এই মুহূর্তে বাংলা টেলিভিশনের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা হলেন সপ্তর্ষি মৌলিক। সম্প্রতি তাকে এক্কাদোক্কা ধারাবাহিক মুখ্য চরিত্রে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এর আগে তার টেলিভিশন জগতে পা রাখা স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক শ্রীময়ী থেকে। সেখানেই টেলিভিশন প্রেমি দর্শকের মন জয় করেছিলেন অভিনেতা। তবে এর আগে থেকেই তিনি একজন দক্ষ অভিনেতা নাটকের মঞ্চে।
নাটকের হাত ধরেই তিনি অভিনয় জীবনে পা রাখেন। নান্দীকার নাট্য একাডেমিতে তার অভিনীত বহু নাটক দেখেছে দর্শক। প্রসঙ্গত তার স্ত্রী সোহিনী সেনগুপ্তর সঙ্গে তার পরিচয় সেই নাটকের মঞ্চেই। সম্প্রতি নিজের নাটক নিয়েই বেশ কিছু কথা বললেন এক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের কাছে।
প্রসঙ্গত পড়াশোনায় তেমন ভালো ছিলেন না সপ্তর্ষি। অভিনয় করার ইচ্ছা নিয়ে এসে পড়েছিলেন নান্দীকারে। তখন ২০১২ সাল। আন্তর্জাতিক থিয়েটার দূরে থাক, দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও যে বিপুল নাট্যসম্ভার, সে সবের ধারে কাছে পৌঁছাননি উত্তরপাড়ার সপ্তর্ষি। বাবা-মায়ের সঙ্গে কলকাতায় এসে মাঝেমাঝে নাটক দেখেছিলেন ঠিকই, কিন্তু সে ভাবে মনে ধরেনি। নান্দীকার কর্মশালায় যোগ দেওয়ার পর প্রথম চমকটি পেলেন সে বারের নাট্য উৎসবে।
এত রকমের নাটক হয় দেশে? তা তিনি জানতে নি না। ডিসেম্বরের ১৬ থেকে ২৫ দশদিন ধরে উৎসব হতো তখন। বাংলা থিয়েটারের দুর্গোৎসবের মতো নান্দীকার নাট্যোৎসব। সপ্তর্ষি প্রথমেই যেটির উপর বিস্ময় হয়েছিলেন সেটি হল সংস্কৃতি থেকে উঠে আসা আলাদা আলাদা নাটক দেশে রয়েছে। এত ধরনের বাচনভঙ্গি আগে জানতেন না তিনি
ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন সংস্কৃতি থেকে নাটকের গল্প গুলো উঠে আসে। তোদের ভাষা তো আলাদা হবেই। সাবটাইটেল ব্যবহার করে পর্দায় সিনেমা দেখে নেয়া যায় কিন্তু নাটক তো সেভাবে দেখার উপায় নেই! প্রথম মনে করতেন বুঝতেই পারবেন না মাঝ পথে হয়তো উঠে যেতে হবে। কিন্তু আস্তে আস্তে সপ্তর্ষি বোঝেন, ভাষা আসলে কোন বাধাই নয়। কখন যে নাটকের ভিতর ঢুকে গিয়েছিলেন তিনি টেরই পান নি শেষ হওয়ার পর বুঝতে পেরেছেন।
তিনি এদিন বললেন, ‘‘প্রথম কথা শীতকাল। তার উপর বাড়িতে দশ দিন ধরে একটা মেলা হচ্ছে এত বড়! শুধু এতেই আমি খুব আনন্দে। থিয়েটারে তখনও উৎসাহ নেই। বুঝতে না পারলে উঠে চলে যাব, এই মন নিয়েই বসেছিলাম। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে ভিতরে ঢুকে পড়েছি। এনএসডির নাটক বা রতন থিয়ামের প্রযোজনার পাশাপাশি ছত্তীসগঢ়ের নাট্যদল। অসাধারণ সব নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে, আমার দারুণ লাগতে শুরু করল।’’
তাঁর কথায়, “আমি খুব লোভী! অন্যের নাটক দেখতে দেখতে হিংসে হতে শুরু করল, আমি কবে করব? অনুশীলন শুরু হল সেই থেকে। আস্তে আস্তে নিজেকে মঞ্চে দেখতে পেলাম। ছোট চরিত্র থেকে বড় চরিত্র হয়ে নির্দেশনায়। একবারে হয়নি। ২০১৩ সালে একটা প্রযোজনায়, ২০১৪ তে দুটো… এই করতে করতে হয়ে গেল।’’