বাংলা টেলিভিশনের পর্দায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে ‘রাজরাজেশ্বরী রাণী ভবানী’ (RajRajeshwari Rani Bhabani)। সম্প্রতি শুরু হওয়া এই ধারাবাহিকে ‘রাজনন্দিনী পাল’কে (Rajnandini Paul) একেবারে রাজকীয় রূপে দেখা যাচ্ছে। মাথায় মুকুট, গলায় ভারী হার, কপালে বড় টিপ আর ঐতিহ্যবাহী বেনারসি শাড়িতে তাঁর উপস্থিতি দর্শকদের চোখে ধরা দিয়েছে একেবারে রাজরানির মতো। ৭ জুলাই থেকে ধারাবাহিকের সম্প্রচার শুরু হলেও অল্পদিনের মধ্যেই এটি দর্শকমনে জায়গা করে নিতে শুরু করেছে।
আধ্যাত্মিক ও পৌরাণিক কাহিনি সবসময়ই আলাদা আবেদন রাখে, আর এটিও তার ব্যতিক্রম নয়। টিআরপি তালিকাতেও ইতিমধ্যে এটি নিজের শক্ত উপস্থিতি জানান দিতে শুরু করেছে। তবে প্রশংসার পাশাপাশি এসেছে সমালোচনাও। দর্শকদের একাংশ মনে করছেন, রাজনন্দিনী যতই নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করুন না কেন, তাঁর অভিব্যক্তিতে রানী ভবানীর তেজ যথেষ্ট ফুটে ওঠেনি। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, নাটকীয় দৃশ্যে সেই দৃঢ়তা তাঁকে দিয়ে পুরোপুরি প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।
দর্শক মহলে এমনও মত উঠেছে, স্বীকৃতি মজুমদার, যিনি বর্তমানে সিরিয়ালে পুঁটির চরিত্র করছেন, তাঁর চোখের ভাষা ও তেজ অনেক বেশি শক্তিশালী। তাই অনেকেই মনে করছেন, ভবানীর চরিত্রে তাঁকেই মানাত বেশি। অন্যদিকে, তুলনায় টেনে আনা হচ্ছে সোনামনি সাহাকেও। সামাজিক মাধ্যমে কেউ কেউ দাবি করছেন, রানী ভবানীর মতো শক্তিশালী চরিত্রে তাঁরা সোনামনি বা স্বীকৃতিই বেশি উপযুক্ত। তাঁদের মতে, এই দুই অভিনেত্রীর অভিব্যক্তি,
অভিনয়ের গভীরতা এবং চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা অনেক বেশি প্রখর। কেউ কেউ এমনও লিখেছেন, স্বীকৃতি যখন ‘খেলাঘর’ ধারাবাহিকে অভিনয় করেছিলেন, তখনও তিনি ছিলেন নতুন মুখ। কিন্তু সেখানেও তিনি দারুণ অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মন জয় করেছিলেন। তাই ভবানীর মতো চরিত্র তাঁর হাতে পড়লে তা আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠত। কিছু দর্শকের ক্ষোভও স্পষ্ট। তাঁদের মতে, ভবানীর মতো মুখ্যচরিত্র যখন সঠিক মানসিকতা ও অভিব্যক্তিতে ধরা দিচ্ছে না।
এর ফলে পুরো ধারাবাহিকের আবেদনই কমে যাচ্ছে। কেউ কেউ হতাশ হয়ে বলছেন, নায়িকার চেহারা বা অভিব্যক্তি তাঁদের কাছে বয়স্ক লাগছে, ফলে সিরিয়ালটির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। আবার এও শোনা যাচ্ছে, যদি ভবানীর চরিত্র স্বীকৃতিকে দেওয়া হতো তবে সিরিয়ালটি অনেক বেশি প্রাণবন্ত হয়ে উঠত এবং দর্শকের সংখ্যা হুহু করে বাড়ত। তবুও, বিতর্ক সত্ত্বেও অল্পদিনের মধ্যেই এই ধারাবাহিক দর্শক টানতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুনঃ “আমি ইতিহাসবিদ নই, চরিত্র আকর্ষণীয় ছিল তাই করেছি!” “আমি কিছু জানি না, অযথা বিতর্কে জড়াবেন না!”— ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’ বিতর্কে পিঠ বাঁচাতে ব্যস্ত শাশ্বত! অনুসন্ধান না করেই সংবেদনশীল ছবির চরিত্রে হ্যাঁ, বিতর্ক বাড়তেই দায় এড়ালেন অভিনেতা!
ভক্তরা যদিও বিভক্ত, তবুও এই আধ্যাত্মিক কাহিনি ঘিরে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে কৌতূহল। রাজনন্দিনী পাল নতুন হলেও, তাঁর প্রচেষ্টা প্রশংসিত হচ্ছে একটি বড় অংশের কাছে। শেষ পর্যন্ত এই তর্ক-বিতর্কই প্রমাণ করে, ‘রাজরাজেশ্বরী রাণী ভবানী’ ইতিমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রে জায়গা করে নিয়েছে। এখন দেখার, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজনন্দিনী কতটা নিজের চরিত্রের সঙ্গে মিশে গিয়ে দর্শকদের মন জয় করতে পারেন।