“বেটিং অ্যাপ থেকে গেঞ্জি-জাঙ্গিয়ার অ্যাড, পয়সার লোভে কিছুই বাকি রাখলেন না!” “খেলোয়াড় হিসেবে শ্রদ্ধা করা যায়, মানুষ হিসেবে নিজের ইমেজ নিজেই শেষ করলেন!” ” ইস্পাত কারখানাটা কবে হবে?” জামা কাপড়ের ব্র্যান্ড লঞ্চ করে নেটিজেনদের ক’টাক্ষে বি’দ্ধ দাদা!

তাঁকে নিয়ে প্রায়ই একটা কথা শোনা যায়– “জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ সবকিছুরই অ্যাড তো দিলেন, এবার কী কিছু বাকি আছে যেটা করলে ষোলো-কলা পূর্ণ হয়?” কথা হচ্ছে, বাঙালির প্রিয় দাদা ‘সৌরভ গাঙ্গুলী’কে (Sourav Ganguly) নিয়ে। তাঁকে ঘিরে সম্প্রতি নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে সমাজ মাধ্যমে। একসময় মাঠের ভেতরে তাঁর ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে গর্ব করেছে গোটা দেশ, কিন্তু আজ তাঁকে নিয়ে দর্শক আর সমর্থকদের একাংশের অভিযোগ থামছেই না।

বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে নানা প্রমোশনে দাদার উপস্থিতি নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। টেলিভিশন খুললেই বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনে তাঁর মুখ ভেসে উঠছে, এমনকি সম্প্রতি তাঁকে দেখা গেছে র‍্যাম্পেও হাঁটতে। এছাড়াও তাঁর কিছু প্রতিশ্রুতি নিয়েও অসন্তোষ বাড়ছে। কিছুদিন আগে গুজব ছড়িয়েছিল, স্টার জলসার পর্দায় আসতে চলেছে ‘বিগ বস বাংলা’, আর সেই শো-এর সঞ্চালক হিসেবে থাকতে পারেন সৌরভ। দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ‘দাদাগিরি’ টাকার জন্য ছেড়ে এই শো করবেন বলে দাবি উঠেছিল।

সেই সময়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল তাঁর শো-এর অনুরাগীরা। অনেকেই মন্তব্য করেছিলেন, যাঁকে একসময় খেলোয়াড় হিসেবে শ্রদ্ধা করেছেন, আজ মানুষ হিসেবে তাঁকে সম্মান জানানো যায় কি না সেটাই বড় প্রশ্ন। একজন লিখেছেন, “সৌরভ গাঙ্গুলিকে খেলোয়াড় হিসাবে সম্মান করা গেলেও, মানুষ হিসাবেও কি করা যায়?” এমনকি ক্রিকেট বেটিং কোম্পানির বিজ্ঞাপনেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল, যা পরবর্তীতে ভারত সরকার নিষিদ্ধ করে। আবার সম্প্রতি র‍্যাম্পে হাঁটার ঘটনাও কম বিতর্ক তৈরি করেনি।

সামাজিক মাধ্যমে একজন ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, “সব করলেন শুধু ইস্পাত কারখানা আর হলো না!” এই প্রসঙ্গে আরও অনেকে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। কেউ বলেছেন, “নিজের ইমেজ নিজেই শেষ করেছেন। স্পেনে গিয়ে মমতার পাশে বসে ইস্পাত কারখানা করবেন বলে। বামফ্রন্ট আমলে অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে ছায়ার মত থাকতেন। এখন আবার মমতার ল্যাজ হয়ে সিএবি-র সভাপতি। স্বার্থপরতার কোন পর্যায়ে গেলে মানুষ এতটা নির্লজ্জ হতে পারে তার একটা প্রকৃষ্ট উদাহরণ উনি।”

তবে এখানেই থামেনি সমালোচনা। কেউ কেউ তাঁর সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, সৌরভ কোনও দাতব্য চিকিৎসালয়, ফ্রি স্কুল বা কোচিং ক্যাম্প করেননি, এমনকি প্রয়োজনে গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর নজিরও নেই। তাই একসময় যাঁরা তাঁকে অন্ধ ভক্তি করতেন, আজ তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ বিরক্তি প্রকাশ করছেন। এক ব্যক্তি লিখেছেন, “এর কোনও জাত নেই। সুবিধাবাদী লোক নিজের ধান্দা ছাড়া কিছুই বোঝেনা।”

আরও পড়ুনঃ “প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দাম্ভিক ছিলেন, ওরাই রাজ্যটার বেহাল দশা করেছে!” “মমতার উপর আস্থা আর শাসক পরিবর্তনের স্বার্থেই ভোটে দাঁড়িয়েছিলাম, এবার সন্ন্যাস নেব!”— অকপট চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী! অতীত স্মৃতি উসকে তোপ দাগলেন, ফের কী জড়ালেন বিতর্কে?

অনেকের মতে, একজন সময়ের সফল ক্রিকেটার হয়েও তিনি আজ ব্যবসায়িক স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তাই কটাক্ষ করে কেউ বলেছেন, “আসলে সমাজে কৃতি, উচ্চ শিক্ষিত ও ধনীদের অনেকেই দেশ ও জাতি সম্পর্কে যত না চিন্তা করেন, তার থেকে স্বার্থ চরিতার্থ করতে বেশি আগ্রহী হন। সৌরভ গাঙ্গুলি এখন তাঁদের ক্যাপ্টেন্সি করছেন।” এই বিষয়ে আপনাদের কী মতামত?