মেয়ের নাম নাকি মুসলিম-ঘেঁষা! সমালোচনা সহ্য করেও কেন মেয়ের এমন নাম রাখেন সুদীপ্তা? কেন অভিনেত্রীর কন্যা ব্যবহার করে না বাবা–মায়ের পদবী? কি বিশেষ কারণ লুকিয়ে আছে এর পিছনে?

টলিউডের জনপ্রিয় তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে দর্শকের কৌতূহল চিরন্তন। রুপোলি পর্দার বাইরে কোন অভিনেতা–অভিনেত্রীর সংসার কীভাবে এগোচ্ছে, সন্তানদের কীভাবে বড় করছেন—এসবই সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। বিশেষ করে কোনও স্টার কিড কোথাও প্রকাশ্যে দেখা দিলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার ঝড় ওঠে।

এই প্রবণতার মধ্যেই টলিউডের এক জনপ্রিয় অভিনেত্রীর পরিবারও বারবার এসেছে আলোচনায়। অভিনয়, জনপ্রিয়তা, পুরস্কার—সবকিছুই ছাপিয়ে তাঁর মাতৃত্বের যাত্রা এবং মেয়েকে বড় করে তোলার পদ্ধতি প্রায়ই খবরে উঠে আসে। মানুষ জানতে চান, কীভাবে তিনি সামলান ক্যারিয়ার আর পরিবার।

এই অভিনেত্রী আর কেউ নন—সুদীপ্তা চক্রবর্তী। বাংলা সিরিয়াল থেকে সিনেমা—সব জায়গাতেই তাঁর অভিনয় ক্ষমতা দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। পর্দায় যতটা দৃঢ় এবং বাস্তব, ব্যক্তিগত জীবনেও ততটাই সংযত ও নিবেদিত। পরিচালক অভিষেক সাহার সঙ্গে প্রায় ১২ বছর আগে নতুন পথ চলা শুরু করেন তিনি। ২০১৫ সালে জন্ম নেয় তাঁদের কন্যা শাহিদা নীরা। ছোট্ট বয়স থেকেই যার সরলতা ও মিষ্টি ব্যবহার বহু মানুষের মন জয় করেছে।

তবে জন্মের পরই শাহিদার নাম নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় ওঠে। কেউ বলেন—“মেয়ের মুসলিম-ঘেঁষা নাম কেন?”, কেউ প্রশ্ন তোলেন—“এই নামে দেশে সমস্যা হবে না?” সুদীপ্তা এসব আক্রমণকে গুরুত্ব দেননি। দৃঢ়ভাবে জানান—মেয়ের নাম তাঁদের ব্যক্তিগত পছন্দ। এখানেই উঠে আসে আর-একটা প্রশ্ন—শাহিদা কেন বাবা-মায়ের পদবী ব্যবহার করে না? আসলে সুদীপ্তা চান মেয়ের পরিচয় তার নিজের নামেই স্থাপন হোক—অভিনেত্রীর বা তার স্বামীর কোনও ট্যাগ বা পদবী ছাড়াই। নিজের আলোয় পরিচিত হোক সে।

আরও পড়ুনঃ ‘আমি প্রচার চাই না…টাকাটা আমার নয়, জনগণের শুল্কের টাকা, যেটা সঠিক জায়গায় পৌঁছে দিয়েছি!’ নিজেও লড়ছেন ক্যান্সা’রের সঙ্গে, তাও পুরস্কারের অর্থ উদ্বৃত্ত! জনস্বার্থে দান করে কৃতিত্ব চান না! মানবিকতার দৃষ্টান্ত দিয়ে, চন্দন সেন বুঝিয়ে দিলেন শিল্পীর দায়িত্ব কী!

আজ ক্লাস ফোরে পড়ুয়া শাহিদা অভিনয়েও দারুণ পারদর্শী। সুমন ঘোষের ‘সার্চিং ফর হ্যাপিনেস’-এ অভিনয়ের জন্য পেয়েছে একাধিক পুরস্কার। মায়ের মতে, সন্তান মানুষ করার দায়িত্ব শুধু মায়ের নয়—বাবারাও সমানভাবে দায়িত্ববান। সেই কারণেই দুইজনের যত্ন, শৃঙ্খলা আর ভালোবাসায় বড় হয়ে উঠছে শাহিদা—নিজের নামের মতোই আলাদা আলো নিয়ে।