ছবিকে বাস্তব করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এই সফরের অন্যতম উদ্যোক্তা। সেই প্রতিশ্রুতি ঘিরেই যেন রাজু দার জীবনের সবচেয়ে আলোচিত অধ্যায় তৈরি হলো কাল। যুবভারতীর গ্যালারিতে না হোক, অন্য এক জায়গায় তাঁর সামনে হাজির হন ফুটবলের ঈশ্বর। ঘটনাটা আসলে স্টেডিয়ামের ভেতরে নয়।

জানা গিয়েছে, মেসি যে হোটেলে ছিলেন, সেখানেই রাজু দার সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। রাজু দার নিজের কথাতেই স্পষ্ট, এই সাক্ষাৎ তাঁর কাছে জীবনের এক অনন্য অভিজ্ঞতা। বিভিন্ন ভিডিওতে, সংবাদ মাধ্যমের সামনে তিনি বারবার বলেছেন, এই আনন্দের সঙ্গে তাঁর জীবনের অন্য কোনও দিনের তুলনা চলে না, এমনকি নিজের বিয়ের দিনও নয়! মেসির সামনে দাঁড়িয়ে তিনি যেন এক মুহূর্তের জন্য নিজের দৈনন্দিন সংগ্রাম, ফুটপাতের ভিড়, সবকিছু ভুলে গিয়েছিলেন। এই সাক্ষাৎ ঘিরে মানুষের আগ্রহের সবচেয়ে বড় জায়গাটা ছিল খাবার।

বাঙালির অতিথিপরায়ণতায় রাজু দা কি সত্যিই নিজের হাতের পরোটা তুলে দিয়েছিলেন মেসির হাতে? কেউ কেউ ধরে নিয়েছিলেন, ফুটবল তারকার সামনে বাঙালি স্বাদের ছোঁয়া পৌঁছে গিয়েছে। আবার অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন, এত কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সেটা কি আদৌ সম্ভব? রাজু দার কথায় যদিও স্পষ্ট যে ইচ্ছে আর বাস্তবতার মাঝখানে তখন বড় ফারাক ছিল। সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে রাজু দা নিজেই সবটা বলেছেন, সেটাই শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য উত্তর।

আরও পড়ুনঃ “আমার ভয় মানে দায়িত্ব, চাই না আমার কোনও কাজে মা-বাবার মাথা নিচু হোক” সহজের কথাতেই ধরা পড়ল, রাহুল-প্রিয়াঙ্কার ছেলেকে দেওয়া শিক্ষা! এই বয়সেই তাঁর এমন পরিণত মানসিকতায় মুগ্ধ নেটপাড়া!

তাঁর বক্তব্যে কোনও নাটক নেই, আছে সাধারণ এক মানুষের সরল স্বীকারোক্তি। তিনি বলেন, “এতবড় একজন মানুষ, তার জন্য ইচ্ছা থাকলেও পরোটা আনা সম্ভব নয়। তবে, পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য হিসেবে রসগোল্লা খাওয়াতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেটাও বারণ ছিল। এমনকি ওনাকে ছোঁয়াও যাবে না বলা হয়েছিল, নাহলে বাঙালিদের সংস্কৃতি মাথায় রেখে একটা প্রণাম করতাম। তবে, ওনাকে যে দেখতে পেয়েছি চোখের সামনে এটাই অনেক।”