অভিনেতা হওয়ার পরিকল্পনা কোনওদিনও ছিল না তাঁর। ক্যামেরার পিছনের কাজেই ছিল আগ্রহ। মাস কমিউনিকেশন নিয়ে পড়াশোনার সময় ভিডিওগ্রাফির দুনিয়ায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছিলেন। ঠিক সেই সময়েই জীবনর সবচেয়ে বড় সুযোগ মিলল। পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ নিজে ডেকে পাঠালেন তাঁকে। আর তাঁর অনুরোধেই ‘উৎসব’ ছবিতে অভিনয় করে ফেললেন ‘মমতা শঙ্কর’ (Mamata Shankar) পুত্র, ‘রাতুল শঙ্কর’ (Ratul Shankar) ।
কিন্তু সেটা শুধুই একটা অভিজ্ঞতা হয়ে থাকল। কারণ সেই একবার পর্দায় আসার পর টানা প্রায় পঁচিশ বছর অভিনয় থেকে সরে ছিলেন তিনি। তবে সময় আবার তাঁকে ফিরিয়ে আনল রূপোলি পর্দায়। পরিচালক সত্রাজিৎ সেন খুঁজছিলেন একটি চরিত্রের জন্য সঠিক মুখ, চরিত্রের নাম ‘গিরিন্দ্র মোহন’। প্রচলিত ঘরানার বাইরে এই চরিত্রের জন্য যখন খুঁজে পাচ্ছিলেন না উপযুক্ত কাউকে, তখনই ডাক পড়ল রাতুল শঙ্করের।
তিনি রাজি হলেন, এবং দ্বিতীয়বারের মতো অভিনয়ের পথে পা রাখলেন।’চেক ইন চেক আউট’ নামক সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমায় দেখা গেল তাঁকে নতুন রূপে। শিল্পী পরিবারে জন্ম তাঁর। মা মমতা শঙ্কর যেমন দারুন অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী, তেমন দাদু উদয় শঙ্কর এবং দিদা অমলা শঙ্করও সাংস্কৃতিক মঞ্চের স্মরণীয় নাম। মামা আনন্দ শঙ্কর থেকে শুরু করে রবিশঙ্কর পর্যন্ত তাঁদের রক্তে মিশে আছে শিল্প। ফলে রাতুল যখন অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নেন,
তখন প্রশ্ন ওঠে তাঁর যোগ্যতা নিয়ে—সেলেব সন্তান বলেই কি সুযোগ পেলেন? তবে এই সমস্ত প্রশ্ন তিনি সামলান নিজের মতন করেই। বরং তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁর এই সুযোগ আদায় হয়েছে মেধা ও প্রাপ্যতার ভিত্তিতেই। মায়ের নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই রাতুল আরও স্পষ্ট। মমতা শঙ্করের স্পষ্টভাষী মনের প্রশংসা করেন তিনি। তাঁর কথায়, অনেকেই মনে মনে সত্য কথা ভাবেন, কিন্তু বলার সাহস রাখেন না। অথচ তাঁর মা সব সময় নির্ভয়ে স্পষ্টভাবে কথা বলেন।
এই স্পষ্টতার পেছনে যুক্তি ও অভিজ্ঞতার জোর আছে বলেই তিনি নিজের মাকে সমর্থন করেন। তিনি বলেন, “মা যা বলেছেন বা বলেন সেটা একদম ঠিক কথা বলেন।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে আমার মায়ের মতন লোকেদের বেশি প্রয়োজন, যারা সোজা কথা সোজা ভাবে বলতে পারে।” তিনি বলেন তাঁর মা যে শুধু স্পষ্টবক্তা সেটাই নয়, তাঁর কাছে অনুশাসনই শেষ কথা। অভিনেতা এই প্রসঙ্গে বলেন, “আজ আমরা দুই ভাই যা কিছু হতে পেরেছি সেটা মায়ের জন্যেই।
আরও পড়ুনঃ দিনে দিনে বাড়ছে কমলিনীর অশান্তি ! বউকে নিয়ে আলাদা সংসার পাতার সিদ্ধান্ত নিল বুবলাই, ছেলে-বৌকে কী আটকানো উচিৎ হবে কমলিনীর?
একটা সময়ে আমাদের সব বন্ধুরা যে স্বাধীনতা পেয়েছে সেটা আমরা পাইনি, এই নিয়ে মায়ের সাথে রাগারাগিও করেছি কিন্তু এখন বুঝি যে সেটা করেছিলেন বলেই উচিৎ সময়ে উচিৎ জিনিসটা করতে পেরেছি। আর অন্যদিকে যেই বন্ধুরা লেট নাইট পার্টি করতো তাঁরা একটা সময়ের পর খেই হারিয়ে ফেলেছে।” এই ভাবেই তিনি মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং বলে মায়ের সাথে রাগারাগি হয় কিন্তু ঝগড়া নয়!