উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকেই অস্থিরতা আরও বেড়েছে ওপার বাংলায়। একের পর এক হিংসার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে সংবাদমাধ্যমের দফতর থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক সংগঠনেও। এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন দুই বাংলার শিল্পী থেকে রাজনীতিবিদরা। সেই তালিকায় এবার মুখ খুললেন অভিনেতা তথা তৃণমূল সাংসদ দেব। যুদ্ধ যুদ্ধ আবহের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে তিনি শান্তির পক্ষে সওয়াল করলেন।
এই অশান্ত পরিস্থিতি প্রসঙ্গে দেব বলেন, ঈশ্বরের কাছে একটাই প্রার্থনা, মানুষ যেন শান্তিতে থাকতে পারে। ধর্মের ভিত্তিতে কোনও বিভাজন নয়, মানুষ আগে মানুষ হোক। তাঁর কথায়, আজ গোটা পৃথিবী জুড়ে যুদ্ধের ছায়া। দেশের সুরক্ষার নামে বিপুল অর্থ অস্ত্রে খরচ হচ্ছে। অথচ সাধারণ মানুষের ন্যূনতম চাহিদা হল দু বেলার খাবার আর মাথার উপর একটা ছাদ। সেই সহজ চাহিদা মেটাতেই যদি লড়াই না থামে, তবে ভবিষ্যৎ আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা তাঁর।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক হিংসা শিল্প সংস্কৃতির জগৎকেও গভীরভাবে আঘাত করেছে। ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট এবং উদীচীর উপর হামলার খবর প্রকাশ্যে আসতেই আরও চিন্তিত হয়ে পড়েছেন দেব। তাঁর মতে, সংস্কৃতি কোনও দিনও হিংসার পক্ষে থাকতে পারে না। যখন শিল্পের মঞ্চেও আগ্রাসনের ছাপ পড়ে, তখন সমাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে দুই বাংলার সম্পর্কেও প্রভাব পড়তে পারে বলেই মনে করছেন তিনি।
নিজের ভয় এবং আশঙ্কার কথাও লুকোননি দেব। সংবাদমাধ্যমে চোখ রাখলেই তাঁর মনে হচ্ছে, এই অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে অন্য দেশেও। ভারত বাংলাদেশ ভারত পাকিস্তান বা ভারত চিন যুদ্ধের সম্ভাবনার কথাও উঠে আসছে আলোচনায়। কিন্তু এই যুদ্ধ কারও জন্যই মঙ্গলজনক নয় বলে মনে করেন তিনি। দেবের মতে, অন্য মানুষকে হত্যা করে কখনও নিজের পরিবারকে ভাল রাখা যায় না। হিংসা চলতে থাকলে আগামী দিনে আরও অন্ধকার সময় অপেক্ষা করছে।
আরও পড়ুনঃ “পুরুষ মানেই রোজগার করবে, এটা যেমন বাড়তি চাপ, তেমনই মহিলা মানেই সংসার করতেই হবে , এটাও বাড়তি চাপ…ভূমিকা বদলালেই বা সমস্যা কোথায়?”- সমাজের লিঙ্গভিত্তিক চিন্তাভাবনা নিয়ে মুখ খুললেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী!
এই প্রসঙ্গে দেব একা নন। কয়েক দিন আগেই অশান্ত বাংলাদেশ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিক। তিনি বলেছিলেন, বিনোদন জগৎ সব ধরনের হিংসার ঊর্ধ্বে। সেখানে মৌলবাদ ঢুকে পড়লে তার থেকে দুঃখের আর কিছু হতে পারে না। একই সুর শোনা গিয়েছে অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী এবং রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী প্রমিতা মল্লিকের কথাতেও। সকলের একটাই আশা, হিংসা থামুক, শান্তি ফিরুক, আর মানুষ নির্বিঘ্নে বাঁচার সুযোগ পাক।






