“ক্যা’ন্সা’রে ভুগেছি, কিন্তু ডিপ্রে’শনে নয়!”—মিঠু চক্রবর্তীর সাহসী স্বীকারোক্তি! ক্যা’ন্সার ছিল প্রথম ধাক্কা, শরীরে বাসা বেঁধেছিল আরও দু’টি মা’রণরো’গ! ক্যামেরা ছাড়ার কারণ শুধু ক্যা’ন্সার ছিল না, মিঠু জানালেন অজানা সত্য!

অভিনেতা ‘সব্যসাচী চক্রবর্তী’র (Sabyasachi Chakraborty) স্ত্রী হিসেবে অভিনয় জীবনে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন ‘মিঠু চক্রবর্তী’ (Mithu Chakraborty) । ছোটপর্দা থেকে বড়পর্দা, নিজের সহজাত অভিনয়ে বারবার মুগ্ধ করেছেন দর্শকদের। তবে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্যামেরার সামনে দেখা যায়নি তাঁকে। স্টুডিয়ো, লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের ব্যস্ততা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। না, কোনও স্বেচ্ছাবিরতির জন্য নয়, বরং শারীরিক অসুস্থতা বাধ্য করেছিল তাঁকে থেমে যেতে।

জানা যায়, মিঠুর শরীরে ধরা পড়েছিল স্তন ক্যা’ন্সার। প্রথম পর্যায়েই ধরা পড়ায় দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যায়। কেমোথেরাপি চলাকালীন ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়, শুধু কর্কট রোগই নয়, শরীরে বাসা বেঁধেছে টিউ’বার’কিউ’লোসিস এবং হেপা’টাই’টিস বি-র মতো মারাত্মক রোগও! এই তিনটি রোগ একসঙ্গে নিয়ে দীর্ঘ সময় লড়েছেন তিনি। চিকিৎসার প্রক্রিয়া চলাকালীন, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’ ধারাবাহিকে শেষবার তিনি করেছিলেন শুটিং।

তারপরের সময়টা শুধুই হাসপাতাল, ওষুধ, বিছানা আর নিজের সঙ্গে নিরন্তর লড়াই। এই কঠিন সময়ে স্বামী সব্যসাচী ছাড়াও পাশে ছিলেন তাঁর পরিচারিকা মাসি, যিনি মিঠুর কাছে ‘ফ্যামিলির মতোই’। পরিবারের পাশাপাশি অনুরাগীরাও এই যুদ্ধে তাঁর বড় ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছেন বলে জানান অভিনেত্রী। এদিন রাহুল অরুণোদয়ের পডকাস্ট শোতে উপস্থিত ছিলেন মিঠু। ছোট করে কাটা চুল, শরীরে রোগের ধকল স্পষ্ট, কিন্তু মুখের হাসি এখনও ঠিক আগের মতোই।

মিঠু বলেন, প্রাথমিক ভাবে ক্যা’ন্সার ধরা পড়তেই তিনি গাইনোকোলজিস্ট এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার পরামর্শ নিয়েই শহরের এক নামি হাসপাতালে চিকিৎসা চলে তার। সেই সময় টানা এক বছর বিছানার সঙ্গে লেগে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী। নিজেকেই নিজে চিনতে পারতেন না, কিন্তু জোর কখনোই হারাননি। তিনি এদিন বলেন, “ক্যা’ন্সা’রে ভুগেছি, কিন্তু ডিপ্রে’শনে নয়!” মিঠুর কথায়, তার থেকেও খারাপ পরিস্থিতিতে পৃথিবীতে অনেক লোক থাকে।

ছোটবেলা থেকেই সেই কথা বাবার কাছে শুনে এসেছেন। তাই রোগের কাছে মাথানত করেননি তিনি, নিজেকে শক্ত রেখে লড়ে গেছেন। আজ ডাক্তারও অবাক হয়ে বলেন, যেখানে একজন কেমোথেরাপি ঠিকমতো সহ্য করতে পারেন না, অভিনেত্রী সেখানে টিভি ও হেপাটাইটিস বি একসঙ্গে সামলেছেন! বর্তমানে পুরোপুরি সুস্থ না হলেও মিঠু এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। তিন মাস অন্তর চেক-আপ চালু থাকবে, তবে আপাতত কেমো শেষ হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ ডিভোর্সের বিনিময়ে টাকার দাবি চন্দ্রের! চন্দ্রর দাবির মুখে নতুনের পাল্টা জবাব, বাড়ির সম্পূর্ণ মালিক কমলিনী! স্বার্থে জর্জরিত চন্দ্র এবার আশ্রয়হীন! ফের একসঙ্গে থাকবে কমলিনী-নতুন! কমলিনীর সাহসী সিদ্ধান্তে কাঁপছে গোটা পরিবার!

সম্প্রতি একটি বিজ্ঞাপনের কাজে শুটিং ফ্লোরে পা রেখেছেন। তিনি এবং সব্যসাচী, দু’জনেই একটি ট্রাভেল কোম্পানির মুখ হয়েছেন। মিঠু জানিয়েছেন, এবার একেবারে পুরোপুরি কাজে ফিরতে চান। বর্তমানে গাড়ি চালানোর অনুমতিও পেয়েছেন, মাঝেমধ্যে নাতির সঙ্গে দেখা করতে যান। তবে বাড়ির জীবন তাঁর দারুণ প্রিয়। বই পড়া, সেলাইফোঁড়াই আর সব্যসাচীর সঙ্গেই দিন কাটে আনন্দে। দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে, আবারও নতুন উদ্যমে ফিরেছেন মিঠু, এই বিশ্বাসেই বুক বাঁধছেন তাঁর ভক্তেরা।