“একটা বাচ্চা মেয়েকে টার্গেট করা হচ্ছে! ভিক্টোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, তাই দায়?” ভিক্টো-কাণ্ডে ভাগ্নিকে নিয়ে ট্রোলিংয়ে ক্ষুব্ধ রাজ চক্রবর্তী!

সান বাংলার কার্যনির্বাহী পরিচালক শ্রিয়া বসু, অভিনেত্রী ঋ (Rii) এবং পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ভিক্টো (Vikto) কে ঘিরে ঠাকুরপুকুরের দুর্ঘটনার (Thakurpukur Accident) পর টলিপাড়ায় তোলপাড় অব্যাহত। দুর্ঘটনার পর ভিক্টো পুলিশের হেফাজতে থাকলেও বিতর্ক থামেনি। এবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এল পরিচালক ‘রাজ চক্রবর্তী’র (Raj Chakrabarty) পরিবার। বিশেষত তাঁর ভাগ্নির সঙ্গে ভিক্টোর পুরনো সম্পর্ককে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। যদিও ওই তরুণী দুর্ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন, তবুও এক ছবিকে ঘিরে শুরু হয়েছে কুৎসিত ট্রোলিং, চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন রাজ চক্রবর্তী নিজেই। সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলে তিনি জানিয়েছেন, ভিক্টোর কাজ অপরাধ এবং তার শাস্তি হওয়া উচিত—এই বিষয়ে কোনও দ্বিমত নেই। কিন্তু ব্যক্তিগত সম্পর্কের অজুহাতে একটি তরুণীকে অহেতুক টেনে এনে যেভাবে রাজনৈতিক রঙ চড়ানো হচ্ছে, তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। রাজের স্পষ্ট প্রশ্ন—প্রেমে পড়া কি অপরাধ? কোনও তরুণী যদি সম্পর্কের মধ্যেই থাকে,

তার কি মানেই যে সে তার সঙ্গীর ভবিষ্যৎ অপরাধ সম্পর্কে জানবে? রাজ চক্রবর্তী স্পষ্ট জানিয়েছেন, বহুদিন ধরেই ভিক্টোকে তিনি চেনেন, এমনকি তাঁর প্রযোজিত ধারাবাহিক ‘গোধূলি আলাপ’-এর পরিচালনার দায়িত্বেও ছিলেন ভিক্টো। তবে সেই পরিচয় কখনও বন্ধুত্বের জায়গা নেয়নি। তাই এই ভয়ঙ্কর ঘটনার পর তিনি নিজেও স্তম্ভিত। রাজের স্পষ্ট ভাষায়, “চিনতাম মানেই যে ওর অপরাধে আমি দায়ী—এই যুক্তি কোথাও গ্রহণযোগ্য নয়।

ও যে এমন জঘন্য কাজ করতে পারে, ভাবতেই পারছি না।” তবে তাঁকে আরও বেশি ক্ষুব্ধ করেছে ভাগ্নিকে ঘিরে চলা কুৎসা ও জল্পনা। মাত্র ২১ বছরের এক তরুণী, যে জীবনের অনেক কিছু শেখার পথে, তাকেই এখন সামাজিক ট্রোলিংয়ের মুখে পড়তে হচ্ছে। রাজের প্রশ্ন, “একটা ছোটো মেয়েকে নিয়ে যারা এভাবে ছবি ছড়িয়ে মিথ্যে তথ্য দিচ্ছেন, তাঁদের কি একটুও সহানুভূতি নেই?”
তিনি আরও জানান, ভিক্টোর সঙ্গে তাঁর ভাগ্নির একসময় সম্পর্ক ছিল।

কিন্তু তাতে তাঁর ভাগ্নি ভিক্টোর অপরাধের দায় নেবেন কেন? “ভালবাসা তো অপরাধ নয়। রাজ আরও বলেন, “একটা বাচ্চা মেয়েকে নিয়ে যেভাবে মিথ্যে প্রচার চালানো হচ্ছে, সেটা দেখে অবাক লাগছে। কেউ একবারও ভাবছেন না তার মানসিক অবস্থার কথা। সংবাদমাধ্যমে ছবি তুলে, ভুল তথ্য ছড়িয়ে একজন তরুণীর জীবনে প্রভাব ফেলা কি সাংবাদিকতার নাম?” রাজের কথায় স্পষ্ট ক্ষোভ। তিনি বলেন, “একজন অপরাধ করলে তার শাস্তি তাকেই হোক,

কিন্তু তার সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিকে দোষী করার অধিকার কারও নেই।” এদিকে এই ঘটনার সূত্র ধরে আরও একবার সামনে এসেছে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির অন্ধকার দিক। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো, একাধিক প্রাণ বিপন্ন করে নির্দ্বিধায় পার্টি করে বেড়ানো এবং তারপরে দায় এড়ানোর চেষ্টা—এই সমস্ত কিছুই দর্শকের কাছে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে টলিউডের শৃঙ্খলা ও মূল্যবোধ নিয়ে। যদিও এই ঘটনার শাস্তি কীভাবে হয় তা সময় বলবে।

আরও পড়ুনঃ সাংবাদিকতা না প্রতিশোধ? টানাপোড়েনে জর্জরিত এক সাহসিনী—জলসার পর্দায় আসছে ‘বুলেট সরোজিনী’! থাকছেন শ্রীময়ীও! শেষ হচ্ছে কোন জনপ্রিয় ধারাবাহিক?

তবে আপাতত রাজ চক্রবর্তীর স্পষ্ট বার্তা—”ভিক্টোর কাজের জন্য কেউ তাকে ছাড় দিচ্ছে না, কিন্তু আমার পরিবারের মেয়েকে নিয়ে এই রাজনীতি বন্ধ হোক।” এই ঘটনার পর অনেকেই বলছেন, দুর্ঘটনার শিকার কেবল রাস্তার পথচারী নন, সামাজিক স্তরেও এই কাণ্ডে জর্জরিত হল এক তরুণীর সম্মান। তাঁকে অপরাধীর প্রেমিকা বলেই কি গণআলোচনার খোরাক হতে হবে? এমন প্রশ্নের মুখোমুখি আজকের টলিপাড়া, এবং এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন সমাজও।