টলিউডের (Tollywood) একসময়ের জনপ্রিয় মুখ ‘অর্জুন চক্রবর্তী’ (Arjun Chakraborty)। দীর্ঘদিন ধরেই অভিনয় জগতে নিজের পরিচিতি তৈরি করেছেন তিনি। বড়পর্দা থেকে ছোটপর্দা—সব জায়গাতেই তাঁর সাবলীল উপস্থিতি দর্শকদের মনে দাগ কেটে গেছে। শোনা যায় একসময় বলিউডেও (Bollywood) নাকি কাজ করেছেন এই অভিনেতা। এত সাফল্যের মাঝেও কিন্তু হঠাৎ করেই যেন পর্দার আড়ালে চলে গেলেন অর্জুন। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর দেখা নেই পর্দায় আর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতেও।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের এই আড়ালে থাকার কারণ নিয়ে মুখ খুলেছেন অর্জুন। সোজাসুজি বলেছেন, ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার জন্য যে ধরনের তেল লাগানোর কৌশল বা লোক দেখানো সম্পর্ক গড়ে তোলার খেলায় নামতে হয়, সেই বিষয় তিনি অত্যন্ত কাঁচা। নিজেকে ‘কুড়ে’
আখ্যা দিয়ে অর্জুন বলেন এই কারণেই তিনি এসব থেকে দূরে থেকেছেন। কারও পিছনে গিয়ে তেল মারা, সুবিধার জন্য সস্পর্ক তৈরির খেলা তিনি কখনোই খেলেননি।
অর্জুন অকপটভাবে বলেন, এমনও সময় গেছে, যখন তাঁর মুখ দেখে অনেকেই বলে দিয়েছিলেন, “তুমি যেটা করতে চাইছো সেটা ঠিক হচ্ছে না, বরং পারছো না”। এই ধরনের কটাক্ষ পেয়ে তিনি আর কোনদিনও এমন করেননি। তবে তিনি কোনওদিনই কাজের জন্য নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করেননি, কারণ নিজের আত্মসম্মান হারিয়ে স্রোতে গা ভাসানো তাঁর ধাতে নেই। ফলে, ধীরে ধীরে তিনি নিজেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন গ্ল্যামার দুনিয়ার কেন্দ্রবিন্দু থেকে।
তবে অভিনয় থেকে দূরে থাকলেও শিল্পের প্রতি তাঁর ভালোবাসা একফোঁটাও কমেনি। বরং অর্জুন মনে করেন, আজও যদি এমন কোনো চরিত্র তাঁর সামনে আসে, যেখানে সত্যিই অভিনয়ের জায়গা আছে, তাহলে তিনি অবশ্যই ফিরতে চান। কেবলমাত্র ক্যামেরার সামনে থাকার জন্য বা শিরোনামে থাকার লোভে তিনি কাজ করতে রাজি নন। অভিনয় তাঁর কাছে পেশার চেয়ে অনেক বেশি, যেমন একটা আত্মিক টান, একটা জীবনের উপাদান।
আরও পড়ুনঃ বিপদের দিনে কত রক্তের সম্পর্কের মানুষদের আলাদা হয়ে যেতে দেখেছি! অল্প বয়সেই কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি হতে হয়েছিল তিথিকে! তার সংগ্রামের কথা জানলে চোখে জল আসবে
বর্তমানে নিজের মতো করে জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। কখনও বই পড়ে, কখনও লেখালিখি করে, কখনও আবার মনের মতো কিছু কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন। জনপ্রিয়তার মোহ বা আলোর ঝলকানি তাঁকে টানে না, বরং তিনি বিশ্বাস করেন যে একসময় পর্দায় তিনি যেভাবে নিজের পরিচিতি গড়ে তুলেছিলেন, আজ পর্দার আড়ালে থাকলেও লোকে তাকে সমানভাবেই মনে রাখবে। আর অর্জুন ঠিক সেই বিশ্বাসেই আজও নিজের মতো করে বাঁচতে চান।