“আমার ভয় মানে দায়িত্ব, চাই না আমার কোনও কাজে মা-বাবার মাথা নিচু হোক” সহজের কথাতেই ধরা পড়ল, রাহুল-প্রিয়াঙ্কার ছেলেকে দেওয়া শিক্ষা! এই বয়সেই তাঁর এমন পরিণত মানসিকতায় মুগ্ধ নেটপাড়া!

প্রথম ছবি করতে গিয়েই আলাপ, তারপরেই প্রেম থেকে বিয়ে এবং সন্তান জন্ম। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে রাহুল অরুণোদয় বন্দোপাধ্যায় (Rahul Arunoday Banerjee) ও প্রিয়াঙ্কা সরকারের (Priyanka Sarkar)। তাদের ছেলে ‘সহজ’ সবে মাত্র পা দিয়েছে কিশোর বয়সে, কিন্তু এখন থেকেই যেন সে বাবা-মায়ের আদর্শকেই জীবনের অঙ্গ করে নিয়েছে। এই বয়সেই তাঁর কথা শুনলে বোঝার উপায় নেই যে কতটা ছোট সে! সম্প্রতি পডকাস্টের এক ফাঁকে বাবার করা ছোট্ট প্রশ্নটাই যেন অনেক বড় হয়ে ধরা দিল তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি।

রাহুল যখন সহজকে জিজ্ঞেস করেছিলেন সে কি মাকে ভয় পায়? তখন ১১ বছরের ছেলের উত্তর শুনে থমকে যাওয়ার মতো অবস্থা। সহজ বলে, “অবশ্যই ভয় পাই দু’জনকেই আর ভয় পাওয়া তো একদিক দিয়ে উচিৎ! তবে, সেই ভয়টা অন্যরকম। আমি ভয়ে পাই যে মা-বাবাকে কোনদিনও যাতে দুঃখ না দেই। তোমাদের আমার জন্য মাথা নিচু যেন না হয়। ওরম ভয় কখনওই পাই না যে, আমার এটা হয়েছে বলে আমি বাবা-মাকে বলতে পারব না। আমি আমার বাবা-মাকে খুব বিশ্বাস ও ভরসা করি।”

এই কথাগুলোর মধ্যেই স্পষ্ট তার ভাবনার গভীরতা। ভয় নয়, দায়িত্ববোধই যেন আসল অনুভূতি! সহজ এখন এমন এক বয়সে, যখন বেশিরভাগ শিশুই নিজের জগতে ডুবে থাকে। অথচ তার চিন্তাভাবনায় রয়েছে পরিণতির ছাপ। বাবা-মায়ের প্রতি সম্মান, বিশ্বাস আর ভালবাসা মিলিয়ে তার কথায় যেন এক ধরনের স্বচ্ছতা রয়েছে। সে ভয় পায় শাসনের কারণে নয়, বরং এই আশঙ্কায় যে তার কোনও কাজ যেন মা বা বাবার কষ্টের কারণ না হয়ে দাঁড়ায়। এই মানসিকতা খুব স্বাভাবিক নয়, আবার খুব জোর করেও শেখানো যায় না।

এটা আসে পারিবারিক পরিবেশ আর সম্পর্কের ভিতর দিয়ে। প্রসঙ্গত, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা সরকারের জীবনপথ যে একেবারে সরল ছিল না, তা কারও অজানা নয়। সম্পর্কের ভাঙা-গড়ার মাঝেও ছেলে সহজই তাঁদের এক সুতোয় বেঁধে রেখেছে। আলাদা থাকার পরেও সন্তানের জন্য আবার কাছাকাছি আসা, একসঙ্গে সময় কাটানো থেকে অনুষ্ঠান বা ছুটিতে যাওয়া, সবকিছুর কেন্দ্রে রয়েছে সহজ। মা-বাবার পাশে হাসিমুখে দাঁড়ানো ছেলেটির চোখেমুখেই বোঝা যায়, সে নিজেকে নিরাপদ মনে করে।

আরও পড়ুনঃ “শুভশ্রী গাঙ্গুলীকে আপনারা চেনেন?” “একজন অভিনেত্রী বলে কি সে মেসির ভক্ত হতে পারে না?” যুবভারতীর অরাজকতায়, ছবি পোস্ট করতেই টার্গেট ট্রোল শুভশ্রীকে! ক্ষো’ভ উগরে, সমাজ মাধ্যমে স্ত্রীর পাশে শক্ত হয়ে দাঁড়ালেন রাজ চক্রবর্তী!

শুধু কথায় নয়, কাজেও সহজ নিজের পরিচয় গড়তে শুরু করেছে। মাত্র ১১ বছর বয়সেই তার লেখা বই প্রকাশ পাওয়া নিঃসন্দেহে গর্বের বিষয়। ‘দ্য এনচ্যান্টেট গিটার’ নামের বইটি প্রকাশের খবর সমাজ মাধ্যমে বছর খানেক আগে নিজেই ভাগ করে নিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা। সন্তানের সাফল্যে আনন্দ লুকোনোর চেষ্টা করেননি বাবা-মা কেউই। তবে এই সাফল্যের আড়ালেও সহজের কথাবার্তায় কোথাও অহংকার নেই, আছে ভারসাম্য। সহজ ভবিষ্যতে মা-বাবার নাম আরও উজ্জ্বল করবে, সেই আশা রাখি আমরাও।