যার ছত্রছায়ায় বড় হয়েছে বুবলাই, আজ তাকেই অপমান! ‘নতুন কাকু’র প্রতি এমন ব্যবহার দেখে ক্ষুব্ধ দর্শক! ‘মেরুদন্ডহীন ছেলে একটা’ ‘চিরসখা’য় স্বতন্ত্রর অপমান দেখে বলছেন দর্শক!

স্টার জলসার নতুন ধারাবাহিক ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) যেন শুধুই গল্প নয়, বরং বাস্তব জীবনের এক নিঃশব্দ প্রতিবিম্ব। এখানে একদিকে যেমন দেখা যাচ্ছে সামাজিক সম্পর্কের গভীরতা, অন্যদিকে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠছে আধুনিক প্রজন্মের মূল্যবোধের অবক্ষয়। ধারাবাহিকের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা চরিত্র বুবলাই যেন সেই বাস্তবতাকেই তুলে ধরছে, যেখানে কৃতজ্ঞতা, সম্মান—এই শব্দগুলো শুধু বইয়ের পাতাতেই সীমাবদ্ধ। যে মানুষটা ছোটবেলা থেকে তাঁর বাবার অভাব পূরণ করে এসেছে, আজ তাকেই অপমান করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই বুবলাইয়ের চোখে!

একটা সম্পর্কের নাম না থাকলেই কি তার কোনও অস্তিত্ব থাকে না? স্বতন্ত্রর চরিত্রটা যেন এই প্রশ্নের এক জীবন্ত উত্তর। তিনি কখনও নিজের অস্তিত্ব জাহির করেননি, বরং নীরবে-নিভৃতে এক বিধবার পাশে দাঁড়িয়েছেন, সন্তানদের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, একজন প্রকৃত পরিবারের কর্তার মতোই ছায়াসঙ্গী হয়ে থেকেছেন। অথচ, আজ সেই মানুষটিকেই অবজ্ঞার চোখে দেখা হচ্ছে শুধুমাত্র সমাজের তথাকথিত সম্পর্কের সংজ্ঞায় তিনি ‘কিছুই’ নন বলে?

Chirosokha, Tollywood, Star Jalsha, serial, Leena Gangopadhyay, entertainment, Bengali serial, চিরসখা,টলিউড, অভিনেতা, অভিনেত্রী, স্টার জলসা, সিরিয়াল, বাংলা ধারাবাহিক, লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, বিনোদন,

বর্ষার চরিত্র যেমন সন্দেহ আর বিষোদ্গারে ভরা, তেমনই তার প্রভাবে বুবলাইয়ের চরিত্রে এসেছে বেপরোয়া অবিবেচনা। বাবার ছায়া হয়ে বড় হওয়া একজন মানুষকে যখন ‘নতুন কাকু’ বলে ডাকা হত, তখন যে শ্রদ্ধার সুর ছিল, তা কি আজ শুধুই অন্ধ গুজব আর অবিশ্বাসে ঢাকা পড়ে যাবে? এমন সংবেদনশীল গল্পের পটভূমিতে দর্শকদের মনে প্রশ্ন জাগে—সংসার কি শুধুই রক্তের সম্পর্ক দিয়ে চলে, না কি নিঃস্বার্থ ভালোবাসায়ও একটি পরিবার গড়ে ওঠে?

কমলীনি যখন চোখের জলে লজ্জা আর ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ করেন, তখন দর্শকদের বুকের গভীরে একটা চেপে থাকা কষ্ট যেন কেঁপে ওঠে। স্বতন্ত্র যখন বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়, সেই মুহূর্তে তার ভেতরের অপমান আর অভিমানের গভীরতা স্পষ্ট হয়। তবে সবচেয়ে ব্যথার ব্যাপার হল—এই অপমানের যোগ্যতা কি সত্যিই স্বতন্ত্র অর্জন করেছে? নাকি আমরা সবাই মিলে এমন এক সমাজ গড়ে তুলেছি, যেখানে সম্পর্কের পরিচয় না থাকলে তার মূল্যও থাকে না?

আরও পড়ুনঃ “এই হোমো আবার সিরিয়াল করবে? আর কি যে দেখবো!”— সিরিয়াল ডেবিউয়ের আগেই দর্শকদের একাংশের কটাক্ষের মুখে অনন্যার বর সুকান্ত!

লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখনীতে এই ধারাবাহিক নিছক বিনোদনের জন্য নয়, বরং দর্শকদের ভাবনার খোরাক জোগায়। আপনি কী ভাবছেন? বুবলাইয়ের এই ব্যবহার কি গ্রহণযোগ্য? স্বতন্ত্রের মতো মানুষের জন্য কি সত্যিই সমাজে কোনো স্থান নেই? কমেন্টে আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না—এমন চরিত্রেরা সত্যিই বাস্তব জীবনের অদৃশ্য নায়ক, যাদের প্রাপ্য সম্মান বহু ক্ষেত্রেই অধরাই থেকে যায়।