টলিউডের বাণিজ্যিক ছবির ইতিহাসে এমন কিছু সংলাপ আছে, যা আজও দর্শকের মুখে মুখে ফেরে। তার মধ্যে একটি নিঃসন্দেহে রঞ্জিত মল্লিকের (Ranjit Mallick) কিংবদন্তি সংলাপ — “চাপকে পিঠের চামড়া তুলে দেব।” এই একটাই সংলাপ তাঁকে দর্শকের মনে অমর করে রেখেছে। এক সময় বাণিজ্যিক বাংলা ছবিতে তাঁকে দেখা যেত ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে, হাতে সেই চেনা বেল্ট। ভিলেনদের শিক্ষা দিতে তিনি বেল্ট খুলেছেন, আবার সেই বেল্টই হয়ে উঠেছে সাহস আর প্রতিবাদের প্রতীক। তাই তো আজও দর্শকরা তাঁকে মনে রাখেন ‘বেল্ট ম্যান’ নামেই।
তবে কঠোর চরিত্রের আড়ালে যে এক গভীর সংবেদনশীল মানুষ লুকিয়ে আছেন, সেটাও খুব কম মানুষই জানেন। শুধু অ্যাকশন নয়, রোম্যান্স থেকে কমেডি— সব চরিত্রেই তিনি ছিলেন সমান স্বচ্ছন্দ। ‘মৌচাক’-এ মহানায়ক উত্তম কুমারের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি যেমন হাস্যরসের ছোঁয়া দিয়েছেন, তেমনই ‘শুক্র’-র মতো ছবিতে এক ক্ষুধার্ত শিশুর কান্না তাঁকে চোখের জলে ভাসিয়েছিল। কিন্তু এই অভিনেতার কেরিয়ার শুরু হয়েছিল একেবারেই অন্য পথে। মৃণাল সেনের ‘ইন্টারভিউ’ ছবির হাত ধরে তিনি প্রথম বড় পর্দায় পা রাখেন।
তারপর ‘কলকাতা ৭১’ এবং সত্যজিৎ রায়ের ‘শাখা প্রশাখা’-তে তাঁর অভিনয় তাঁকে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। সমাজের বাস্তবতা, মানবিক সম্পর্কের টানাপোড়েন— এই সব কিছুর মধ্যেই তিনি নিজের অবস্থান তৈরি করেছিলেন এক প্রজন্মের কাছে। বাণিজ্যিক ধারার পাশাপাশি শিল্পধারার সিনেমায়ও সমান সাবলীল ছিলেন রঞ্জিত মল্লিক। অভিনয়জীবনের পাশাপাশি মানুষ হিসেবেও তিনি সব সময় ছিলেন বাস্তবের মাটিতে পা রেখে চলা একজন শিল্পী। বর্তমানে এই অভিনেতা ইন্ডাস্ট্রি থেকে নিজেকে অনেকটাই সরিয়ে নিয়েছেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, এই যে বর্তমান ইন্ডাস্ট্রিতে হামেশাই কেউ না কেউ অভিযোগ করছে কাজ না পাওয়ার। অনেকেই বলছে তারা ইন্ডাস্ট্রির রাজনীতির শিকার হচ্ছে, তাই কাজ পাচ্ছে না। ইন্ডাস্ট্রির রাজনীতি কি আগে ছিল না? থাকলেও অভিনেতা কিভাবে এসবের সঙ্গে লড়াই করেছেন? রঞ্জিত মল্লিক সোজাসুজি জানান, “আমাদের সময় রাজনীতি বলতে তেমন কিছু ছিল না ইন্ডাস্ট্রিতে। বর্তমানে এই সব অনেক প্রকট হয়ে উঠেছে। শুরু থেকেই কিছু প্রতিপত্তিশালী লোক তো থাকবেই, যাদের মাথা বলা হয়।
আরও পড়ুনঃ “আমি কাউকে অশালীন মন্তব্য করিনি, কোনও প্রমাণ নেই…পুলিশে অভিযোগ করুক!”— চরিত্র নিয়ে ওঠা বিতর্কে অবশেষে মুখ খুলতেই বি’স্ফো’রক দাবি ঋজু বিশ্বাসের! মিথ্যে অভিযোগে ফাঁ’সানোর চেষ্টা হচ্ছে তাঁকে? কী জানালেন তিনি?
অবশ্যই বিভিন্ন সময় আমারও তাদের সঙ্গে মতবিরোধ হয়েছে, কিন্তু একসঙ্গে বসে বোঝাপড়া করে সেই সব মিটে গেছে। পরবর্তীতে আমরা একসঙ্গে কাজও করেছি। আজকাল এই বোঝাপড়াটার অভাবেই সব সমস্যা বাড়ছে। দুই পক্ষের উচিত পরস্পরের সমস্যা শুনে একটা সমাধান বের করা, তবেই ব্যক্তিগত উন্নতি সম্ভব। সর্বোপরি ইন্ডাস্ট্রির সামগ্রিক উন্নতি সম্ভব।” তাঁর এই কথাতেই স্পষ্ট, পর্দার বাইরেও তিনি কতটা পরিণত ও স্থির চিন্তার মানুষ। রঞ্জিত মল্লিকের জীবনে বেল্ট শুধু ন্যায়বিচারের প্রতীক নয়, সেটা এক ধরনের শৃঙ্খলারও প্রতীক— যা তিনি আজও মেনে চলেন।







চরিত্র থেকে চেহারা নেটপাড়ায় ব্যক্তিগত আক্র’মণে জেরবার অভিনেত্রী কমলিকা ব্যানার্জি! পার্বতী চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলাম, অকপট অভিনেত্রী! তবেই কি পরিবর্তন হল চরিত্রের?