শ্রমিক দিবসের দিন টলিপাড়ায় ‘টেকনিশিয়ান স্টুডিও’ (Technician Studio) তে হয়ে গেল এক গুরুত্বপূর্ণ সভা। ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ান ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (FCTWEI) এর অন্তর্ভুক্ত সমস্ত গিল্ড এবং সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন এই সভায়। কলাকুশলীদের কাজের পরিবেশ, মজুরি বৃদ্ধি, এবং সম্মানজনক কাজের অধিকার রক্ষার দাবিতেই এই বৈঠক। একে একে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বরা, যেখানে সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস সরাসরি ‘অশুভ শক্তি’র বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়ার ডাক দেন।
এই ‘অশুভ শক্তি’ বলতে ঠিক কাদের বোঝানো হয়েছে, তা স্পষ্ট না করলেও, ইঙ্গিত মিলেছে একটি ভিডিওর দিকে। ৩০ এপ্রিল রাতে পরিচালক সুদেষ্ণা রায়ের নেতৃত্বে প্রকাশ পায় একটি ভিডিও, যেখানে অনির্বাণ ভট্টাচার্য, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় সহ কয়েকজন নির্মাতা ফেডারেশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তাঁদের বক্তব্য যে ফেডারেশনের কারণে টেকনিশিয়ানরা কাজ হারাচ্ছেন, এবং তাঁদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। তবুও আলোচনার জন্য তাঁরা প্রস্তুত ছিলেন, যদিও ফেডারেশনের পক্ষ থেকে সেই আলোচনার আগ্রহ দেখা যায়নি।
এই ভিডিও ঘিরেই উত্তাল হয় সাধারণ সভা। সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস ভিডিওটির খরচ নিয়ে কটাক্ষ করেন এবং দাবি করেন, সেই অর্থ টেকনিশিয়ানদের স্বার্থে ব্যবহার করা যেত। সভা শেষে কার্যকরী কমিটির এক বৈঠকে ২৮টি গিল্ডের প্রায় ৪৭২ জন সদস্য একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেন যে ফেডারেশনের সভাপতি ভবিষ্যতে এই ‘অশুভ শক্তি’র বিরুদ্ধে যেকোনও কঠোর পদক্ষেপ নিতে সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং ক্ষমতাবান।
এই বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল আদালতের মামলা এবং তার বাইরেও যারা ফেডারেশনের বিরোধিতায় এগিয়ে এসেছেন, তাঁদের নিয়ে দেওয়া হয় স্পষ্ট মতপ্রকাশ। সূত্র অনুযায়ী, ‘আজীবন অসহযোগিতা’ অর্থাৎ ভবিষ্যতে এই পরিচালকদের সঙ্গে আর কাজ না করার মত সিদ্ধান্তের কথাও আলোচনায় উঠে আসে। বিষয়টি উত্তপ্ত পর্যায়ে পৌঁছলেও, সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি।
আরও পড়ুনঃ শ্রমিক দিবসের টলিপাড়ায় একজোট হলেন পরিচালকেরা! ফেডারেশনকে সুদেষ্ণা, পরমব্রত আর অনির্বাণ বললেন ‘অশুভ শক্তি’! দিলেন আজীবন অসহযোগিতার হুমকি!
তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, যে এই ধরনের ‘অসহযোগিতার’ সিদ্ধান্ত আদৌ যুক্তিসম্মত কি না? ইতিহাসে এর আগে পরিচালকদের সঙ্গে ফেডারেশনের বিবাদ মিটে গেছে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমেই। এবার যদি সত্যিই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়, তা হলে প্রথমবারের মতো একাধিক প্রতিষ্ঠিত পরিচালকের বিরুদ্ধে সকল কলাকুশলীরা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। আর এই পরিস্থিতিতে টলিপাড়ার সাম্প্রতিক বাস্তবতা নিয়ে উঠছে বড় প্রশ্ন, ক্রমেই কি এখানে জাঁকিয়ে বসছে ‘পাওয়ার পলিটিক্স’?
“আগের বছরের মতো গরম নেই, পরের বছর নির্বাচনের সময় দেখবেন কেমন গরমটা পড়ে!” ‘গরম নিয়ে মাথা খারাপ, রাস্তায় নেমে আর কবে জনস্বার্থে কাজ করবেন?’ রচনার মন্তব্যে কটাক্ষ নেট পাড়ার