মানসিক অবসাদ এখন আর একা থাকার সমস্যা নয়, বরং এক বহুল প্রচারিত সামাজিক বাস্তবতা। কর্মক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা, সম্পর্কের ভাঙন কিংবা ব্যক্তিগত চাপে ভেঙে পড়ছেন বহু মানুষ। সমাজ মাধ্যমে চোখ রাখলেই স্পষ্ট, কত মানুষ যে এই নিঃশব্দ যন্ত্রণায় ভুগছেন! এমন পরিস্থিতিতে এগিয়ে এলেন অভিনেত্রী ‘সন্দীপ্তা সেন’ (Sandipta Sen)। শুধু অভিনয় নয়, মনোবিজ্ঞান (Psychology) নিয়েও তাঁর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা রয়েছে। আর সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই তিনি জানালেন, কীভাবে নিজেকে সুস্থ রাখা যায় মানসিক দিক থেকে।
সন্দীপ্তা অভিনেত্রী হওয়ার পাশাপাশি একজন প্রশিক্ষিত মনোবিদ। অ্যাপ্লাইড সাইকোলজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পাশাপাশি স্পেশাল ডিপ্লোমাও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। এদিন এক সাক্ষাৎকারে সন্দীপ্তা বলেন, “শরীরের যত্ন নেওয়ার কথা ভাবি, কিন্তু মনকে অবহেলা করি। সেটা বন্ধ করতে হবে।” তিনি মনে করেন, মন ভালো না থাকলে শরীরও ঠিক থাকে না। একজন মানুষ যখন আবেগগতভাবে বিপর্যস্ত থাকেন, তখন তার প্রভাব পড়ে জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে।
মানসিক স্বাস্থ্যকে ‘কমেডি’ হিসাবে দেখার সংস্কৃতি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এই অভিনেত্রী। বলেন, “সাইকোলজিস্টের কাছে যাওয়া মানেই পাগল হয়ে যাওয়া—এই ধারণা যতদিন থাকবে, ততদিন মানুষের ভিতরের অন্ধকার দূর হবে না।” তিনি বহুদিন হাসপাতালের সাইকোলজি ডিপার্টমেন্টে প্রশিক্ষণের সূত্রে কাজ করেছেন এবং সেখানে মনোরোগ নিয়ে গ্রামীণ লোকেদের সচেতনতা দেখে আশ্চর্য হয়েছেন। তাঁর মতে, গ্রামাঞ্চলে মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে খোলামেলা ভাবেন।
কিন্তু শহরের মানুষ ততটাই মুখ লুকিয়ে রাখেন। “শহরের লোকজন অনেক বেশি হিপোক্রেট মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে। এমনকি একটা সময় আমাকে পাগলের ডাক্তার বলে খিল্লি পর্যন্ত করা হয়েছে”—এমনই অকপট মত সন্দীপ্তার। বর্তমানে সিনেমা নিয়ে বেশ ব্যস্ত তিনি। সদ্য মুক্তি পেয়েছে ‘কিলবিল সোসাইটি’ এবং ‘আপিস’। সেই সঙ্গে চলছে ‘বীরাঙ্গনা’ ছবির শুটিং, পরিচালনায় নির্ঝর মিত্র। তবে, বাংলা ধারাবাহিকে কবে ফিরবেন সন্দীপ্তা?
আরও পড়ুনঃ জুলাইয়ে ঝাঁপি আসছে তাঁর স্বপ্নের গল্প নিয়ে! স্টার জলসায় সৌরভ-শুভস্মিতা জুটি বাঁধছেন ‘লক্ষ্মী ঝাঁপি’তে! কোন স্লটে শুরু হবে এই নতুন ধারাবাহিক? কোপ পড়ল কোন ধারাবাহিকের ঘাড়ে?
তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত কিছু বলেননি তিনি, যদিও দর্শকের অপেক্ষার শেষ নেই। সন্দীপ্তা যা বলছেন, তাতে স্পষ্ট—নিজের অভিজ্ঞতা, পড়াশোনা এবং জীবনবোধ দিয়ে তিনি যেভাবে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলছেন, তা শুধু একজন অভিনেত্রী হিসেবে নয়, একজন সমাজ সচেতন মানুষ হিসেবেও দৃষ্টান্ত হয়ে থাকছে। এমন সাহসী, সৎ এবং দরকারি বার্তা আজকের প্রজন্মের কাছে যেন আরও বেশি করে পৌঁছে যায়, সেই কামনা করাই শ্রেয়।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।