“বন্ধুত্ব না ওটা সুবিধাবাদ, কমলিনী একবার পাশেও দাঁড়ালো না স্বতন্ত্রর!” “তাঁর টাকায় জীবন কাটিয়ে, ফ’ষ্টিন’ষ্টি করে এখন পার্বতীর গলায় ঝুলিয়ে দিল!”— কমলিনীর দ্বিচারিতা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া! উদারতার নামে নিঃস্বার্থ ভালোবাসার ‘অপব্যবহার’? কমলিনীর চরিত্র নিয়ে উঠছে প্রশ্ন!

নতুন মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরসখা’ (Chiroshokha)। এতদিনের টানাপোড়েন, ভুল বোঝাবুঝি, সম্পর্কের টানাপোড়েন পেরিয়ে দর্শক ভেবেছিল অবশেষে একটু স্থিতি এসেছে স্বতন্ত্র আর কমলিনীর জীবনে। কিন্তু ধারাবাহিক বলেই কি না, সেই শান্তির ভিতরেই যেন ঘাপটি মেরে ছিল নতুন এক ঝড়। হঠাৎই ঘটে এমন এক ঘটনা, যা শুধু স্বতন্ত্র আর কমলিনীর সম্পর্ক নয়, গোটা কাহিনিকেই নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করে দর্শকদের। গ্রামে পার্বতীর বিয়ের অনুষ্ঠানে আচমকাই পুলিশের আগমন, পাত্র গ্রেফতারের পরেই অপ্রত্যাশিত প্রস্তাব– স্বতন্ত্রকে জামাই হিসেবে চান পুরোহিত মশাই।

এমন এক পরিস্থিতিতে কমলিনীর উদাসীনতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন! স্বতন্ত্র এমন একজন চরিত্র, যে কমলিনীর পাশে ছিল প্রতিটি কঠিন মুহূর্তে। যখন তার প্রাক্তন স্বামী চন্দ্র ফিরে এসে তার জীবনে অশান্তি ডেকে আনে, তখনও সে পাশে থেকেছে। এমনকি মাথার উপর ছাদ না থাকলেও, নিজের ঘরের দরজা খুলে দিয়েছে কমলিনীর জন্য। অথচ আজ যখন তার জীবনে এমন এক কঠিন সিদ্ধান্তের সামনে এসে দাঁড়াতে হচ্ছে, তখন কমলিনীর অবস্থান যেন ধোঁয়াশায় ঢাকা পড়ে গেছে। সে যেন এমন একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে, যেখানে ভালোবাসা আর সামাজিক দায়বদ্ধতার মধ্যে ভারসাম্য রাখতে গিয়ে আবেগকে গলা টিপে ধরতে হয়।

কিন্তু সত্যিই কি এটাই বন্ধুত্বের আদর্শ রূপ? এই মুহূর্তে দর্শকদের একটা বড় অংশ যে প্রশ্ন তুলছেন তা অন্যায্য নয়। তারা ভাবছেন, এই উদারতা আদৌ কি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, নাকি একপ্রকার নিজেকে দায়মুক্ত করার কৌশল? যেখানে সমাজ, পরিবার, প্রতিবেশী সবাই সম্পর্কের প্রকৃত রূপ নিয়ে আঙুল তোলে, সেখানে একমাত্র স্বতন্ত্রই ছিল যিনি কোনো হিসেব না করেই পাশে থেকেছে। এখন তার জীবনের এমন এক সিদ্ধান্তে কমলিনীর হঠাৎ উদার মনোভাব অনেককেই বিরক্ত করেছে।

যারা এতদিন তাদের সম্পর্কের সংবেদনশীল দিকগুলো দেখে প্রশংসা করেছিল, তারাই এখন বলছে-এটা বন্ধুত্ব নয়, এটা কেবল সুবিধা নেওয়া। কমলিনী চরিত্রটি বরাবরই আত্মসম্মানবোধ ও আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। সে চায় না সমাজ তাকে ভুল চোখে দেখুক, কিংবা তার সন্তানরা লজ্জার মুখে পড়ুক। কিন্তু এই আত্মরক্ষার প্রয়াস কি তাকে একটু বেশি আত্মকেন্দ্রিক করে তুলছে না? যেই সমাজের ভয়ে সে সম্পর্ককে স্বীকৃতি দিতে চায় না, সেই সমাজই তো বারবার তার চরিত্রে কালি দিয়েছে। তাহলে সে কি ভুল মানুষকে রক্ষা করছে? তার এই দ্বিধা, এই পিছু হটা, কোথাও গিয়ে স্বতন্ত্রের উপর অবিচার হয়ে দাঁড়াচ্ছে না কি?

আরও পড়ুনঃ জলে ডুবে নয়, জুবিনকে ‘বি’ষ খাইয়ে’ খু’ন করা হয়েছে! পুলিশি জেরায় উঠে এলো চাঞ্চল্যকর সব তথ্য! জলে নামার আগেই শরীরে শুরু হয় বি’ষক্রিয়া! আসল অভিযুক্ত কে?

এই সম্পর্কটা ঠিক কী-বন্ধুত্ব, ভালোবাসা, না সামাজিক দায়বদ্ধতার জট? ‘চিরসখা’ নামটা যে বন্ধুত্বের গভীর বন্ধন বোঝায়, সেই বন্ধনে এখন প্রশ্নচিহ্ন পড়ে যাচ্ছে। দর্শকরা চায় না কমলিনী স্বতন্ত্রকে ভালো না বাসুক, বরং তারা চায় সেই ভালোবাসার স্বীকৃতি আসুক সাহসের সঙ্গে। আর সেই স্বীকৃতি যদি শুধু কথায় থেকে যায়, কাজের মধ্যে না আসে, তবে তার মানেই বা কী? সময়ই বলবে কমলিনী শেষমেশ কী সিদ্ধান্ত নেয়, তবে আপাতত দর্শকেরা অপেক্ষায়, এই সম্পর্ক কি শেষমেশ ‘চিরসখা’ হয়ে উঠবে, নাকি থেকে যাবে দ্বিধায়?