“টলিউড তখন রিমেকের ‘এঁটো খাচ্ছে’, হাত পেতেও কাজ পাইনি!” “সেটা না হলে আমিও ধূমকেতুর মতো দশ বছরে একবার ফিরতাম!”— সব পেরিয়ে দেব আজ নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান! সেই যন্ত্রণা থেকেই কি জন্ম ‘দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেঞ্চার্স’-এর?

অবশেষে বড়পর্দায় আসছে ‘ধূমকেতু’ (Dhumketu)। বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ১৪ আগস্ট মুক্তি পেতে চলেছে দেব ও শুভশ্রীর (Dev-Subhasree) একসময়ের বহু আলোচিত এই ছবি। ছবিটি ঘিরে দর্শকদের আগ্রহ যেমন তুঙ্গে, তেমনই টলিউডের ইতিহাসেও এটি এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কারণ এই ছবিই একদিকে যেমন ‘দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেঞ্চার্স’-এর প্রথম নিজস্ব প্রযোজনা, অন্যদিকে দেব-শুভশ্রীর বিচ্ছেদের পর পর্দায় তাঁদের শেষ একসঙ্গে দেখা যাওয়ার মুহূর্তও। এমন একটি ছবি নিয়ে যে কৌতূহল থাকবে, তা বলাই বাহুল্য।

কিন্তু কেন শুরু করেছিলেন নিজের প্রযোজনা সংস্থা ঘাটালের সাংসদ? সম্প্রতি আর সাক্ষাৎকারে দেব বলেন, নিজেকে শুধু একজন অভিনেতা নন, তিনি একজন নির্মাতা হিসেবেও নিজের আলাদা পরিচিতি গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। যখন ধারাবাহিকভাবে রিমেক ছবির প্রস্তাব আসতে থাকে তাঁর হাতে, তখনই বুঝতে পারেন, এভাবে চললে নিজেকে কখনও নতুন করে তুলে ধরার সুযোগ পাবেন না। সেই কারণেই নিজের প্রযোজনা সংস্থা খোলার ঝুঁকি নিয়েছিলেন তিনি। দেবের স্পষ্ট কথা, বছরে যদি চারটে ছবির সুযোগ আসত, তার মধ্যে তিনটিই থাকত অন্য ভাষার ছবির পুনর্নির্মাণ।

এভাবে তিনি আর এগোতে চাননি। প্রযোজক হিসেবে তাঁর দায়িত্ব ছিল একটাই—মৌলিক গল্প বলা। দেব এদিন আক্ষেপ থেকে জানান, “‘ধূমকেতু’ ছবিটা করার আগে বুঝেছিলাম রিমেক দিয়ে বেশিদিন বাংলা ইন্ডাস্ট্রি চলবে না, এটি যে আমার প্রথম ব্যতিক্রমী ছবি তা কিন্তু নয়। ‘লে ছক্কা’ থেকেই আমি নিজেকে ভাঙতে শুরু করেছিলাম। তারপর অনেকের কাছে নতুন চরিত্রের জন্য আবেদন করেছি। সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, কেউ বা বলেছে আমাকে ভেবে লিখেনি গল্প। তাই নিজের সংস্থা খুলেছি যাতে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে পারি।

সেটা না হলে আমিও ধূমকেতু হয়ে যেতাম, দশ বছর একবার হয়তো আসতাম।” তিনি ঠিক করেন, নিজের পছন্দমতো কাজের সুযোগ যদি কেউ না দেয়, তাহলে সেই মঞ্চ নিজেকেই তৈরি করতে হবে। আর সেখান থেকেই শুরু ‘দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেঞ্চার্স’-এর পথচলা। ‘চ্যাম্প’, ‘ককপিট’, ‘কবীর’ থেকে শুরু করে ‘ধূমকেতু’—এই যাত্রাপথে ঝুঁকি যেমন ছিল, তেমনই ছিল স্বপ্ন বুনে যাওয়ার সাহস। তবে ‘ধুমকেতু’ শুধুমাত্র একটি ছবি নয়, এটি দেবের চলচ্চিত্রচিন্তার প্রতিফলন।

আরও পড়ুনঃ “বাংলা সিরিয়ালগুলো এখন বি’ষ ছড়াচ্ছে!” “রোজ গু’ন্ডামি নয়, ভালো জিনিস বানান!”— চ্যানেল মালিকদের হুঁশিয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের! ‘মহানায়ক সম্মান’ প্রদান অনুষ্ঠানে বাংলা সিরিয়াল নিয়ে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর!

তাঁর মতে, যখন দক্ষিণী কিংবা হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিগুলি নিজেদের গল্প নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করছে, সেখানে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই এখনও “অন্যের এঁটো খাচ্ছে”। সেই জায়গা থেকেই তিনি পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন। বাংলা সিনেমাকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দেওয়াই তাঁর লক্ষ্য। সেটাই আজ তাঁর প্রযোজনা সংস্থার মুলমন্ত্র। দেব চান, বাংলা ছবির ভাষা হোক শক্তিশালী, বিষয়বস্তু হোক স্বতন্ত্র, আর ভাবনা হোক মৌলিক। সেই অভিমুখেই এগিয়ে চলেছে ‘দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেঞ্চার্স’, যার অন্যতম নিদর্শন হতে চলেছে ‘ধূমকেতু’।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।