“আমি কি নিজের রে’প হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতাম?” “অবাঙালি হয়েও, বাঙালি মহিলাদের জাত তুলে নোংরা কথা বলেছে! ভবিষ্যতেও যদি এমন হয়, প্রতিবাদ করব!” বিতর্ক উড়িয়ে নিজ অবস্থানে অনড় সুদীপা, ক্যাব-অভিজ্ঞতা ঘিরে তুমুল কটাক্ষ! তাঁর অভিজ্ঞতার বর্ণনায় শিহরিত নেটপাড়া!

রবিবারে বাপেরবাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনাই আচমকা দুঃস্বপ্নে বদলে যাবে, এটা ‘সুদীপা চট্টোপাধ্যায়’ (Sudipa Chatterjee) ভাবতেও পারেননি। তাঁর ছেলে আদিদেবের জন্যও এই অভিজ্ঞতা ছিল ভয়ংকর! একটি অ্যাপ ক্যাবে ওঠার পর থেকেই চালকের সঙ্গে সামান্য কথা কাটাকাটি বিস্তর বিতর্কের দিকে গড়ায়। বন্ডেল রোডে কয়েক মিনিটের জন্য মিষ্টি নিতে চাওয়া নিয়ে শুরু হওয়া তর্কে চালক অযথাই স্টপ যোগ করতে বলেন, পরে রুটও বদলে ফেলেন বলে অভিযোগ। আপত্তি জানাতেই নোং’রা ভাষা, হুমকি এবং আক্রমণাত্মক আচরণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।

শেষে সুদীপা গাড়ির নম্বর নোট করে কড়েয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন, যাতে ভবিষ্যতে এমন অভিজ্ঞতা আর কারও না হয়। পরবর্তীতে এই ঘটনা জানাজানি হতেই, সমাজ মাধ্যমে একদিকে যেমন সহানুভূতি পেয়েছেন তিনি, অন্যদিকে একাংশের থেকে জুটেছে কটাক্ষ। অনেকেই বলেছেন, বারবার এমন সব ঘটনা কেন শুধু তাঁর সঙ্গেই ঘটে? আসলেই কি তেমনটাই ঘটেছিল, যেমনটা রটেছে? এই নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন সুদীপা। প্রথমেই তিনি জানালেন, চালকটিকে চড় মারা বা কটু কথা বলা হয়তো তার উচিৎ হয়নি।

কিন্তু যে পরিস্থিতিতে তিনি পড়েছিলেন, সেখানে এইটুকু প্রতিবাদ করতেই হতো! সুদীপার কথায়, “আমি কি নিজের রে’প হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতাম? যখন কোনও বিপ্লব বা যুদ্ধ হয়, দুই পক্ষের প্রতিক্রিয়া সমান গুরুত্বপূর্ণ! আমি সাধারনত নিজের গাড়িতেই যাতায়াত করি, কিন্তু সেদিন প্রয়োজনে অ্যাপ ক্যাবের সাহায্য নিতে হয়েছিল। আমরা ছোট থেকেই ট্যাক্সিতে যাতায়াত করেছি। সেখানে টাকা পয়সা দিয়ে কথা কাটাকাটিও হয়েছে, কিন্তু এমন ঘটনা সত্যি অপ্রত্যাশিত ছিল।” তিনি জানান, বাড়ি থেকে মাত্র দুইশো মিটারের দূরত্বে অবস্থিত একটি মিষ্টির দোকানে আগে থেকেই মিষ্টি কেনা ছিল তার।

শুধুমাত্র টাকা দিয়ে মিষ্টিটা নেওয়ার জন্য গাড়িটা থামাতে বলেছিলেন চালককে। কিন্তু তিনি স্টপেজ এড করার কথা বলেন, প্রথমে রাজি না হলেও পরের সুদীপা রাজি হয়ে যান। তারপর সেই নিয়ে দু’পক্ষের কথা কাটাকাটি হয়, পড়ে তিনি চালককে মা ফ্লাইওভার দিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে, সে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে ম্যাপে যা দেখাচ্ছে, সেই রাস্তা দিয়েই যাবে। এরপর উল্টো একটি অপরিচিত রাস্তায় নিয়ে যেতেই, সুদীপা রেগে গিয়ে তাকে গাড়ি থামাতে বলেন। চালক পুরো টাকার দাবি জানায় এবং বাংলা বোঝে না বলে হিন্দিতে কথা বলতে বলে।

সুদীপা কোনোটাতেই রাজি না হলে, তাঁকে হিন্দিতে মহিলা সংক্রান্ত কটূক্তি এবং মজা দেখানোর হুমকি দেওয়া হয়! এরপর গাড়ি না থামিয়ে অন্য রাস্তা ধরে জোরে গাড়ি চালাতে থাকে সে, প্যানিক বটন অকেজো হওয়াতে সুদীপা আরও সমস্যায় পড়েন। সুদিপার নিজের কথায়, “আমি পুলিশের উচ্চপদস্থ এক কর্মচারীর সঙ্গে তার কথা পর্যন্ত বলাই, কিন্তু সে কিছুতেই বোঝে না। অবশেষে কিছু দূর যাওয়ার পর, ট্রাফিক সার্জেন্টকে দেখে ভয় গাড়ি থামায়। আর আগে অবশ্য আমি আদির কান্না দেখে, কোনরকমে গাড়ির স্টিয়ারিংটা বাঁদিকে ঘুরিয়ে দিই।

তার জন্য আমায় মারাও হয় হাতে। গাড়ি থামাতে লোকজন আমাদের ঘিরে ধরে আর সে এই ঝামেলাটাকে ধর্মভিত্তিক গড়ে তোলার চেষ্টা করে! আমার সাজপোশাক থেকে সে বুঝতে পারিনি আমি হিন্দু, তাই বলতে থাকে একজন হিন্দু ছেলের গায়ে আমি হাত তুলেছি এবং মুসলিমদের দিয়ে মারার হুমকিও দিয়েছি! পরবর্তীতে যখন সত্যিটা জানতে পারে, আমাকে বলে যে লোক না থাকলে আমাকে মেরে শিক্ষা দিত। আমি মারতে বললে, সে তেড়ে আসে আর হাতটা ধরে আমি গালে একটা চড় বসিয়ে দেই।” অভিনেত্রী আরও জানালেন, “অনেকেই বলছেন আমার সঙ্গে কেন এটা হয়।

আরও পড়ুনঃ “ইচ্ছাকৃতভাবে দূরত্ব তৈরি হয়নি, আমাদের সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তি…” অঙ্কিতার সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক নিয়ে প্রান্তিকের অকপট স্বীকারোক্তি! কী কারণে ভাঙছে সম্পর্ক? কী জানালেন অভিনেতা?

আর কারোর সঙ্গে তো হয় না। আমার অনেক কিছুতে সমস্যা আছে, যার জন্য বারবার আওয়াজ তুলতে গিয়ে বিপদে পড়ি। বিধবা বিবাহ বা সতীদাহ প্রথা নিয়েও, একজনের আপত্তি ছিল বলেই পাল্টানো গেছে! আরজি করের ঘটনাও একজনের সঙ্গেই ঘটেছে, তাই বলে সবাই বলতে পারে না, যে আমার মেয়ের সঙ্গে ঘটছে না ওর মধ্যেই দোষ ছিল! আসলে, আমাদের বাংলার সংস্কৃতি এমন কোনদিনও ছিল না। একটা বাইরের রাজ্যে গিয়ে, ওই চালক বলতে পারতেন যে আমি ভাষা বুঝি না হিন্দিতে কথা বলো? আমি একজন বাঙালি হয়ে কেনই বা বলবো!” সুদীপা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এমন কোন ঘটনা ঘটলে তিনি আবারও নির্দ্বিধায় প্রতিবাদ করবেন, যতই বিতর্ক হোক!