বাংলা বিনোদন দুনিয়ার অতি পরিচিত এক মুখ নবনীতা দে। ছোটপর্দায় তার উপস্থিতি মানেই দর্শকদের চোখে প্রশান্তির ছোঁয়া। ‘তোমাদের রানী’, ‘রাঙা বউ’, ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’-এর মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিকে তার অভিনয় দর্শকদের মনে গেঁথে গিয়েছে। রাণীর শাশুড়ির চরিত্রে তাঁর সাবলীল অভিনয় আজও প্রশংসিত। কিন্তু এই পর্দার আড়ালে লুকিয়ে ছিল এক গভীর অন্ধকার অধ্যায়, যা নিজেই সকলের সামনে তুলে ধরলেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি জি বাংলার ‘ঘরে ঘরে জি বাংলা’ অনুষ্ঠানে অপরাজিতা আঢ্যের সামনে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের বেদনাদায়ক অধ্যায় শেয়ার করেন নবনীতা। সবার মতোই এক সময় সংসার শুরু করেছিলেন তিনি। স্বপ্ন ছিল অভিনয়কে আঁকড়ে ধরে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার। কিন্তু সেখানেই বাধা হয়ে দাঁড়ায় তার প্রাক্তন স্বামী। নবনীতার দাবি, তার প্রথম স্বামী চেয়েছিলেন তিনি অভিনয় ছেড়ে দিন, বন্ধ করে দিন নিজের পছন্দের কাজ।
এই পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন নবনীতা। তিনি বলেন, “আমার আগের স্বামী যে আমার অভিনয়টা বন্ধ করিয়ে দেবে, সেটা ভাবিনি। এরপর আমি মেয়েকে নিয়ে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যাই।” শুরু হয় দীর্ঘ আইনি লড়াই। আদালত, উকিলের জটিল পথ পেরিয়ে যখন একটু স্বস্তি, তখনই খবর আসে প্রাক্তন স্বামীর মৃত্যুর। তবে শেষ যাত্রায়ও পাশে পাননি প্রাক্তন শ্বশুরবাড়ির কাউকে। সেই সময় মেয়েকে আঁকড়ে ধরে দিন কাটিয়েছেন নবনীতা।
আরও পড়ুনঃ “কাজ থাকলেই সম্পর্ক, কাজ ফুরোলেই কেউ চেনে না” অকপট অভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায় !
তবে জীবন আবারও এক নতুন মোড় নেয় ২০২০ সালে। অভিনেতা রাজা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আইনি ভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন নবনীতা। রাজাও একজন পরিচিত মুখ ছোটপর্দায়। নতুন এই সম্পর্ক বদলে দেয় নবনীতার জীবনের ছন্দ। তার কথায়, “আমার কাজ নিয়ে শুধু রাজা নয়, আমার শ্বশুরবাড়ির সবাই খুব সাপোর্টিভ। শাশুড়ি, ননদ সবাই পাশে থাকে।”
বর্তমানে অভিনয়ের পাশাপাশি স্বামীর সঙ্গে মিলে একটি জিম খুলেছেন নবনীতা। মেয়ে, স্বামী এবং ভালোবাসায় ভরা পরিবার নিয়ে এখন তার জীবন সুখের। প্রাক্তন জীবনের বেদনা পেরিয়ে আজ আবারও জীবনের জয়গান গাইছেন নবনীতা দে। তিনি আজ শুধু অভিনেত্রী নন, এক যোদ্ধাও।