“আমি মা হবই, শরীরে কোনও সমস্যা নেই!”— সংসার ভাঙার পর বিস্ফো’রক সুস্মিতা! গয়না বন্ধক থেকে শুরু মাতৃত্বের স্বপ্নেও ছেঁকা, সব্যসাচীকেই দায়ী করলেন তিনি? ডিভোর্সের নেপথ্যে আসল কারণ কি জানালেন সুস্মিতা?

চলতি মাসের শুরুতেই সম্পর্কের ইতি টেনেছেন টেলিপাড়ার প্রাক্তন জুটি ‘সুস্মিতা রায়’ (Susmita Roy) এবং ‘সব্যসাচী চক্রবর্তী’ (Sabyasachi Chakraborty)। অনেকদিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল, এবার সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে নিজের জন্মদিনেই বিবাহ-বিচ্ছেদ (Divorce) ঘোষণা করেন সুস্মিতা। তবে এই ঘোষণাটি আর পাঁচটা সমাজ মাধ্যমের পোস্টের মতো নয়, বরং ছিল এক আবেগঘন পরিণতি। সব্যসাচী নিজে জানিয়েছেন, তাঁদের দু’জনের মধ্যেই কিছু বিষয় নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়েছিল, আর সেটা থেকেই সম্পর্ক থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত।

তবে বিচ্ছেদের কথা প্রকাশ্যে আসতেই ঝড় ওঠে সামাজ মাধ্যমে। শুরুতে অনেকেই এই ঘটনাকে নিছক প্রাঙ্ক ভেবেছিলেন। পরবর্তীতে নিশ্চিত হওয়ার পর নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন ঘিরে। কেউ কেউ দাবি করেন, সব্যসাচীর পরিবারের চাপ, সুস্মিতার কেরিয়ারে বাধা, এমনকি আর্থিক টানাপোড়েনও নাকি এই বিচ্ছেদের পেছনে অন্যতম কারণ! কেউ প্রশ্ন তোলেন— স্বামীর কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে নিজের ব্যবসা শুরু করেছেন, প্রতিষ্ঠিত হতেই কি অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন? সম্পর্ক ভাঙলে কেউ এত খুশি থাকে কীভাবে?

আবার অনেকে সরাসরি সন্তান না পাওয়াকেই দায়ী করেন এই ডিভোর্সের জন্য। এবার সব সমালোচনার জবাব নিজেই দিলেন সুস্মিতা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সুস্মিতা তাদের নিয়ে যে কাটাছেঁড়া চলছে, সেটা বন্ধ করতে বলেন। তাঁর বক্তব্য, “সিদ্ধান্তটা দু’তরফের ছিল, আমরা পরিষ্কার করে বলেও দিয়েছিলাম যে আলোচনা চাই না! মানুষ এরপরেও সেটা নিয়েই পড়ে আছে। আসলে মানুষ মানতে পারছে না, একটা মেয়ে হয়ে ডিভোর্সের দুঃখে আমি কেন ঘরের কোণায় লুকিয়ে নেই। বিচ্ছেদ আমার একার তো হয়নি, অপর প্রান্তের লোকটাও যখন সুখী, তাহলে আমি কেন দুঃখ করব!”

সুস্মিতা আরও বলেন, “অনেকেই মনে করে আমি যেটুকু জনপ্রিয়তা পেয়েছি বা সফল হয়েছি সেটা বিয়ের পর, কিন্তু তাঁরা ভুল ভাবেন। আমার পরিবার যথেষ্ঠ বড়লোক, তাঁরা চাননি আমি অভিনয় করি। সেই জেদ থেকেই আমার গ্রাম ছাড়া। এখন আমার যে কোম্পানি হয়েছে, এর জন্য আমার যা কিছু সোনার গয়না বন্ধক রাখতে হয়েছে। সব সঞ্চিত অর্থ দিয়ে দিতে হয়েছে।” এবার প্রশ্ন করা হয়, জন্মদিনের মতো দিনেই কেন এই বিচ্ছেদ ঘোষণা? তিনি জানান, “সব্যসাচী একটা বিশেষ দিন খুঁজছিল, তাই ওই দিনটিকেই বেছে নেওয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ পুরীর জগন্নাথ ধামে অভিনয় করতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন সৃজিতের ‘বিনোদিনী’ শুভশ্রী! আবেগাপ্লুত হয়ে জানালেন মনের কথা! এটি কি শুভশ্রীর জীবনের সেরা চরিত্র? কি বললেন ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ নিয়ে অভিনেত্রী?

আমি চাইনি সেদিনই জানাতে, কিন্তু চুপ থাকলেও তো মানুষের প্রশ্ন থামত না!” এরপর জানতে চাওয়া হয়, মাতৃত্ব মেলেনি বলেই কী এই বিচ্ছেদ? সুস্মিতার কথায়, “মা তো আমি হবই! সে যতই বিচ্ছেদ হোক, আমার শরীরে কোনও সমস্যা নেই। কাজেই মা আমি এক দিন হব। তবে এই কারণে যে সম্পর্কটা ভাঙেনি, ঠিক তেমন আমার মাও এই বিষয়ে জড়িত নয়। কেউ কেউ আমার মাকে, বা আমার বন্ধু সায়ক এবং তাঁর মাকে দোষারোপ করছেন। এটা ভুল ধারণা।” একজন আত্মবিশ্বাসী নারীর মতো তিনি বুঝিয়ে দিলেন— বিচ্ছেদ মানেই পরাজয় নয়, বরং নিজের সত্যিকে গ্রহণ করার সাহস।