“মা কখনও চান না তাঁর সন্তান কষ্ট পাক!” “আমিও খাই, খাবার আর ওষুধ খেয়েই পুজো করুন!”— সোজাসাপটা মত কনীনিকার! উপোস করলেই কি ভগবান তুষ্ট হন? উপোস না করলেই কি পাপ? অভিনেত্রীর ব্যতিক্রমী উত্তর চমকে দেবে!

বাংলার উৎসবপ্রিয় মানুষজনের কাছে কালীপুজো (Kali Puja) মানেই এক অন্যরকম আবেগ। তবে এই দিনটা বাঙালির মধ্যে আলাদা রকমের একটা সংস্কৃতির বিভাজনও চোখে পড়ে-কারণ একদল যেখানে কালীমায়ের আরাধনায় মগ্ন, সেখানে অপর দল সেই একই দিন পালন করেন লক্ষ্মীপূজা। বিশেষ করে যাঁরা বাংলার আদি বাসিন্দা অর্থাৎ চলতি কথায় ‘ঘটি’— তাঁদের ঘরে দীপান্বিতা অমাবস্যায় মা লক্ষ্মীর পুজো হয়ে থাকে। যদিও দেশের অন্যত্র এই দিনটা পরিচিত ‘দিওয়ালি’ হিসেবে, বাংলায় তার রূপ অনেকটাই আলাদা।

এই বিভিন্ন রকম পুজো-আচ্ছার মধ্যে একটা বিষয় বেশ তাৎপর্যপূর্ণ, সেটা হল পুজো মানেই কি উপবাস? এই প্রশ্নটা নিয়ে সম্প্রতি নিজের মত জানিয়ে ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ()। অনেকেই ভাবেন না খেয়ে থাকলেই যেন ভক্তি সম্পূর্ণ হয়, কিন্তু কনীনিকার মতে, নিজেকে কষ্ট দিয়ে পুজো করলে মা লক্ষ্মী খুশি হন– এই ধারণা ঠিক নয়। তাঁর কথায়, মা লক্ষ্মী আমাদের মা, আর মা কখনওই সন্তানের কষ্ট চান না। বরং তিনি চান তাঁর সন্তানরা ভাল থাকুক, সুস্থ থাকুক।

নিজের শরীরের যত্ন না নিয়ে পুজো করার মধ্যে কোনও মহৎ বিষয় নেই বলেই তাঁর মত। কনীনিকার বলেন, “এখন আর পারি না জল না খেয়ে থাকতে আবার চায়ের লোভও সামলাতে পারি না। খাওয়ার ইচ্ছেটা যদিও এখনও ভেতর থেকে আসেনি, নাহলে খেয়েই নিতাম। আমার কিছুদিন আগেই দুটো অস্ত্রোপচার হয়েছে কোমরের ঘাড় নাড়াতে পারছি না, অনেক ওষুধও খেতে হয়। আমার মতো যারা আছেন এমন অসুস্থ, উচ্চ রক্তচাপ বা শর্করা নিয়ে ভোগেন তাদের একটাই অনুরোধ।

খাবার খেয়ে, ওষুধ খেয়ে পুজো করুন তাতে মা কোনদিনও রাগ করবেন না, বরং খুশি হবেন।” পুজো মানেই যে অনেক কিছু ত্যাগ করে করতে হবে, এমন নয়। বরং নিজের শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে, খাওয়া-দাওয়া করে ওষুধ খেয়ে পুজোয় অংশ নেওয়া উচিত। সেটাই মা লক্ষ্মীর কাছে আরও বেশি মানবিক, আরও বেশি গ্রহণযোগ্য। শরীর ভাল না থাকলে অন্তরের ভক্তিও ঠিকভাবে প্রকাশ পায় না। এই বছরটা কনীনিকার কাছে বেশ সংবেদনশীল। বছর শুরুর দিকে তিনি হারিয়েছেন তাঁর মাকে, তাই পুজোয় কোনও বাড়তি আয়োজন রাখেননি তিনি।

দুর্গাপুজো হোক বা কালীপুজো, সবই কেটেছে ছিমছাম ভাবেই। এমন অবস্থায়ও তিনি লক্ষ্মীপুজোয় নিজের মতো করে নিয়েছেন মায়ের আশীর্বাদ, নিজের মতো করে সাজিয়েছেন নিজের মন আর ঘর। তাঁর মতে, মা লক্ষ্মী ঠিক তার মেয়ের মতো চঞ্চলা, এক জায়গায় থাকেন না। সুন্দর করে পরিচ্ছন্নভাবে নিজেকে সাজিয়ে রাখলে মা এসে নিজেই স্থান করে নেন ভক্তের হৃদয়ে। সব মিলিয়ে, উৎসব হোক বা আরাধনা, তার রীতিনীতি যেমনই হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত নিজের বিশ্বাস আর আন্তরিকতাই আসল।

আরও পড়ুনঃ “কৃষভি সুন্দরী মহিলাদের খুব ভালোবাসে, সুন্দরীদের দেখলে খুশি হয়!”— বেফাঁস মন্তব্যে বিপাকে শ্রীময়ী! “কাঞ্চনের বাইরের রূপ-ই শুধু পায়নি কৃষভি, আত্মাও বাপের মতো!” “ভুল করে স্বামীর গুণটা গেয়ে দিলো শ্রীময়ী!”— ক’টাক্ষ’বিদ্ধ অভিনেত্রী!

নিয়ম মেনে চলা যেমন জরুরি, তেমনি নিজের প্রয়োজন বুঝে চলাটাও সমান দরকারি। কনীনিকার মতো মানুষেরা যখন এই কথা বলেন, তখন সেটা শুধুই একজন তারকার মত নয়, বরং একজন সাধারণ মানুষের মানবিক অভিজ্ঞতা থেকেই উঠে আসে। মা লক্ষ্মীর পুজো তাই শুধু প্রথা নয়, এক মানবিক উপলব্ধি -ভালো থাকার, ভালোবাসার, এবং নিজের যত্ন নেওয়ার। এই বিষয়ে আপনাদের কী মতামত? জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!