প্রথম ভারতীয় ছবি হিসেবে পুরীর মন্দিরে শুটিং! ভগবানের সামনে শ্রীচৈতন্য হয়ে ওঠার জন্য আমিষ ছেড়েছিলেন দিব্যজ্যোতি! দিনে একবার সাত্ত্বিক আহার, কখনও উপোস! নিমাই হয়ে ওঠার রহস্য ভেদ করলেন অভিনেতা

ছোটপর্দার অত্যন্ত জনপ্রিয় মুখ অভিনেতা ‘দিব্যজ্যোতি দত্ত’ (Dibyojyoti Dutta), বরাবরই দর্শকের ভালোবাসা কুড়িয়েছেন তাঁর অভিনয়ের মাধ্যমে। একের পর এক জনপ্রিয় ধারাবাহিকে অভিনয়ের পর এবার তাঁর মুকুটে নতুন পালক। বড়পর্দায় একেবারে ভিন্ন রকম চরিত্রে দেখা যেতে চলেছে তাঁকে। হাতে আর মাত্র দু’দিন, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবি ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’-তে (Lawho Gouranger Naam Rey) শ্রীচৈতন্যর ভূমিকায় দেখা যাবে দিব্যজ্যোতিকে। এই চরিত্র তাঁর কাছে শুধুই আর একটি কাজ নয় বরং মানসিক এবং শারীরিক দিক থেকে নিজেকে ভেঙে গড়ে তোলার একটা অভিজ্ঞতাও।

এই ছবির জন্য সবচেয়ে বড় যে পরিবর্তনটা করতে হয়েছিল, তা হল নিজের শরীর। দিব্যজ্যোতি নিজেই স্বীকার করেছেন যে শুরুতে তাঁর চেহারা এই চরিত্রের সঙ্গে মানানসই ছিল না। ওজন কমানো তাঁর কাছে সহজ ছিল না, কিন্তু প্রয়োজনও ছিল। দীর্ঘ সময় ধরে নিয়ন্ত্রিত খাওয়া, অভ্যাস বদল মিলিয়ে প্রস্তুতির সময়টা বেশ কঠিন ছিল। তাঁর নিজের কথায়, “শুটিংয়ের ওই তিন চার মাস সম্পূর্ণ আমিষ খাবার ছেড়ে দিয়েছিলাম। আমার সামনে কাউকে আমিষ খেতে দেখলেও অসুবিধা হতো। দিনে একবার খাবার খেতাম আর আমার শরীরে সেটাই সয়ে গেছিল।

বেশি খাবার খেলে সমস্যা দেখা দিত।” তবে, হঠাৎ করে এমন পরিবর্তন শরীর তো আর সহজে মেনে নিতে পারে না! তাই খিদে পেলে অনেক সময় তরমুজ খেয়েই নিজেকে সামলেছেন তিনি। পেট ভরে যাওয়ার একটা অনুভূতি তৈরি হলেও বাস্তবে শরীর যে কতটা কষ্টের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, সেটা বুঝেছেন ধীরে ধীরে। পুরীতে শ্যুটিং শুরুর আগেই প্রায় কুড়ি কেজির মতো ওজন ঝরিয়েছিলেন অভিনেতা। কিন্তু শ্যুটিং শেষ করে বাড়ি ফিরে দেখেন যে ওজন আরও কমে গিয়েছে! সব মিলিয়ে প্রায় পঁচিশ কেজি কমে যায় তাঁর শরীরের ওজন।

এই পরিবর্তন শুধু শারীরিক নয়, মানসিক ভাবেও নিজেকে চরিত্রের কাছাকাছি নিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। দিব্যজ্যোতির কথায়, এই দুই দিক সামলানোই ছিল তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ছবিটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক ঐতিহাসিক রহস্যও। এই প্রথম কোনও ভারতীয় ছবিকে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে শ্যুটিং করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই অভিজ্ঞতাকে নিজের জীবনের অন্যতম প্রাপ্তি বলে মনে করছেন দিব্যজ্যোতি। মন্দির প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে শ্রীচৈতন্যের চরিত্রে অভিনয় করা।

আরও পড়ুনঃ এই বাংলাদেশের প্রতি আমার কোনও আগ্রহ নেই, এই বাংলাদেশকে আমি চিনতে চাই না, সবকিছুর শাস্তি পেতে হবে! অকপট মিঠুন চক্রবর্তী

এমনকি যে রথের চাকা সাধারণ মানুষের ছোঁয়া থেকে দূরে থাকে, তার সঙ্গেও দৃশ্য, সবটাই তাঁর কাছে যেন এক অলৌকিক অভিজ্ঞতা। তাঁর বিশ্বাস, এমন সুযোগ ভগবানের কৃপা ছাড়া সম্ভব নয়। উল্লেখ্য, ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ ছবির গল্প বলার ধরনও বেশ আলাদা। এখানে একাধিক সময়কাল একসঙ্গে ধরা দেবে। শ্রীচৈতন্যের সময়, নটী বিনোদিনী ও গিরিশ ঘোষের অধ্যায় আবার তার সঙ্গে বর্তমান সময় একসঙ্গে ধরা পড়বে ছবিতে। ট্রেলারেই সেই বহুমাত্রিক গল্প বলার আভাস মিলেছে যা দর্শকের কৌতূহল আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

You cannot copy content of this page