মধ্যবয়সের জীবনের নতুন সম্পর্ক আর সামাজিক মানদণ্ড নিয়ে বরাবরই আলোচনা থেকেছে স্টার জলসার ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) ধারাবাহিক। দর্শকের মধ্যে কমলিনীর সিদ্ধান্তকে ঘিরে নানান প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় সমাজ মাধ্যমে। কেউ সমর্থন করেন, কেউ আবার প্রশ্ন তোলেন। উল্টোদিকে রয়েছেন কমলিনীর চিরসখা স্বতন্ত্র, এমন একটি চরিত্রকে উপস্থাপন করা সহজ নয়। বিশেষত যখন সে অন্যের জন্য জীবনে অগণিত ত্যাগ করেছে।
ধারাবাহিক ‘চিরসখা’তে অন্যান্য চরিত্রের থেকে সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের ‘স্বতন্ত্র’ চরিত্রটি দর্শকদের মনে বিশেষ ছাপ ফেলেছে। গল্পের শুরুতে কিছু নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া এলেও, ধীরে ধীরে চরিত্রটির গভীরতা ও মানসিকতা বোঝার সঙ্গে সঙ্গে দর্শকরা তার প্রতি নতুন শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা অনুভব করতে শুরু করেন। তার অভিনয় যে কেবল চরিত্রটিকে জীবন্ত করেছে তাই নয় বরং পরিবার, বন্ধুত্ব এবং মধ্যবয়সের নতুন সম্পর্কের মানসিক জটিলতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে।
এই চরিত্রের মাধ্যমে দর্শকরা দেখতে পাচ্ছেন কিভাবে একজন মানুষ সারাজীবন অন্যের জন্য বেঁচেও, জীবনের মাঝপথে নতুন বন্ধুত্ব বা সম্পর্ককে স্বীকার করতে পারে। চরিত্রটি যেমন সামাজিক চিন্তা এবং পরিবারকে সম্মান দেয়, তেমনই নিজের আবেগের জন্যও জায়গা রাখে। এই দৃষ্টিভঙ্গি দর্শকদের অনেককে অনুপ্রাণিত করেছে, আবার কারও ক্ষেত্রে সমালোচনায় করার সুযোগও দিয়েছে। তবে, সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে সুদীপকে জানতে চাওয়া হয়, এই চরিত্রটা করে কি প্রাপ্তি হয়েছে?
উত্তরে তিনি বলেন, “যখন ‘শ্রীময়ী’ ধারাবাহিকে অভিনয় করতাম, দর্শকদের বিরক্তির কারণ হয়েছি চরিত্রটার জন্য। সেটাও যেমন একটা পাওয়া চরিত্ররা থেকে, তেমনই ‘চিরসখা’তে শুরুর দিকে অনেকেই অনেক নেতিবাচক কথা বলেছিল এই চরিত্রটা নিয়ে। কিন্তু তারাই আবার পরবর্তীকালে বলেছে, যে আমায় ছাড়া এই চরিত্রটা হতো না। এর থেকে বড় পুরস্কার বা প্রাপ্তি হতে পারে না!” তিনি আরও বলেন, এটি কেবল একটি পারিবারিক গল্প নয়, বরং মানুষের জীবনের গভীর অনুভূতি এবং মধ্যবয়সে সুখ খোঁজার সংগ্রামের প্রতিফলন।
আরও পড়ুনঃ “আত্মসম্মান বোধ থাকলে চলবে না…যাঁর যত বেশি, তার তত কাজ কম”, “তুমি যদি কম কথা বলো তো কাজ দেবে না কেউ” অকপট মনোময় ভট্টাচার্য! সঙ্গীতশিল্পীর কথায় উঠে এল ইন্ডাস্ট্রির কাজের সংস্কৃতির সত্য উপলব্ধি!
দর্শকরা চরিত্রটির প্রতিটি সিদ্ধান্ত, প্রতিটি ছোট্ট আবেগ এবং সম্পর্কের সূক্ষ্মতার সঙ্গে নিজেকে দেখতে পান। সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের কথাগুলো যেন একটা বাস্তবতা আরও শক্তভাবে তুলে ধরেছে যে, একজন অভিনেতার জন্য চরিত্রের সত্যিকারের স্বীকৃতি হলো দর্শকের ভালোবাসা আর গ্রহণযোগ্যতা অর্জন। সুদীপের অভিজ্ঞতা এবং দর্শকের প্রতিক্রিয়া থেকেই স্পষ্ট যে, কোনও চরিত্রের প্রকৃত মূল্য সময়ের সঙ্গে বোঝা যায়। আর সেই অনুভূতিই হৃদয় ছুঁয়ে যায় এবং দর্শকের মনে দীর্ঘদিন ধরে থেকে যায়।






