শত ব্যস্ততার মধ্যেও চোখ এড়ালো না অসহায়তার আর্তি, ক্যা’ন্সার আক্রান্ত এক অসহায় বৃদ্ধের পাশে দাঁড়ালেন দেব! মেগাস্টার প্রমাণ করলেন মানবতা এখনও বেঁচে আছে, এই উদ্যোগ ছুঁয়ে গেল হাজারো মন!

রূপালী পর্দায় তিনি যেমন নায়ক, বাস্তব জীবনেও বারবার প্রমাণ করে দিয়েছেন তাঁর মানবিক মুখ। টলিউড মেগাস্টার ‘দেব’ (Dev) ওরফে দীপক অধিকারী শুধু ছবির জন্যই নয়, সাধারণ মানুষের জন্যও বহুবার হয়ে উঠেছেন আশার আলো। আর ঠিক সেইরকমই এক ঘটনার সাক্ষী থাকল এই দুর্গাপুজো (Durga Puja 2025)। নিজের নতুন ছবি ‘রঘু ডাকাত’-এর (Raghu Dakat) প্রচারে যখন ব্যস্ততা তুঙ্গে, তখনই এক অসহায় বৃদ্ধের পাশে দাঁড়িয়ে আবারও নজির গড়লেন তিনি। দেবের এই মানবিকতায় নতুন করে মুগ্ধ হয়েছেন সকলে, আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে মানুষ হিসেবে তাঁর উচ্চতা কতটা বড়।

সময়ের স্রোতে অনেকেই যখন শুধুই নিজের সাফল্যে বুঁদ হয়ে থাকেন, তখন দেব যেন আলাদা এক উদাহরণ। উত্তর কলকাতার হাতিবাগানে ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা এক বৃদ্ধের ছবি হঠাৎই সমাজের মাধ্যমে ঘুরতে থাকে। ছবির বৃদ্ধ চিরঞ্জিৎ সেনগুপ্ত, যিনি কোনওদিন রোজগারের জন্য ফল বিক্রি করতেন। পরিবারে ছিল স্ত্রী, ছেলে আর এক নাতনি। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে, হৃদরোগে স্ত্রীর ও পুত্রের মৃত্যুর পর যেন জীবনের সমস্ত রঙ ফিকে হয়ে যায় তাঁর কাছে। একমাত্র নাতনির মুখের দিকে তাকিয়ে তিনি নিজের জীবনটাকে ধরে রেখেছেন।

এই কষ্টের দিনে, ক্যা’ন্সার আক্রান্ত শরীর নিয়ে মানুষের ভিড়ে দাঁড়িয়ে শুধুমাত্র একটু সাহায্যের আশায় তাকিয়ে ছিলেন, সেই মুহূর্তের ছবি পৌঁছে যায় দেবের কাছেও। দেব নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে ছবিটি ভাগ করে জানান, তিনি এই বৃদ্ধের পাশে থাকতে চান। কাউকে যদি ওই বৃদ্ধের খোঁজ জানা থাকে, তাহলে যেন তাঁকে দেবের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়— এমনই আবেদন জানান তিনি। তাঁর এই মানবিকতা ব্যাপক প্রশংসা কুড়োয়। অনেকেই বলেন, এই কারণেই দেবকে ভালোবাসেন তাঁরা, কারণ তিনি শুধু পর্দার নয়, বাস্তবেরও একজন নায়ক।

কেউ কেউ আরও লেখেন, আজকাল এত ব্যস্ততার মাঝেও যিনি একজন অচেনা মানুষকে সাহায্য করতে উদ্যোগী হন, তাঁকে শ্রদ্ধা না করে উপায় নেই। উল্লেখ্য, এই ঘটনা অবশ্য দেবের ক্ষেত্রে নতুন নয়। এর আগেও বহুবার শোনা গেছে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর গল্প। চিকিৎসার খরচ বহন করা থেকে শুরু করে শিক্ষা, বাসস্থান-সব জায়গায় তিনি নিজের সাধ্যমতো মানুষের পাশে থেকেছেন। কোনও প্রচার নয়, কোনও আলোচনার লোভ নয়, শুধুমাত্র এক গভীর মানবিকতা থেকেই এই কাজগুলি করেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ “কাউকে না কাউকে ধরেই বড় হতে হয়, সেখানে কাঞ্চনের স্ত্রী আমি।” “স্বামীর পরিচয়ের সুবাদে কাজের সুযোগ পাওয়া লজ্জার কিছু নয়, বরং সেটা গর্বের বিষয়!”— কাঞ্চনের কারণেই মেলে সুযোগ? মুখ খুললেন শ্রীময়ী!

এটাই হয়তো তাঁকে আলাদা করে তোলে, শুধু একজন তারকা নয়, একজন দায়িত্ববান মানুষ হিসেবেও। উৎসব মানেই আনন্দ, কিন্তু এই আনন্দ যেন কারও জীবনে না কমে যায়-সেই চেষ্টাতেই নিজেকে সবসময় নিয়ে আসেন দেব। ‘রঘু ডাকাত’-এর মতো বড় বাজেটের ছবি মুক্তির ঠিক মাঝেই, এক অসহায় মানুষের জন্য সময় বের করে পাশে দাঁড়ানোর এই মানসিকতা নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য। পুজোর এই আনন্দে, দেবের মতো একজন মানুষের এমন একটা পদক্ষেপ অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠল। এটাই দেখায়, সেলিব্রিটি হওয়া মানে শুধুই লাইমলাইটে থাকা নয়-এটা এক দায়িত্বও। দেব যেন সে দায়িত্বটা বারবার নতুন করে পালন করছেন।