তুই-তোকারি, কাঁধে হাত দিয়ে হাঁটলে প্রেম হয়না! আবদকায়দা থাকে! প্রেম নিয়ে ঝগড়া দোলন-দীপঙ্করের

বাংলা চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন জগতে দুই অত্যন্ত সুপরিচিত নাম দীপঙ্কর দে এবং দোলন রায়। তাঁদের সম্পর্ক বহুদিনের। তাঁদের সম্পর্কের রসায়ন বরাবরই অনেকের কৌতূহলের বিষয়। দীপঙ্কর দে বেশ রক্ষণশীল মানসিকতার হলেও দোলন রায়ের চিন্তাধারা আধুনিক ও বাস্তববাদী। তাঁদের একটি সাক্ষাৎকারে এই দুই ভিন্নধারার দৃষ্টিভঙ্গি উঠে আসে, যা তাঁদের সম্পর্কের গভীরতা ও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধার পরিচায়ক।

সাক্ষাৎকারে দীপঙ্কর দে প্রেম সম্পর্কে তাঁর ধ্যানধারণা ব্যাখ্যা করেন। তিনি মনে করেন, প্রেমে আদবকায়দার গুরুত্ব অনেক। তিনি বলেন, “পুরুষ নারীর মধ্যে তুই তোকারি এসে গেছে। তুই-তোকারই তো প্রেম হয় না, ‘তুমি’ ছাড়া প্রেম হয় না। আজকালকার ছেলে মেয়েরা দেখা যায় ফুটপাতের ওপর দিয়ে কাঁধে হাত দিয়ে হেটে যাচ্ছে। তাতে তারা সাংঘাতিক প্রেমিক প্রেমিকা সেটা প্রমাণ হয় না। ফুটপাতে হাঁটাটা একটা ফ্যাশন হয়ে গেছে।” তাঁর মতে, প্রেমের গভীরতা বাহ্যিক আচরণের ওপর নির্ভর করে না, বরং আন্তরিকতা ও মর্যাদার সঙ্গে সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া দরকার।

অন্যদিকে, দোলন রায় প্রেম নিয়ে আরও উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত পোষণ করেন। তিনি বলেন, “আমি আবার সেটা বিশ্বাস করি না তুই তো গাড়িতে প্রেম হয় ‘তুমি’তেও হয় ‘আপনি’তে তো আরও মিষ্টি প্রেম হয়। সবেতেই হয় কিন্তু আমার ক্ষেত্রে যেটা মনে হয়, সবার আগে যেটা একটা বেসিক জায়গা এবং সবচেয়ে বেশি দরকার সেটা হলো সততা এবং বিশ্বাস। ওর সঙ্গে সম্পর্ক থাকাকালীন ও আমার যদি কাউকে ভালো লাগে, আমি তো মানুষ আমার কারো চোখ ভালো লাগতে পারে কারো চুল ভালো লাগতে পারে কারোর কথা ভালো লাগতে পারে।”

দোলন আরও বলেন, “আমার একটা অন্য পুরুষ মানুষকে ভালো লাগতে পারে না লাগতেই পারে ওরও একটা মহিলাকে ভালো লাগতে পারে না লাগতেই পারে। এরকম তো নয় যে চোখে নাকি সিল করে দেওয়া হয়েছে কিন্তু সেই কথাটাই যদি আমরা একে অপরের সঙ্গে স্বীকার করতে পারি এবং সততার সঙ্গে জানাতে পারি যে জানো আমার ওর ওপর ক্রাশ হয়ে গেছে। প্রচন্ড ভালো লাগছে এই স্বচ্ছতাটা যদি একটা রিলেশনশিপে থাকে তাহলে মনে হয় না রিলেশনশিপ এর নিয়ে ভবিষ্যতে আর কোন প্রবলেম হবে এবং অবশ্যই রিলেশনশিপটা লং টার্ম চলবে।”

দোলন এরপর বলেন, “আমার কাউকে লাগতেই পারে ভালো, কি করব কিন্তু তার মানে এই নয় যে তোমাকে ছাড়া আমি অন্য কারো কাছে চলে গেলাম। মানে ওর প্রতি একটা ক্রাশ আছে কিন্তু। এই কথাটাই যদি সহজ ভাবে আমি স্বীকার করতে পারি এবং ও যদি সেটা সহজ ভাবে গ্রহন করতে পারে তাহলে আমার মনে হয় না রিলেশনশিপটা নিয়ে আর কোনদিনও কোন প্রবলেম হবে এবং সম্পর্কটা অসম্ভব লং রান থাকবে এটা তো বিশ্বাস করাই যায়।”

আরও পড়ুনঃ দুঃসংবাদ! শেষের মুখে দীর্ঘ পথচলা! টিআরপির তলানিতে পৌঁছে বন্ধ হচ্ছে অনুরাগের ছোঁয়া

তাঁদের এই সম্পর্ক শুধুমাত্র ভালোবাসার নয়, বরং পরস্পরের মতাদর্শকে গ্রহণ করারও এক চমৎকার উদাহরণ। দীপঙ্কর দে এবং দোলন রায়ের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও, তাঁরা একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করেন, যা তাঁদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে তুলেছে। প্রেম কেবল বাহ্যিক রীতিনীতির ওপর নির্ভর করে না, বরং তার ভিত শক্ত হয় বিশ্বাস, সততা এবং বোঝাপড়ার মাধ্যমে—এটাই তাঁদের সম্পর্ক থেকে শেখার বিষয়।