দিন কয়েক আগেও ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ধারাবাহিকের নায়ক-নায়িকার একটি ছবি ঘিরে দর্শকমহলে সম্পর্কের গুঞ্জনের ঝড় উঠেছিল। শোনা যাচ্ছিল, দিতিপ্রিয়া রায় (Ditipriya Roy) এবং জীতু কমলের (Jeetu Kamal) মধ্যে শুটিং ফ্লোরেই চলছে ঠান্ডা যুদ্ধ। পরস্পরের সঙ্গে নাকি একেবারেই কথা বলেন না তাঁরা, শুধুমাত্র স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী শট দেওয়াই এখন তাঁদের একমাত্র যোগাযোগ! যদিও এই জল্পনা অস্বীকার করে প্রথমে একটি ব্যক্তিগত পোস্ট করেন জীতু। তারপর চ্যানেলের উদ্যোগে ফেসবুক লাইভে একসাথে বসে হাসিমুখে গুজব উড়িয়ে দেন দুজনে।
মুহূর্তের মধ্যেই সেই লাইভ ভাইরাল হয়—সবাই ধরে নেন, এই অধ্যায় বুঝি এখানেই শেষ। কিন্তু না, কয়েকদিনের মধ্যেই সেই ফের শুরু। এদিন একটি বিস্ফো’রক পোস্ট করেন দিতিপ্রিয়া, যেখানে নাম না করলেও ইঙ্গিত স্পষ্ট ছিল জীতুর দিকেই। নিজের সহ-অভিনেতার বিরুদ্ধে অশা’লীন আচরণ, অপ্রাসঙ্গিক ম্যাসেজ পাঠানো এবং মানসিক অস্বস্তি তৈরি করার মতো গুরুতর অভিযোগ আনেন তিনি। এমনকী, ধারাবাহিকে কাজ করাটাই তাঁর পক্ষে ‘সহ্যসীমার বাইরে’ বলেও মন্তব্য করেন।
পোস্টটির ভাষা সংযত হলেও, তীব্রতার অভাব ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনার পর ফের বিতর্কের আগুনে ঘি পড়ে। এই পরিস্থিতিতে অবশেষে মুখ খুললেন জীতু কমল। সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নে সোজা সাপটা জবাব দিলেন—“হাসি ছাড়া এর কোনও উত্তর আমার দেওয়ার নেই।” দিতিপ্রিয়ার মন্তব্যকে একপ্রকার ‘শিশুসুলভ’ বলেই ব্যাখ্যা করেছেন অভিনেতা। তাঁর দাবি, সমস্ত মেসেজের স্ক্রিনশট তাঁর কাছে রয়েছে এবং তিনিই নাকি প্রথম মেসেজ পান দিতিপ্রিয়ার তরফ থেকে।
তাঁর কথায়, “যদি সত্যিই সত্যি বলতে হয়, তবে পুরো সত্যিটাই প্রকাশ করা উচিত।” তিনি আরও বলেন, তিনি স্বভাবে একটু অন্তর্মুখী, শুটিং শেষে নিজের ঘরে বসে বই পড়তেই পছন্দ করেন। ফ্লোরে অকারণে আলোচনায় থাকেন না। জীতুর কথায়, একজন ‘ছোট মনের’ সহকর্মী তাঁর জনপ্রিয়তা হজম করতে পারছেন না। ‘গৃহপ্রবেশ’ ছবির সাফল্যের পরে ধারাবাহিকেও জনপ্রিয়তা পাচ্ছেন, আর তাতেই নাকি কারও কারও ‘গাত্রদাহ’ হচ্ছে। তাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই এমন অভিযোগ উঠছে।
আরও পড়ুনঃ “একসময় চেয়েছিলাম ও যেন কষ্ট না পেয়ে চলে যায়!”— স্বামী দেবরাজ রায়ের মৃত্যু নিয়ে অনুরাধার বেদনা! বিয়ের পরও অভিনয়ে ব্যস্ততায় সন্তান এলো না, থিয়েটারের মাঝে হারিয়ে গেল মাতৃত্ব!
তবে এই পরিস্থিতি নিয়েও তিনি পেশাদারিত্ব বজায় রাখবেন বলেই দাবি করেছেন। তাঁর মতে, ব্যক্তিগত বিষয় কখনও পেশাদার কাজে প্রভাব ফেলতে দেওয়া উচিত নয়। যতটা সম্ভব নির্লিপ্ত থেকেই নিজের কাজ করে যাবেন তিনি। এই গোটা বিতর্কে টেলিপাড়ার মুখ এখন ভাগ হয়েছে দু’ভাগে। কেউ দিতিপ্রিয়ার সাহসিকতাকে কুর্নিশ করছেন, আবার কেউ আবার জীতুর ‘বড় মনের’ প্রশংসা করছেন। তবে যাই হোক না কেন, এমন এক সময়ে যখন ধারাবাহিকটি জনপ্রিয়তার শিখরে, তখন তার দুই প্রধান মুখের মধ্যে এমন ফাটল, নিঃসন্দেহে প্রভাব ফেলছে দর্শকদের মনে।