সম্প্রতি স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছেন বর্ষীয়ান শিল্পী ‘মমতা শঙ্কর’ (Mamata Shankar)। তাঁর বক্তব্য ঘিরে সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে নানা রকম প্রতিক্রিয়া। কেউ তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন, কেউ আবার কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন তাঁকে। আর এই ক্রমাগত আক্রমণাত্মক মন্তব্য দেখে এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী তথা সঞ্চালিকা ‘সুদীপা চট্টোপাধ্যায়’ (Sudipa Chatterjee) । নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করে তিনি জানালেন, তাঁর অভিমত।
সুদীপার কথায়, “মতের অমিল থাকতেই পারে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে এক জন প্রবীণ শিল্পীকে প্রকাশ্যে অসম্মান করার অধিকার কারোর নেই।” তিনি নিজের সমাজ মাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্টে নতুন প্রজন্মকে উদ্দেশ করে লেখেন, আজকাল যেন সেলিব্রিটিদের আক্রমণ করা এক ধরনের ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটিমাত্র বক্তব্যেই তাঁদের বিচার করা হচ্ছে, কড়া ভাষায় তিরস্কার করা হচ্ছে। তাঁর প্রশ্ন— কেন এমনটা হচ্ছে? কেন ধরে নেওয়া হচ্ছে, একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রী সবসময় নিখুঁতভাবে কথা বলবেন?
তাঁরা কি সবাই সমাজ সংস্কারক? সুদীপার মতে, সাধারণ মানুষের মতো তাঁরাও ভুল করতে পারেন, মত প্রকাশ করতেই পারেন— কিন্তু সেই মতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলে গালাগাল দেওয়া কি উচিত? এই ঘটনার প্রেক্ষিতে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে সুদীপা লেখেন, তাঁর মা-ও একসময় টিভিতে স্যানিটারি ন্যাপকিনের বিজ্ঞাপন দেখতে অস্বস্তি বোধ করতেন। কিন্তু সেজন্য তিনি মাকে আক্রমণ করেননি, বরং যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। এখানেই শিক্ষার ও সভ্যতার প্রভাব বোঝা যায় বলেই মনে করেন অভিনেত্রী।
তাঁর মতে, মতামত নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে, কিন্তু ব্যক্তিগত আক্রমণ কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, বিশেষত যখন সেটা একজন সাদামাটা, সংবেদনশীল শিল্পীর বিরুদ্ধে। নিজের পোস্টে সুদীপা আরও বলেন, মমতা শঙ্করকে তিনি দীর্ঘদিন ধরে চেনেন, এবং তিনি জানেন এই মানুষটি কতটা বিনম্র ও আবেগপ্রবণ। একজন বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর প্রতি এমন ব্যবহার তাঁকে কষ্ট দেয়। যদিও সুদীপা নিজে মমতার মন্তব্যের সঙ্গে একমত নন, তবু তিনি এই আক্রমণাত্মক মনোভাবের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ স্ত্রীকে প্রণাম না করে রাতে ঘুম আসেনা এই জনপ্রিয় অভিনেতার! ঘুমোতে যাওয়ার আগে স্ত্রীর পায়ে মাথা রাখেন রোজ! জানেন, কেন করেন এমন অভিনেতা?
তিনি বলেন, “আপনারা কে, সেই মানুষটার বক্তব্য ঠিক না ভুল তা বিচার করার?” সব শেষে তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা সকলের রয়েছে— তবে সেই স্বাধীনতার ব্যবহারে দায়িত্বশীলতা থাকা উচিত। ব্যক্তি নয়, ভাবনার বিরুদ্ধে যুক্তির ভাষায় প্রতিবাদ হোক— এটাই চান তিনি। মমতার মতো একজন প্রবীণ শিল্পীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি লেখেন, কষ্ট পেলে একজন সংবেদনশীল শিল্পীর হৃদয়ও ভেঙে যায়। সেই যন্ত্রণাকে উপলব্ধি করতে হলে আগে মনটা মানবিক হতে হয়।