তিনি নায়ক হলেও নায়িকা নন তাঁর জীবনসঙ্গিনী! গ্ল্যামার জগতের বাইরের সেই নারী, যিনি কৌশিকের জীবনের নেপথ্য নায়িকা! জানেন অভিনেতা কৌশিক রায়ের জীবনসঙ্গীর পরিচয়?

পর্দায় যাঁর উপস্থিতি সবসময় দৃঢ় চরিত্রেই, সেই অভিনেতা ‘কৌশিক রায়’ (Koushik Roy) এর জীবনের শুরুটা গল্পের মতন। বহরমপুরের ছেলেটি পড়াশোনার জন্য এসেছিলেন কলকাতায়, বড় শহরের চেনা অচেনা জগতে নিজের জায়গা খুঁজে নিতে সময় লেগেছিল বটে, কিন্তু হাল ছাড়েননি কখনও। পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে পেশাগত জীবন শুরু হয়েছিল দিল্লিতে, তবে কর্পোরেট চাকরির একঘেয়েমি কৌশিককে শান্ত রাখতে পারেনি বেশিদিন।

মনের ভিতরে যে নেশা ছিল মঞ্চের, অভিনয়ের, সেই ডাকে সাড়া দিয়েই থিয়েটারকেই নিজের আসল ঘর বানালেন তিনি। অভিনেতা রজতাভ দত্তের স্ত্রী সোমা দত্ত, সম্পর্কে ছিলেন কৌশিকের অধ্যাপিকা। তাঁর সুপারিশেই কৌশিকের সঙ্গে আলাপ হয় পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর। রাজের দেওয়া প্রথম টেলিভিশনের ধারাবাহিক ‘জোশ’ ছিল সেই বড় সুযোগ, যেখানে মুখ্য চরিত্রে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এই ধারাবাহিক কৌশিকের কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

এরপর তিনি হয়ে ওঠেন সবার পরিচিত নাম। ‘খড়কুটো’ থেকে ‘ফাগুন বউ’, ‘পুন্যি পুকুর’ থেকে ‘আলোর কোলে’—প্রতি ধারাবাহিকেই তিনি হয়ে উঠেছেন দর্শকদের প্রিয় মুখ। তবে কৌশিক নিজেও বুঝে গিয়েছেন যে ছোটপর্দা তাঁকে একটা নির্দিষ্ট ছাঁচে ফেলতে চায়। তথাকথিত নায়ক নয়, বরং ব্যতিক্রমী চরিত্রে নিজেকে দেখতে চেয়েছেন বরাবর। কিন্তু ছোট পর্দায় ক্রমশ তাঁকে একই চরিত্রে বেঁধে ফেলার চেষ্টা চলছিল, যার ফলে তৈরি হয় একঘেয়েমি।

সেই একঘেয়েমি ভেঙে নতুন কিছু করতে ওয়েব সিরিজের দিকে ঝুঁকেছেন অভিনেতা। ছোট পর্দার বাইরে এসে চরিত্রের গভীরে ঢুকে কাজ করার সুযোগ তাঁকে নতুন করে প্রাণ দিয়েছে। ‘তারানাথ তান্ত্রিক’ ও ‘বিষহরি’-র মতো ওটিটি কাজ তাঁর অভিনয়ের অন্যতম উদাহরণ। ব্যক্তিগত জীবনেও কৌশিক রায় একইভাবে গুছিয়ে নিতে পেরেছেন সবকিছু। ২০১২ সালে তিনি বিয়ে করেন ‘আরশীয়া’কে, যিনি টেলিভিশনের জগতের কেউ নন।

আরও পড়ুনঃ “শ্রীময়ীর চরিত্রে মাতৃত্ব ফুটিয়ে তুললেও, বাস্তবে সেই স্বপ্নটা অপূর্ণই রয়ে গেল!”— কেন মা হতে পারলেন না তিনি? কষ্টের কথা জানালেন ইন্দ্রাণী হালদার!

তাঁদের সংসারে আছে এক কন্যা সন্তান ‘মৈত্রী’। এখন তাঁরা থাকেন গল্ফগ্রিনে, রাজনীতি, সংসার আর অভিনয়ের মধ্যেই কাটে কৌশিকের দিন। কাজের ব্যস্ততা যেমন থাকেই, ঠিক তেমনই মেয়ের সঙ্গে সময় কাটানো, পরিবারের সঙ্গে মুহূর্তগুলোও তাঁর কাছে অমূল্য। সব মিলিয়ে বলা যায়, কৌশিকের পরিশ্রম, প্রতিভা এবং সঠিক সময়ের সিদ্ধান্ত, এই তিনের জন্যই আজ তিনি দাঁড়িয়ে আছেন এক উজ্জ্বল উচ্চতায়।