চিকিৎসকের গাফিলতিতে সদ্যজাত পুত্রসন্তান হা’রিয়ে শো’কে স্তব্ধ অভিনেত্রী-ইনফ্লুয়েন্সার সোহিনী গঙ্গোপাধ্যায়! সন্তান আসার খুশি ভাগ করেছিলেন সবার সঙ্গে, অথচ মুহূর্তেই মাতৃত্বের আনন্দ গ্রাস করল শো’কের কালো ছায়া! চিকিৎসকের অমানবিকতার বিচার চাইছে নেটপাড়া!

ছোট পর্দার পরিচিত মুখ ‘সোহিনী গঙ্গোপাধ্যায়’ (Sohini Ganguly) তবে সমাজ মাধ্যমে ইনফ্লুয়েন্সার (Social Media Influencer) বা লাইফস্টাইল কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবেই বেশি পরিচিত তিনি সকলের কাছে। বছরের শুরুতেই জানিয়েছিলেন, সংসারে আসতে চলেছে নতুন অতিথি। মাতৃত্বের পথে ছিলেন তিনি। নতুন অতিথির আগমনকে কেন্দ্র করে এই মুহুর্ত তিনি দারুণভাবে উপভোগ করছিলেন। মাতৃকালীন শুট থেকে শুরু করে সাধভক্ষণ, সব বিশেষ মুহূর্ত ভাগ করে নিয়েছিলেন অনুরাগীদের সঙ্গে। তাঁর প্রতিটি পোস্টে আনন্দ আর উৎসবের ছোঁয়া লেগে থাকত। এমনকি গর্ভাবস্থার মাঝেই কনটেন্ট তৈরি বন্ধ করেননি তিনি।

সমানতালে চালিয়ে গেছেন নিত্যনতুন কনটেন্ট তৈরি। কিন্তু সেই আনন্দঘন মুহূর্ত এক ভয়ংকর যন্ত্রণায় পরিণত হবে, সেটা ভাবেননি কেউই! সন্তানের জন্মের সঙ্গে সঙ্গে জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ পাওয়ার কথা ছিল সোহিনীর। মায়ের কোলে আসার আগেই সেই সব আনন্দ থেমে গেল। সদ্যোজাত পুত্রসন্তানকে হারালেন তিনি। এই হৃদয়বিদারক খবরের সত্যতা সামনে আনলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু তথা অভিনেত্রী শ্রুতি দাস। প্রসঙ্গত, কিছুদিন ধরেই সোহিনীকে সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় দেখা যাচ্ছিল না।

ভ্লগ আপলোড থেমে গিয়েছিল, আগের মতো প্রাণবন্ত উপস্থিতি মিলছিল না তাঁর কাছ থেকে। অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, হয়তো সন্তান জন্মের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত তিনি। কিন্তু অপেক্ষার শেষে জানা গেল, এক অপ্রত্যাশিত ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন তিনি। সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হলো, অভিযোগ উঠছে ডাক্তারের গাফিলতির জন্যই অকালে প্রাণ হারিয়েছে শিশুটি! সোহিনীর ননদ সামাজিক মাধ্যমে জানান, ডাঃ এস.এন. দাস অপারেশনের পরিবর্তে অবহেলা করেছেন।

এমনকি অভিযোগ তুলেছেন, তিনি নাকি নিজের ক্লিনিকে বসে মদ্যপানে মত্ত ছিলেন, অথচ রোগীর প্রতি দায়িত্বশীল ছিলেন না। তিনি স্পষ্ট লিখেছেন—”ডাঃ এস.এন. দাস আমার ভাইয়ের প্রথম পুত্র সন্তানকে মেরে ফেলেছেন। ক্যাল্যানীতে মিলেনিয়ামে উনি ওটি করেন, আর কাঁচরাপাড়ায় তাঁর বাড়ি ও পলিক্লিনিক রয়েছে। সবার কাছে আমার অনুরোধ, ওনার কাছে যাবেন না। আর কোনও মকে যেন শূন্য কোলে ফিরতে না হয়। ওটি না করে পলিক্লিনিকে বসে মদ খাচ্ছেন—ভাবুন একবার!

উনি ডাক্তার নন, মানুষরূপী জাওয়ারের মতো একজন!” এই অভিযোগ ছড়িয়ে পড়তেই সাধারণ মানুষ আরও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কারণ এক মায়ের কোল ফাঁকা হয়ে যাওয়ার বেদনাকে হালকা ভাবে নেওয়া যায় না। তাঁকে যারা চেনেন, তারা জানেন কীভাবে প্রতিটি মুহূর্তে ইতিবাচকতা ছড়িয়ে দেন তিনি। অথচ এমন মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা তাঁর জীবনে নেমে আসবে, সেটা মেনে নিতে পারছেন না কেউই। বিশেষ করে তাঁর মতো অনুপ্রেরণামূলক একজন মানুষের এই ক্ষতি অনেককেই কষ্ট দিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ প্রয়া’ত আশির দশকের জনপ্রিয় অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, ৬২-তেই থেমে গেল জীবনযাত্রা! বড়পর্দা থেকে রাজনীতি– সবেতেই সমান সক্রিয়তা! এক যুগের সমাপ্তি, শো’কস্তব্ধ বাংলা বিনোদন জগত!

একজন বলেছেন,”সন্তান হারানোর বেদনা মুখে বোঝানো যায় না, সেটা শুধু একজন মা-ই বোঝে। জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান প্রাপ্তি সন্তানের জন্ম। সেই সুযোগ পেয়েও বঞ্চিত হতে হয়েছে সোহিনীকে।” আবার কেউ বলেছেন, “আজকের দিনে ডাক্তারকে ভগবান বলা হয়, কিন্তু তখনই সেটা সত্যি হয় যদি তিনি নিজের পেশার প্রতি আন্তরিক থাকেন।” অন্যজনের কথায়, “একটি প্রাণের দায়িত্ব নেওয়া মানে বিশ্বাস ধরে রাখা। অথচ সেই বিশ্বাস ভেঙে যাওয়ার যন্ত্রণা এক পরিবারকে চিরকালের জন্য শূন্য করে দিয়েছে।” এখন শুধু প্রার্থনা, সোহিনী এবং তাঁর পরিবার যেন এই গভীর যন্ত্রণা সহ্য করার মতো শক্তি পান।

You cannot copy content of this page