“চুরি করে চাকরি পাওয়া মূর্তিমানদের মাইনাতে মন্দির-মসজিদ হোক, আমার ট্যাক্সে নয়!’— দিঘায় জগন্নাথ বিঁধলেন ঋত্বিক!

সেকুলারিজমের বিতর্কের পর নতুন করে আবারও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে অভিনেতা ‘ঋত্বিক চক্রবর্তী’ (Ritwick Chakraborty)। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের (Digha Jagannath Temple Inauguration) পর সমাজ মাধ্যমে একটি আবারও একটি তীক্ষ্ণ পোস্ট করেন তিনি। যেখানে স্পষ্ট ভাষায় তিনি লিখেছেন, জনগণের ট্যাক্সের অর্থ যদি মূর্তি, মন্দির, মসজিদ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়, তাহলে তাঁর তাতে প্রবল আপত্তি আছে।

ঋত্বিকের মতে, “সেই অর্থে হোক না কোনও রাজনৈতিক মূর্তি বা ধর্মীয় স্থাপত্য, আমার কাছে এমন খরচে অর্থহীন।” তিনি এদিন পোস্টে মনে করিয়ে দেন, ট্যাক্স শুধু মধ্যবিত্তরাই নয়, সমাজের প্রান্তিক মানুষরাও দিয়ে থাকেন, তাই তার যথাযথ ব্যবহারে প্রশ্ন তোলা একান্ত স্বাভাবিক। ঋত্বিকের সেই পোস্টে যেন একের পর এক তীর ছুঁড়েছেন তিনি। যেগুলোর মাধ্যমে তিনি বিঁধেছেন দেশের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ব্যবস্থাকে।

“মূর্তিমান” শব্দটিকে ব্যঙ্গাত্মক ভাবে ব্যবহার করে অভিনেতা বলেছেন, যারা চুরি করে বা ক্ষমতার অপব্যবহারে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, তাঁদের জনগণের কষ্টের অর্থ এমন বেমালুমভাবে খরচ করা অনুচিত। পাশাপাশি তিনি মন্তব্য করেন, ট্যাক্স প্রদানকারীদের মধ্যে শুধু নামী প্রতিষ্ঠানের করদাতা নন, বরং সেই তালিকায় রয়েছেন আইটি সেলের সেই সব ভাইরা যারা হয়তো নিজেরাও সিস্টেমের হাতে নিরুপায়।

এই পোস্টটি ঘিরে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। অনেকেই ঋত্বিকের এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, “জনগণের ট্যাক্সের অর্থে নির্মিত স্থাপত্য ও মূর্তি তো জনগণেরই জন্য, তাহলে আপত্তি কথায়?” কেউ আবার ঋত্বিকে সরাসরি জানতে চেয়েছেন, “এই অপব্যবহারের প্রতিবাদে কি আইনতভাবে কোনও কর না দেওয়ার ব্যবস্থা নেই?” এমনকি কেউ কেউ এগিয়ে এসে বলেন, “যারা কোনওদিন কর দেয়নি, তারাই বেশি উৎসাহ নিয়ে এইসব স্থাপত্যের পেছনে গলা ফাটায়।”

তবে ঋত্বিকের বক্তব্যে দ্বিমতও দেখা গিয়েছে প্রতিবারের মতন। একাংশ মনে করেছেন, অনেক ধর্মীয় স্থান বা ঐতিহাসিক মূর্তি পর্যটনের বড় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে, যার মাধ্যমে প্রচুর মানুষের জীবিকা নির্বাহ হয়। সেই হিসেবে এগুলোতে অর্থ খরচ পুরোপুরি অনর্থক নয়। ফলে, মতবিভেদ থাকলেও, ঋত্বিক চক্রবর্তীর এই প্রতিবাদ নতুন করে সমাজের এক গভীর ও জরুরি আলোচনাকে সামনে এনে দিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ আবারও দুঃসংবাদ টলিপাড়ায়! প্রয়াত বাংলা ধারাবাহিকের প্রিয় মুখ বর্ষীয়ান অভিনেতা হরিদাস চট্টোপাধ্যায়! গভীর শোকের ছায়া বাংলা বিনোদন জগতে!

এদিন ঋত্বিকের পোষ্টটিতে লেখা ছিল, “আমার ট্যাক্সের টাকায় সর্দারের মূর্তি, বল্লভের মূর্তি, ভাইয়ের মূর্তি প্যাটেলের মূর্তি,বদগুরুর মূর্তি, চুরি করে চাকরি পাওয়া মূর্তিমানদের মাইনা, মসজিদ, চার্চ, মন্দির, ভগবান কালচারাল সেন্টার, এসবে আপনার আপত্তি নেই কিন্তু আমার আছে। এই আরকি…ট্যাক্স কিন্তু আমি আপনি এমনকি আইটি সেলের বোকা নিরুপায় চাকরি না-পাওয়া ভাইটি ও দেয়।” এভাবেই তীক্ষ্ণ ভাষায় ঋত্বিক ফের একবার তিনি প্রমাণ করলেন শুধু অভিনয়ে নয়, সামাজিক ইস্যুতেও স্পষ্ট ও সাহসী অবস্থান নিতে পিছপা নন।