প্রা’ণনা’শের হুমকি! ৯ ঘণ্টা স্টেশনে, নিউমোনিয়ায় অসুস্থ ডলি বসু! সেই রাত হতে পারত জীবনের শেষ রাত, ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানালেন প্রবীণ অভিনেত্রী!

এক সময় বাংলার টেলিভিশন পর্দায় যাঁর উপস্থিতি মানেই ছিল নিখুঁত অভিনয়, তিনি ‘ডলি বসু’ (Dolly Basu)। ছোটপর্দা থেকে বড়পর্দা— তাঁর অভিনয়ের পরিসর ছিল সর্বত্র। জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক রাশি (Rashi) -তে তাঁর অভিনয় আজও দর্শকের মনে গেঁথে আছে। এই ধারাবাহিকের মাধ্যমেই বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছিলেন ডলি, হয়ে উঠেছিলেন ঘরের সদস্যের মতো। কিন্তু শুধু অভিনেত্রী হিসেবে নন, আরও একটি পরিচয়ে বহুজন তাঁকে চেনেন— তিনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ‘জ্যোতি বসু’ (Jyoti Basu) র পুত্রবধূ। রাজনৈতিক পরিবারে থেকেও অভিনয়কে নিজের জীবন বানিয়ে তুলেছিলেন ডলি।

তিনি শুধু অভিনয় নয়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও নিয়মিত যেতেন তিনি। বিভিন্ন জেলা, এমনকি দেশের বাইরেও অভিনয় ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার ডাক পেতেন। তবে সেই সফরের মধ্যে একবার এমন এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন, যা তাঁর মনে পড়লে আজও কেঁপে ওঠেন তিনি। সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে জি বাংলার জনপ্রিয় শো অপুর সংসার-এ এসে ডলি সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা সবাইকে শুনিয়েছিলেন।

ঘটনাটি ঘটেছিল অসমের বারপেটা জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামে। একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়েছিলেন তিনি ও তাঁর দল। সেই গ্রামে যাওয়ার কিছুদিন আগেই বড় রকমের অশান্তি হয়েছিল। তার মধ্যেই তাঁদের রাখা হয় একটি খড়ে ছাওয়া ঘরে, যেটি আদৌ নিরাপদ ছিল না। নিরাপত্তার অভাব বুঝেই অনেকেই ফিরে এসেছিলেন সেই রাতেই, কিন্তু ডলি ও আর কয়েকজন থেকে গিয়েছিলেন।

পরদিন সকালে জানা যায়, তাঁদের দলের দুই সদস্যকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে। শর্ত ছিল, যতক্ষণ না অনুষ্ঠান শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ তারা কাউকে ছাড়বে না। এই চাপ ও আতঙ্কের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হয় তাঁদের। গভীর রাতে, প্রায় রাত দুটোয় তাঁরা স্টেশনে ফেরেন এবং সেখানেই প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে ভেঙে পড়েন।

আরও পড়ুনঃ অভিনয় ছেড়ে ক‍্যাফে ব্যবসা, মাথায় কোটি টাকার দেনা, ম’রে যাওয়ার কথা বলত মেয়ে! কঠিন জীবন কাটিয়েছেন অভিনেত্রী স্বরলিপি চট্টোপাধ্যায়!

অবশেষে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে। আজও সেই রাত তাঁর জীবনে স্মৃতি হয়ে রয়ে গেছে। সেই মুহূর্তের কথা ভাবলেই শিউরে ওঠেন ডলি। এক সময় যা হতে পারত তাঁর জীবনের শেষ রাত, তা আজ শুধুই এক রোমহর্ষক অভিজ্ঞতা। তবে এই ঘটনাই তাঁকে আরও শক্ত করে তুলেছে, শেখিয়েছে কী ভাবে প্রতিকূলতাকে পেরিয়ে এগিয়ে যেতে হয়। আজ তিনি সুস্থ, এবং তাড়াতাড়ি পর্দায় ফিরবেন আশা করা যায়।