‘মেসির সঙ্গে সেলফি পাঠাও! কেমন লাগল নয় হাজারের টিকিট কেটে?’ আমি তো খুশি, বেশ হয়েছে!’ ব্যর্থ মেসি দর্শনের পর সায়কের মন্তব্য! ‘এই নাকি ইনফ্লুয়েন্সার, মানুষ কাঁদছে আর উনি হাসছেন!’ ‘আবেগ নিয়ে খেলাটা অসভ্যতা!’ মেসি কাণ্ডে ‘মজা’র ভিডিও ঘিরে কটাক্ষ নেটিজেনদের!

গতকাল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যা ঘটেছে, তা নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনায় রাজ্য-রাজনীতি থেকে সাংস্কৃতিক মহল কার্যত উত্তাল! মাঠের অব্যবস্থা, নিরাপত্তার ঘাটতি, দর্শকদের উন্মাদনা মিলিয়ে ছবিটা কারও কাছেই সুখকর নয়। মেসির (Messi Kolkata Visit) মতো একজন বিশ্বতারকার সামনে এমন বিশৃঙ্খলা যে দেশের ফুটবল সংস্কৃতির জন্য লজ্জার, তা অনেকেই মেনে নিয়েছেন! কিন্তু এই ঘটনার পর যা সবচেয়ে বেশি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, তা শুধু ভাঙচুর বা ক্ষতির অঙ্ক নয় বরং মানুষের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা কিছু মন্তব্য ও প্রতিক্রিয়া।

চারিদিকে যখন এত মানুষের আবেগ ক্ষতিগ্রস্ত, তখন সমাজ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেন ছোটপর্দার অভিনেতা ও জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সার সায়ক চক্রবর্তী (Sayak Chakraborty)। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি গাড়ির ভেতরে বসে বন্ধু সুকান্ত কুণ্ডুর সঙ্গে। সেখানে সায়ক হাসিঠাট্টার সুরে বলেন, “শুনলাম নাকি কোলকাতায় তোলপাড় হয়ে গেছে! যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন নাকি ভাঙচুর হয়ে শেষ হয়ে গেছে! তা কে কে দেখতে পেলে গো মেসিকে? বলছি একটু সেলফি যেগুলো তুললে, একটু পাঠাও না!

যারা নয় লাখ টাকা দিয়েছ ছবির জন্য, নয় হাজারের টিকিট কেটেছ, কেমন লাগল তোমাদের মেসিকে দেখে? কি সুন্দর না? আমি তো ভাবতেই পারছি না, তোমরা সামনে থেকে মেসিকে দেখলে! আমার এটা স্বপ্ন ছিল, আমি আর সুকান্ত এত চেষ্টা করেছিলাম টিকিটের জন্য কিন্তু পেলাম না। এখন মনে হচ্ছে ভালোই হয়েছে, বেশ হয়েছে।” কথাগুলো তিনি মজা করেই বলেছেন বলে দাবি করলেও, পরিস্থিতির গুরুত্বের নিরিখে অনেকের কাছেই তা নিতান্ত রসিকতা ছিল না।

কারণ, সেই সময় হাজার হাজার দর্শক হতাশ হয়ে স্টেডিয়াম ছেড়েছেন। অনেকেই প্রিয় খেলোয়াড়কে এক ঝলক দেখার সুযোগ পাননি। কেউ দীর্ঘদিনের সঞ্চয় ভেঙে টিকিট কিনেছিলেন, কেউ আবার জীবনের এক বিশেষদিন ছেড়ে স্বপ্ন পূরণের আশায় এসেছিলেন। সেই আবেগের জায়গায় দাঁড়িয়ে এমন মন্তব্য যে আঘাতের মতো লাগতে পারে, তা অস্বীকার করা কঠিন। তাই সায়কের ভিডিও ঘিরে খুব দ্রুতই সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ জমতে শুরু করে। অনেকে সরাসরি তাঁর মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন।

আরও পড়ুনঃ “বিয়ে না করাই ভালো… সন্তান জন্মের জন্য বিয়ের প্রয়োজন নেই, এর থেকে লিভ ইন করা বেটার” — দাবি ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মানসী সেনগুপ্ত’র! ক্যামেরার আড়ালে কি দাম্পত্য জীবন নিয়ে অখুশি অভিনেত্রী?

কেউ লিখেছেন, “কেন মানুষকে ছোট করেন এমন করে?” আবার কারও প্রতিক্রিয়া আরও তীব্র, “মানুষকে নিয়ে মজা লুটছেন, ছি ছি! এই নাকি ভালো মানুষ, অত্যন্ত অসভ্য!” একজন লিখেছেন, “এতগুলো মানুষের আবেগ নিয়ে খোঁচা না দেওয়াই ভালো। টিকিটটা পাওনি বলেই আনন্দ পাচ্ছো। টিকিটটা পেলে যখন টাকা নষ্ট হতো, তখন বুঝতে পারতে যে কষ্ট করে যারা এতগুলো টাকা জমিয়ে তার ফল না পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে এলো, তাঁদের আঘাতটা!” এতেই স্পষ্ট, দর্শকরা বিষয়টাকে কতটা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছেন। তাঁদের চোখে এটি বিপর্যস্ত মানুষের আবেগ নিয়ে কটাক্ষ!