স্টার জলসার ‘চিরসখা’র (Chiroshokha) সাম্প্রতিক ঘটনায় নতুনকে ঘিরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে রয়েছেন স্বয়ং লক্ষ্মীমণি দেবী! বর্ষার সাজানো নাটক শুনে তিনি যেভাবে অন্ধ বিশ্বাসে নতুনকে অপরাধী বানিয়ে ফেললেন, তা শুধু অবিবেচনার উদাহরণই নয় বরং তাঁর দীর্ঘদিনের পক্ষপাতদুষ্ট মানসিকতারই ন’গ্ন প্রকাশ! যাকে নিজের ছেলের মৃ’ত্যুর পর আশ্রয়দাতা হিসেবে দেখেছিলেন, আজ সেই মানুষটাকেই মুহূর্তে চরি’ত্রহীন বলে দিতে তাঁর একটুও দ্বিধা থাকল না!
বর্ষার অভিযোগ শুনে লক্ষ্মীমণির প্রথম যুক্তি, নতুন নাকি এত বছর ধরে কমলিনীর দিকে লো’ভী চোখে তাকিয়েছে। তাই বর্ষার প্রতিও তার কু-নজর থাকতেই পারে! এই যুক্তি যতটা হাস্যকর, তার চেয়েও বেশি অমানবিক। কমলিনী নতুনের কাছে পরস্ত্রী ছিল, তাই তাকে ইচ্ছা করেই সে আকৃষ্ট হয়েছে- এমন ধারণা যে এক মহিলা হয়ে অন্য মহিলার কাছ থেকে বেরোচ্ছে, যাকে নতুন বহু বছর ওপর মাথায় ছাদ দিয়ে রেখেছিল, সেটা সত্যিই অবাক করার মতো! যেন বর্ষার কথা শুনেই হঠাৎ তিনি উপলব্ধি করলেন যে নতুনের সব নিষ্ঠা, ত্যাগ, যত্ন– সবই আসলে নাকি পর্দার আড়ালের প্রলো’ভন!
এখানে যেই বিষয়টা সবচেয়ে বেদনাদায়ক, তা হলো লক্ষ্মীমণির স্মৃতি ঠিকই আছে, তবে শুধু সেই অংশটাই যেখানে তিনি নিজেকে দুঃখী আর অসহায় হিসেবে দেখতে ভালোবাসেন! আরও আক্ষেপের বিষয় যে, তিনি ভুলে থাকেন নতুনের সেই অক্লান্ত লড়াইয়ের কথা। যখন চন্দ্র বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর তিনি, কমলিনী এবং তিন নাতি-নাতনীরা সত্যিই রাস্তায় বসার মতো অবস্থায় ছিলেন। তখন নতুন কোনও সম্পর্কের প্রত্যাশা করেনি, কোনও প্রতিদান চায়নি শুধু মানবিকতার টানে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। কারও সম্পর্কে এত বছরের উপলব্ধি কি সত্যিই এক মুহূর্তে মুছে যেতে পারে?
লক্ষ্মীমণির আচরণ যেন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তাঁর বিচারবোধ পরিস্থিতির ওপর নয়, আবেগ আর রাগের ওপর চলে! বর্ষার একটু কান্না, ব্লাউজ ছিঁড়ে নাটক করা আর ‘বাঁচাও’ চিৎকার, এতেই তাঁর মনে নতুনের বিরুদ্ধে পাহাড়সম সন্দেহ জন্মাতে সময় লাগেনি। তিনি যেন চাইছেন নতুনকে উদ্দেশ্যহীন অপরাধী বানাতে আর সেই সুযোগ পেতেই বর্ষার মিথ্যে গল্পে আঁকড়ে ধরেছেন। এদিকে লক্ষ্মীমণির দীর্ঘদিনের আড়ষ্ট, অবিশ্বাসী মানসিকতা এবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। গত কয়েক পর্বে লক্ষ্মীমণির কথাবার্তা যেন মানসিক সংকীর্ণতার পরিচয় দিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ “‘রাশি’-র ‘অপলা রায়’কে রাস্তায় দেখলেই মারতে ছুটত মানুষ!” তুমুল জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও এখন কেন পর্দা থেকে উধাও ডলি বসু? ‘শ্বশুর জ্যোতি বসু কেমন ছিলেন?’—প্রশ্ন উঠতেই কেন চুপ অভিনেত্রী? তবে কি ব্যক্তিগত জীবনে সম্পর্কটা মোটেই সুখকর ছিল না?
মায়ের আসনে বসানো সেই মহিলার যুক্তি, শুধু নতুনকে নয় বরং দর্শকদেরও হতবাক করেছে। যে মানুষটি বছর ধরে তাঁর নাতি-নাতনিদের প্রায় নিজের সন্তানের মতো বড় করেছেন, নিজের মা মনে করে অপদে বিপদে পাশে থেকেছেন, সোনার গয়না বানিয়ে দিয়েছে- তার প্রতি এত অনাস্থা, এত তাড়াতাড়ি রায় দেওয়াটা কেবল ভুল বোঝাবুঝি নয়, অকৃতজ্ঞতার প্রকাশ! আর এই অকৃতজ্ঞতার বোঝা নতুনকে যতটা দুঃখ দিয়েছে, তার চেয়েও বেশি মানুষকে ভাবিয়েছে কে সত্যিই মূল্য দেওয়ার যোগ্য, আর কে শুধু সুবিধামতো বিশ্বাসঘাতকতাকে ‘বিচার’ বলে চালিয়ে দেয়।






