জি বাংলার ধারাবাহিক ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ (Chirodini Tumi Je Amar) শুধুই একটি নতুন প্রেমকাহিনি না, বরং দর্শকের অভ্যাসের অংশ হয়ে উঠেছিল শুরু থেকেই। সেই অভ্যাসের বড় কারণ ছিলেন দিতিপ্রিয়া রায় (Ditipriya Roy)। অপর্ণা চরিত্রে তাঁর উপস্থিতি আর জিতু কমলের (Jeetu Kamal) সঙ্গে তাঁর রসায়ন মিলেই ধারাবাহিকটি একাধিকবার টিআরপি (TRP List) তালিকার প্রথম পাঁচে জায়গা করে নিয়েছিল। এমনকী এক সময় বেঙ্গল টপারও হয়েছিল এই ধারাবাহিক। কিন্তু দিতিপ্রিয়ার প্রস্থান যেন সেই পরিচিত ছন্দটাই ভেঙে দিল!
তাঁর চলে যাওয়ার পর গল্প যেমন বদলেছে, তেমনই বদলেছে দর্শকের অভ্যর্থনাও। নতুন অপর্ণা হিসেবে শিরিন পালের (Shirin Paul) আগমন সহজ ছিল না। দর্শকের একাংশ শুরু থেকেই তুলনা টেনেছেন, কেউ আবার সময় দিয়ে দেখার পক্ষে ছিলেন। শিরিন নিজের মতো করে চরিত্রে ঢোকার চেষ্টা করেছেন, ধীরে ধীরে অভিনয়ে সাবলীলও হয়েছেন। সহ-অভিনেতাদের কাছ থেকে প্রশংসা পেলেও, সংখ্যার হিসাবে ছবিটা কিন্তু অন্য কথা বলছে! দিতিপ্রিয়া থাকার সময় যে ধারাবাহিক একাধিকবার প্রথম পাঁচে ছিল, তাঁর অনুপস্থিতিতে সেই ধারাবাহিক এবার টিআরপি তালিকা থেকেই ছিটকে গেল!
এই পতন অনেক দর্শকের কাছেই স্পষ্ট ইঙ্গিত যে, নতুন মুখ এলেও পুরনো ম্যাজিক আর ফিরছে না! এই পরিস্থিতির মাঝেই বাড়তি আলোচনার জন্ম দিয়েছে জিতু কমলের একটি সিদ্ধান্ত। ‘ঘরের বায়স্কোপ’ পুরস্কার মঞ্চে সেরা অভিনেতার সম্মান পেয়ে তিনি নিজের পুরস্কার উৎসর্গ করেন শিরিন পালকে। তাঁর বক্তব্য ছিল, এই কঠিন সময়ে শিরিনই তাঁর লড়াইয়ের সঙ্গী। কথাটা মানবিক বলেই অনেকেই দেখেছেন। তবে এখানেই শুরু দ্বিধা। কারণ যাঁর সঙ্গে শুরুটা হয়েছিল, যাঁর সঙ্গে জুটি বেঁধেই জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে, সেই দিতিপ্রিয়ার নাম একবারও না আসায় প্রশ্ন তুলেছেন বহু দর্শক।
দিতিপ্রিয়া ভক্তদের একটা বড় অংশ মনে করছেন, বিষয়টা শুধুই আবেগের নয়। তাঁদের যুক্তি, ধারাবাহিকের সাফল্যের ভিত্তি যাঁর উপর দাঁড়িয়ে ছিল, তাঁকে এভাবে উপেক্ষা করা ঠিক কি না। অনেকেই বলেছেন, ‘নবাগতা অভিনেত্রীকে উৎসাহ দিতে গিয়ে, অভিজ্ঞ অভিনেত্রীর অপমান করেছেন জিতু!’ আজ টিআরপি তালিকা বেরোতেই তাই সমাজ মাধ্যমে শোনা যাচ্ছে কড়া মন্তব্য! কেউ বলেছেন, ‘সেরা নায়ক বা নতুন নায়িকার কামাল চলল না, রানী মা রানীই হয়। দিতিপ্রিয়া ছিল সেই রানী, যাঁকে ছাড়া জিতু ম্যাজিক বেকার।”
আরও পড়ুনঃ ‘ঘরে ছেলে ঢুকিয়ে দেবো,’ হু’মকি দিয়েছিলেন অভিনেতা, রাজনীতিবিদ তাপস পাল ! মৃ’ত্যুর আগে অবধি এই মন্তব্যের জন্য আফশোস নিয়ে বেঁচে ছিলেন প্রয়াত অভিনেতা! আফসোস স্ত্রী নন্দিনী পালের
এই মন্তব্যগুলো হয়তো কড়া, কিন্তু এর মধ্যে দর্শকের হতাশাটাও লুকিয়ে আছে। সব মিলিয়ে এখন ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ শুধু পর্দার গল্পে আটকে নেই। বাস্তবের সিদ্ধান্ত, আবেগ আর সংখ্যার হিসাব মিলিয়ে এক জটিল ছবিই সামনে এসেছে। নতুন জুটি চেষ্টা করছে নিজের জায়গা তৈরি করতে, আবার পুরনো দর্শকের মন পড়ে আছে আগের অপর্ণার কাছেই। কোনটা উচিৎ আর কোনটা না, এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো এখনই নেই। তবে টিআরপি তালিকার এই ধাক্কা স্পষ্ট করে দিয়েছে, চরিত্র বদলালেই গল্প বদলায় না, দর্শকের অনুভূতিও বদলাতে সময় লাগে!






