“বুড়ো-বুড়ি সিংগেলদের প্রেমের আসর!” “একটা বুড়োকে নিয়েই পাগল অবিবাহিত মেয়েরা, সে উল্টে তিন বাচ্চার মায়ের জন্য পাগল!” “সবাই কি স্বতন্ত্রকেই ভালোবাস?!”— লেখিকা লীনা গাঙ্গুলীকে নিশানা করলেন দর্শকরা! ত্রিকোণ প্রেম দেখে ক্ষুব্ধ দর্শক, ‘চিরসখা’ নিয়ে তীব্র সমালোচনা!

স্টার জলসার ধারাবাহিক ‘চিরসখা’র (Chirosokha) সাম্প্রতিক পর্বে এমন এক মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে, যে দর্শক থেকে শুরু করে ধারাবাহিকের চরিত্ররাও অবাক। স্বতন্ত্রদের গ্রামে এক বিয়ের অনুষ্ঠানেই হঠাৎ করে সব কিছু ওলট-পালট হয়ে যায়! পুলিশ এসে পাত্রকে গ্রে’প্তার করে নেওয়ার পরেই, সেই বিয়ের কনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সবার চোখে-মুখে আতঙ্ক। কিন্তু এখানেই গল্পের মোড় ঘুরে যায়। কনের বাবা, পুরোহিত ঠাকুর করজোড় মিনতিতে সামনে আসে এক পুরনো প্রতিশ্রুতি— স্বতন্ত্রর মায়ের মুখে দেওয়া কথা!

স্বতন্ত্রর মায়ের কথা অনুযায়ী, পুরোহিতের মেয়ে পার্ব্বতীর সঙ্গে একদিন ছেলের বিয়ে হবে। সেই প্রতিশ্রুতির কারণে বিয়ের কনে, অর্থাৎ পার্ব্বতী এতদিন বিয়েই করেনি। সে ছোটবেলা থেকেই স্বতন্ত্রকে নিজের হবু বর বলে ধরে নিয়েছিল, আর আজও তাকেই ভালোবাসে। এই সম্পর্কের জটিলতায় সবচেয়ে বেশি আঘাত পেয়েছে কমলিনী। যে মানুষটা তার ভাঙা জীবনে আশ্রয় হয়ে উঠেছিল, সেই স্বতন্ত্র আজ তার চোখের সামনেই অন্য এক নারীর সঙ্গে বিয়েতে রাজি হতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত সে নিজের ইচ্ছেতে নিচ্ছে না।

বরং পরিস্থিতির চাপেই নিতে হচ্ছে। কমলিনী আবারও যেন এক চেনা যন্ত্রণার মুখোমুখি। তবু, অবাক করার মতো বিষয় হচ্ছে, এই কঠিন সময়ে স্বতন্ত্রর বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে সে। নিজের ভালবাসাকে সে আজ দায়িত্বের কাছে সঁপে দিয়েছে। এতদিন দর্শকরা হয়তো ভাবছিলেন, কমলিনীর জীবনে আর কোনো অশান্তি নেই। কিন্তু এবার নতুন করে অশান্তি শুরুর দিকেই এগোচ্ছে। তবে, শুধু কমলিনী বা স্বতন্ত্র নয়, এই বিয়ের পেছনে সবচেয়ে গভীর আবেগ লুকিয়ে রয়েছে পার্ব্বতীর মনে। যে মেয়েটা সমাজের চোখে মধ্যবয়স্ক, অবিবাহিত— অথচ ভিতরে ভিতরে আজও স্বতন্ত্রকে ভালোবাসে।

সে একপ্রকার নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আগের পাত্রকে বিয়ে করতে যাচ্ছিল। এখন প্রশ্ন উঠছে— স্বতন্ত্র কি পার্ব্বতীর দীর্ঘ অপেক্ষা আর প্রেমের মর্যাদা দেবে? নাকি তার ভালোবাসা কমলিনীর প্রতিই থাকবে? এই নিয়ে সমাজ মাধ্যমে ধারাবাহিকের ভক্তদের মধ্যে শুরু হয়েছে তুমুল উত্তেজনা। কেউ বলছেন, “যদি স্বতন্ত্রর সঙ্গে পার্ব্বতীর বিয়ে হয়, তাহলে ‘চিরসখা’ ধারাবাহিকের মূল সুরটাই বদলে যাবে!” অন্যজনের আক্ষেপ, “প্রেম আর বন্ধুত্বের মেলবন্ধন যদি এখানেই ছিন্ন হয়, তবে কি দর্শকরা আর আগ্রহ নিয়ে দেখবেন এই গল্প?”

তবে, কটাক্ষ আর সমালোচনাও কিন্তু কম হচ্ছে না। সবচেয়ে বেশি আঙ্গুল উঠছে ধারাবাহিকের লেখিকার দিকে। আর লিখিকা যখন লীনা গাঙ্গুলী, তখন দায় তো আর অস্বীকার করা যায় না! তাই একাংশের দর্শকরা বলছেন, “অবাস্তব লেখিকার লেখা। শয়তানি বুদ্ধি আর ঝগড়া শেখানো ওনার সিরিয়াল এর শিক্ষা। ওনার নাম “শকুনির বুদ্ধি” নাম দিলে ভালো হতো!” “সবাই কি স্বতন্ত্রকেই ভালোবাসে! আজব অদ্ভুত সিরিয়াল। লেখিকার পায়ে শতকোটি প্রণাম!” কেউ কেউ আবার বলছেন, “স্বতন্ত্রকে নিয়ে পাগল অবিবাহিত মেয়েরা, আর স্বতন্ত্র পাগল তিন বাচ্চার মায়ের জন্য।

আরও পড়ুনঃ পাঁচ মাস আগে বিচ্ছেদ ঘোষণা করেছিলেন দুজনে! পুজোর মরশুমে দূরত্ব ভুলে আবার‌ও কাছাকাছি পৃথা-সুদীপ?

যে কিনা শুধু মহান হওয়ার চেষ্টা চালায় অথচ স্বতন্ত্রকে এটিএম মেশিন ভাবে!” আবার অনেকেই মধ্যবয়স্কদের প্রেম দেখে বিরক্ত হয়ে বলেছেন, “বুড়ো-বুড়িদের মেলা বসেছে এই সিরিয়ালে! সব বুড়িগুলো বুড়োগুলো সিংগেল! সবাই শুধু স্বতন্ত্রকেই চায়!” সত্যিই কি লেখিকার বাকি ধারাবাহিক মতই হয়ে যাচ্ছে এই ধারাবাহিকও, নাকি নতুন কোনও মোড় আবার ফিরিয়ে আনবে পুরোনো আবেগ? যেভাবেই হোক, ‘চিরসখা’ এখন এমন এক জটিল আবেগের জালে আটকে গেছে, যেখানে কে ঠিক আর কে ভুল, সেটা বলা কঠিন।