“কাঞ্চন খুব ক’ষ্টে আছে, ছেলের সঙ্গে দেখা করতে দেয় না পিঙ্কি!” “মা-ই ওশের মনে বাবা সম্পর্কে বিরূপ ধারণা ঢুকিয়েছে…ওদের যেটা হল, সেটার জন্য পিঙ্কি দায়ী!”— স্বামীর দুঃখ নিয়ে পিঙ্কিকে পরোক্ষে দো’ষারোপ করতে গিয়েই মুখ খুলে আবার‌ও বিতর্কে শ্রীময়ী!

টলিউডের আলোচিত দম্পতি কাঞ্চন মল্লিক (Kanchan Mullick) এবং শ্রীময়ী চট্টরাজ (Sreemoyee Chattoraj) আবারও শিরোনামে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শ্রীময়ী খোলাখুলি বলেন, তাঁর স্বামী কাঞ্চন আসলে অনেক কষ্টের মধ্যে আছেন। প্রাক্তন স্ত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Pinky Banerjee) সঙ্গে ডিভোর্সের পর থেকে একমাত্র ছেলে ওশের (Osh) সঙ্গে তাঁর আর যোগাযোগ নেই। শ্রীময়ীর কথায়, কাঞ্চন চেয়েছিলেন ছেলের সঙ্গে দেখা করার অধিকার বা ভিজিটিং রাইটস পেতে। কিন্তু সেই সুযোগ তিনি পাননি।

এ প্রসঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে শ্রীময়ী বলেন, একজন মা হিসেবে তিনি বুঝতে পারেন, সন্তানের বেড়ে ওঠার জন্য বাবা-মা দু’জনের উপস্থিতিই কতটা প্রয়োজনীয়। প্রসঙ্গত, পিঙ্কির সঙ্গে সংসার সুখের হয়নি কাঞ্চনের। তাঁদের সম্পর্কে একসময় ভালোবাসা থাকলেও, পরবর্তীতে সম্পর্ক ভেঙে যায় নানা অভিযোগের কারণে। লকডাউনের সময় পিঙ্কি স্বামীকে পরকীয়ার দায়ে অভিযুক্ত করেন। যদিও শুরুতে কাঞ্চন এসব গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছিলেন, পরে তা আর গোপন থাকেনি।

গত বছরের শুরুতেই তাঁদের ডিভোর্স চূড়ান্ত হয়। বিচ্ছেদের কিছুদিনের মধ্যেই কাঞ্চন নতুন জীবন শুরু করেন শ্রীময়ীর সঙ্গে। সেই সংসারে জন্ম নেয় কন্যা সন্তান কৃষভি। ছোট্ট কৃষভিকে নিয়ে তাঁদের পরিবার এখন সম্পূর্ণ হলেও, কাঞ্চনের জীবনের অন্য প্রান্তে রয়ে গেছে অপূর্ণতা, প্রথম সংসারের সন্তান ওশের সঙ্গে দুরত্ব। ডিভোর্সের পর আদালতের রায়ে ছেলের কাস্টডি পেয়েছেন পিঙ্কি। কাঞ্চনও সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেন। তবে খোরপোষ হিসেবে তিনি প্রাক্তন স্ত্রীকে মোটা অঙ্কের টাকা দেন।

কিন্তু সন্তানের সঙ্গে সম্পর্কের জায়গাটা ফাঁকা থেকে যায়। শ্রীময়ীর মতে, এখানে দায় অনেকটাই মায়ের। কারণ নাবালক ছেলে মায়ের কথাকেই বেশি গুরুত্ব দেবে, বাবার প্রতি রাগ কিংবা অভিমানও সেখান থেকেই তৈরি হতে পারে। তিনি নিজের ভবিষ্যতের কথা বলতে গিয়ে জানান, কখনও যদি তাঁর সংসারে ভাঙন আসে, তবে তিনি কোনওভাবেই সন্তানকে বাবা-মায়ের ঝামেলার মাঝে টেনে আনবেন না। শ্রীময়ীর ভাষায়, “আমিও এখন মা। মেয়েকে আমি যেভাবে বড় করব যে শিক্ষায় দিয়ে, সেটাই বলবে ও।

আমি উত্তর কলকাতার মেয়ে হয়ে এটা ভাবতেই পারি না যে বাবা বা মা অন্য কারোর সঙ্গে সম্পর্ক রাখছেন।” অন্যদিকে, পিঙ্কি এর আগে জানিয়েছিলেন, কাঞ্চন তাঁকে ডিভোর্সের কাগজ পাঠানোর পরই তিনি সব কথা ছেলে ওশকে জানিয়ে দেন। তখন ওশ মাকে বলেছিল, মানুষের শরীরে যেমন অ্যাপেনডিক্স থাকে, যেটা কাজের না হলে কেটে বাদ দেওয়া যায়, তেমনই বাবারও আর প্রয়োজন নেই। এই থেকেই স্পষ্ট যে, মাত্র এগারো বছরের হলেও ওশ খুব পরিণত, এবং বাবাকে মিস করে না বলেই জানিয়েছে সে।

আরও পড়ুনঃ “দুই বাচ্চার মা…২০২৫ এ ধূমকেতু হলে নিতাম না!”— ছবি হিট হতেই বদলে গেলেন দেব, শুভশ্রীর অবদান ভুলে গিয়ে মাতৃত্বকে করলেন হেয়! “অপমান করার সাহস কে দিয়েছে? এক মাকে অপমান মানে নিজের মাকেও অপমান।” “আগে মানুষ হও, তারপর অভিনেতা বা প্রযোজক হও”— কটাক্ষ নেটপাড়ার!

এখন প্রশ্ন উঠেছে, শ্রীময়ীর মন্তব্যের জবাবে পিঙ্কি কী বলবেন। একপাশে শ্রীময়ীর অভিযোগ, ছেলের সঙ্গে দেখা করতে না পারার আক্ষেপে ভুগছেন কাঞ্চন। অন্যপাশে পিঙ্কির অবস্থান, ডিভোর্সের পর সব দায়িত্ব তিনিই সামলাচ্ছেন। তাঁদের এই ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই চলছে বিতর্ক। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট, সম্পর্কের টানাপোড়েনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওশ, যে বাবার স্নেহ থেকে দূরে বড় হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রীময়ী না পিঙ্কি— কার দৃষ্টিভঙ্গি বেশি গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয় আপনাদের?