Judhajit in Guddi: “অপমানিত করে বার করে দেয় ঘাড় ধাক্কা দিতেই বাকি রেখেছিল, চোখে জল এসে গেছিল”! সফল কেরিয়ারের পেছনে থাকা স্ট্রাগল প্রকাশ্যে আনলেন অভিনেতা দেবোত্তম

বাংলা টেলিভিশনের চেনা মুখ অভিনেতা দেবোত্তম মজুমদার। সিরিয়ালপ্রেমি দর্শকদের অত্যন্ত পছন্দের একজন অভিনেতা হলেন তিনি। বর্তমানে তাঁকে দু’দুটি সিরিয়ালে দর্শক দেখতে পাচ্ছে। একদিকে তিনি অভিনয় করছেন ‘সোহাগ চাঁদ’ সিরিয়ালে নায়ক চাঁদের দাদা সূর্যের চরিত্রে, অন্যদিকে লীনা গাঙ্গুলীর লেখা স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘গুড্ডি’ তে নতুন নায়ক যুধাজিৎ-এর চরিত্রে। তাঁর অভিনয় দর্শকদের কাছে বরাবরই খুব প্রিয় ছিল। থিয়েটার থেকে উঠে আসা দেবোত্তম একজন ভালো মানের অভিনেতা। প্রায় ১৪ বছর তিনি এই ইন্ড্রাস্ট্রিতে আছেন। ইটিভি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ দিয়ে প্রথম অভিনয়ের হাতেখড়ি হয়েছিল স্নেহাশীষ চক্রবর্তীর।

এরপর তাঁর একের পর এক ধারাবাহিকে কাজ শুরু। আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। তবে অনস্ক্রিনে আমরা যেভাবে এদেরকে পাই তাঁদের জীবনটা কিন্তু সেরম নয়। জীবনের সমস্তকিছু ভুলে তাঁরা চরিত্রে ঢুকে আমাদের কাছে আরেক রূপ প্রতিষ্ঠা করে। আর তার জন্যই হয়তো এনারা স্পেশাল। তবে তাঁদের আজ যে সম্মানের জায়গা দেওয়া হয় সেই জায়গাটিতে আসার জন্য যে স্ট্রাগেল তাঁদের করতে হয় তা সত্যি অভাবনীয়। দীর্ঘদিনের অভিনয় জীবনে দেবোত্তমের নিজের অভিনীত সবচেয়ে প্রিয় ধারাবাহিক হল ‘কেয়া পাতার নৌকা’। লীনা গাঙ্গুলির লেখা এই ধারাবাহিকে অভিনয় করার পর রাতারাতি জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছিলেন অভিনেতা।

দেশভাগের মত একটা সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে অভিনয় করতে নিজেও খুব উপভোগ করেছিলেন অভিনেতা। তবে এই ভালো সময়ের পেছনে পুরনো দিনের যে স্ট্রাগল লুকিয়ে রয়েছে তার কথা তিনি নিজেই এবার শেয়ার করলেন দর্শকদের কাছে। সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে সেখানে তিনি নিজের স্ট্রাগল লাইফের অজানা কথা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, আপাতত মেয়ে এবং পরিবারের সদস্যদের নিয়েই বেশিরভাগ সময়টা কাটাতে ভালোবাসেন তিনি। একটা সময় তিনি টানা ৩ বছর মেডিকেল রিপ্রেজেন্টিভের কাজ করতেন। আর সে সময় একবার এনটিওয়ানন স্টুডিওতে কোন একজন অভিনেতার সাথে তিনি দেখা করতে গিয়েছিলেন।

যেহেতু থিয়েটার করতে ভালোবাসতেন তিনি তাই তিনি ভেবেছিলেন সেসময় চাকরি নয় তিনি শুধু অভিনয় করতে চান। যা ভাবা তাই কাজ। একদিন সকালে হঠাৎ করেই চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। প্রথম দিকে বাড়িতে বাবা-মা দুশ্চিন্তা করলেও অভিনয় জীবনের শুরুতে স্ট্রাগল লাইফে দেবোত্তম সর্বদা পাশে পেয়েছিলেন তার তৎকালীন প্রেমিকা আর বর্তমানের স্ত্রী। সেসময় একদিন এনটিওয়ানন স্টুডিওতে যেতে সেখানকার অফিসের একজন তাকে ঢুকতে তো দেয়নি বরং চরম অপমান করেছিল বলে জানালেন অভিনেতা।

অভিনেতার কথায় শুধু ঘাড় ধরে ধাক্কা দিতেই বাকি রেখেছিলেন। সেদিন ওই ব্যক্তির ব্যবহারে ভেঙে পড়েছিলেন অভিনেতা। চোখে জল এসে গিয়েছিল তাঁর। তবে সেদিনের জন্যই এক নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে ইন্ড্রাস্ট্রিতে নামা তাই অন ক্যামেরায় এদিন তাকেই ধন্যবাদ জানায় দেবোত্তম আর বলেন, “সেদিনের ওই ব্যবহারটার জন্যই আজ আমি জীবনে অনেক কিছু পেয়েছি। যে কোন শিল্পীর জন্যই সাফল্য লাভের আগে জীবনে ধাক্কা খাওয়া অপমানিত হওয়া ভীষণ জরুরী”।