ইন্ডাস্ট্রির প্রবীণ মুখদের মধ্যে একজন শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী ‘মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়’ (Moushumi Chatterjee) । মৌসুমীর সিনেমাজীবন শুরু হয়েছিল ১৯৬৭ সালে ‘বালিকা বধূ’ সিনেমার মাধ্যমে, যেখানে তিনি শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। এরপর একে একে বলিউডের তাবড় তাবড় অভিনেতাদের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন তিনি।
অমিতাভ বচ্চন, বিনোদ খন্না, রাজেশ খন্নার মতো তারকাদের সঙ্গে কাজ করে প্রমাণ করেছেন যে প্রতিভা দিয়ে দাপট দেখানো যায়, কোনও আপোসের প্রয়োজন নেই। সম্প্রতি যশ দাশগুপ্ত ও নুসরাত জাহানের ছবিতে তাঁকে দেখা গিয়েছে। তবে যে কোনও পরিস্থিতিতে স্পষ্ট কথা বলার অভ্যাস তাঁর বরাবরের। চটজলদি উত্তরে নয়, তিনি বরং নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে একেবারে নির্ভীকভাবে সামনে তুলে ধরেন সত্যিটা।
অভিনেত্রীর মতে, অভিনয় জগতে কাজ করার সময় তাঁকে কখনওই অশালীন ব্যবহারের মুখোমুখি হতে হয়নি। তিনি জানতেন কোথায় ‘না’ বলতে হবে আর কখন প্রতিবাদ করতে হবে, তাই কেউ কখনোই তাঁর সাথে দুর্ব্যবহার করার সাহস পায়নি। সম্প্রতি ‘আড়ি’ ছবি নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে তাঁর অভিনয় জীবনের পুরনো অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, অভিনেত্রী জানান, একসময় বলিউডের অনেকেই নায়িকাদের সঙ্গে ফ্লার্ট করতেন।
আরও পড়ুনঃ “আমি কৃষ্ণকে ঈশ্বর বলে মানি না, কৃষ্ণ একজন বামপন্থী,” “আমি কৃষ্ণকে দেখি মার্ক্স-লেনিনের মতো” — বিস্ফোরক নচিকেতা! নচিকেতার মন্তব্যে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত!
শুধু তাই নয়, তাঁরা চাইতেন নায়িকারাও যেন পাল্টা ফ্লার্ট করে তাঁদের মন জয় করেন। কিন্তু মৌসুমীর স্পষ্ট জবাব— তিনি কখনওই নিজের সম্মানের সঙ্গে আপোস করেননি, এবং কোনও পরিস্থিতিতে কাউকে তোষামোদ করার প্রয়োজন মনে করেননি। অভিনেত্রী আরও জানান, এক সময়ে একাধিক কাজের সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে শুধুমাত্র এই কারণে যে তিনি কারও অহংকারকে প্রশ্রয় দিতে রাজি ছিলেন না। এমনকি সহ-অভিনেতা কেউ অশোভন আচরণ করলে, তিনি এক কথায় স্পষ্ট জানিয়ে দিতেন কিংবা প্রয়োজনে চড় কষিয়ে তার জবাব দিয়ে দিতেন।
এই স্পষ্টবাদিতা এবং সাহসিকতাই তাঁর কেরিয়ারের একটি বাঁধা এবং অনন্য পরিচয়ও বটে। অভিনয় থেকে কিছুটা বিরত থাকলেও, এক দৃঢ়চেতা নারীর প্রতিচ্ছবি হিসেবে মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় আজও দর্শকদের কাছে অনুপ্রেরণা। নিজের মূল্যবোধকে আঁকড়ে ধরে, এই কঠিন জগতে তিনি কীভাবে সম্মান অর্জন করেছেন, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিল্পীদের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হয়ে থাকবে।