বাংলা টেলিভিশনের বর্তমানে এক পরিচিত মুখ ‘পিয়ালি শাসমল’ (Piyali Sasmal)। ‘ফুলকি’ (Phulki) ধারাবাহিকে উকিল ধানুর চরিত্রে তাঁর শক্তিশালী অভিনয় ইতিমধ্যেই দর্শকের নজর কেড়েছে। তবে শুধু এই ধারাবাহিক নয়, ‘সাঁঝের বাতি’, ‘গাঁটছড়া’, ‘সাহেবের চিঠি’, ‘তুমি যে আমার মা’, ‘খেলনা বাড়ি’-সহ একাধিক ধারাবাহিকে তাঁর উপস্থিতি তাকে ঘরের মেয়ে করে তুলেছে। আজ তিনি যেখানেই দাঁড়িয়ে থাকুন না কেন, তার পেছনে রয়েছে অজস্র ত্যাগ, কান্না আর লড়াইয়ের গল্প, তা হয়তো অনেকেরই অজানা।
পিয়ালি মালদার মেয়ে, যাঁর ছোটবেলাটা কেটেছে আর পাঁচটা মেয়ের মতন খুব সাধারণ পরিসরে। পড়াশোনার জন্য কলকাতায় আসলেও তার জীবনের পথচলা মোটেই সহজ ছিল না। শুরুর দিনগুলোতে মায়ের সঙ্গে ঠাঁই নিতে হয়েছিল বাগুইহাটিতে এক পিসির বাড়িতে। কিন্তু সেখানে তাঁরা দুদিনের বেশি থাকতে পারেননি। মেয়ের পড়াশোনার প্রয়োজন নেই, বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে— এমন মন্তব্য শুনতে হয়েছে তার মাকে। এমনকী বাড়ির লোকজন সোজাসুজি জানিয়ে দেন, তাঁদের আর থাকা চলবে না।
সেই রাতেই মা-মেয়েকে রাস্তায় এসে দাঁড়াতে হয়। একটা রাত, একগুচ্ছ অসম্মান, আর দু’জনে মিলে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি দাঁড়ানো— এই দৃশ্যটাই হয়তো পিয়ালির জীবনের সবচেয়ে বড় টার্নিং পয়েন্ট। এরপর হোস্টেলে থেকেই পড়াশোনা চালিয়ে যান পিয়ালি। কিন্তু শুধুই পড়াশোনা নয়, কেরিয়ারের জন্যও লড়াই করতে হয়েছে সমানভাবে। মডেলিং দিয়ে পা রাখা ইন্ডাস্ট্রিতে, অভিনয়ের স্বপ্নটা কখনও তার ছিল না, বরং মায়ের উৎসাহেই অভিনয়ে আসা।
অভিনয়ে নাম লেখানোর পরেও পারিবারিক সম্মতি ছিল না, বরং মায়ের উপরই পড়েছিল সবচেয়ে বেশি চাপ। সমাজের চোখে এই পেশা তেমন গ্রহণযোগ্য না হওয়ায়, নিজের পরিবারের মধ্যেই সহ্য করতে হয়েছে অবহেলা। এমনকী একসময় শুধুমাত্র মেয়েকে পড়তে ও কাজ করতে দেওয়ার অপরাধে পিয়ালির মা-কে সহ্য করতে হয়েছে শারীরিক নির্যাতন পর্যন্ত। নিজের চোখে মায়ের ওপর সেই নির্যাতন দেখে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল পিয়ালি।
আরও পড়ুনঃ আঁখির পরমশত্রু এখন ছাতা বাড়ি! এদিকে, ঝিলিক হয়ে উঠেছে আঁখি! জমজমাট এপিসোড এখন দুই শালিকে!
আজ যখন ‘ফুলকি’ ধারাবাহিকে তাঁর দৃঢ় অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করছে, তখন জানলে অবাক লাগে— এই মেয়েটির পিছনে রয়েছে এমন এক অতীত, যেখানে সাহস আর মায়ের ভালোবাসা ছিল একমাত্র অস্ত্র। কঠিন সময়, পারিবারিক অবহেলা, আর মায়ের বুক ভরা স্বপ্ন, এই নিয়েই তৈরি হয়েছে অভিনেত্রী পিয়ালি সাসমালের আজকের রূপ। তার গল্পটা আসলে শুধুই সাফল্যের নয়, একটা নিঃস্বার্থ ভালোবাসার কাছে মাথা নত করে লড়ে যাওয়ার গল্প।
আজও বাবার কথা মনে করে ছেলে ওশ! কিন্তু কাঞ্চনের দাবি, শুধুমাত্র কন্যা সন্তানের বাবা সে! “আমি স্যাক্রিফাইস করি, কম্প্রোমাইজ না!” “বোধ না তৈরি হলে মানুষ হওয়া যায় না”— বাবার স্মৃতি ভুলিয়ে, ছেলেকে কীভাবে বড় করছেন জানালেন পিঙ্কি!