আমাদের আলোচনায় টলিউডের অভিনেত্রীদের নাম উঠলেই, নিঃসন্দেহে অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিকের (Koel Mullick) নাম যেন একটা আলাদা আভা ছড়ায়। তিনি শুধুমাত্র একজন অভিনেত্রী নন বরং একটি প্রেরণা, যিনি নিজের কাজের মাধ্যমে দর্শকদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর ক্ষমতা রাখেন। তাঁর পারিবারিক শিক্ষা, আত্মবিশ্বাস এবং জীবনযাপন মিলিয়ে তিনি এমন একজন নায়িকা, যার উপস্থিতি স্বতন্ত্র। ‘টলি কুইন’ কোয়েল মল্লিকের চরিত্রে ঐতিহ্যগত সৌন্দর্য এবং আধুনিকতা যেন সব সময় স্পষ্ট, যা দর্শকদের কাছে এক নতুন বার্তা নিয়ে আসে।
যেকোনও বিষয়ে তিনি বরাবর খুব সংযত মত রাখতেই, পছন্দ করেন। তবে, এদিন তিনি ভারতীয় শিক্ষার কড়া ভাষায় নিন্দা করলেন! এই দেশে নারীদের অবস্থান এবং স্বাধীনতা নিয়ে তিনি যেন বাস্তবেও হয়ে উঠলেন ‘মিতিন মাসি’র মতো! এদিন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, মেয়েরা আজকাল আত্মরক্ষার জন্য অনেককিছু শিখছে, কিন্তু মেয়েদের নিয়ে সমাজ এখনও বেশকিছু ট্যাবু আছে যে এই ধরনের জমা কাপড় পরছে বলেই তারা হেনস্থার শিকার হচ্ছে বা নারীদের আচরণেই পুরুষরা আকৃষ্ট হচ্ছে দিয়ে ধর্ষ’নের মতো ঘটনা ঘটছে।
এই বিষয়টা কোয়েল মল্লিক কীভাবে দেখেন? কোয়েলের কথায়, “সবার নিজের নিজের চিন্তা ভাবনা আছে। কিন্তু মনে হয় যে সাধারণ শিক্ষা, সভ্যতার এবং শালীনতার জায়গাটা থেকে ভারতবর্ষের মানুষ অনেকটাই পিছিয়ে আছে। কারণ এই তিনটে মিলিয়ে একটা সভ্য সমাজ বা দেশের নাগরিক গড়ে ওঠে। চিরকাল যেটা শুনে এসেছি যে, আমরা নাকি পিছিয়ে পড়া দেশ, প্রগতিশীল নই। কিন্তু, আমি বলব যে এটা আমেরিকা বা ইউরোপেও হয়।
তবে সেটার সংখ্যা ভারতের মতো নয়। এখানে এতটা বেশি হওয়ার কারণটা হচ্ছে, সবকিছুই এতটা চাপা আর এতটা ট্যাবু দিয়ে ঘেরা। কোন জিনিসটা পরলে আমার মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকা থাকবে বা থাকবে না, তার সঙ্গে তো অপরাধীর দৃষ্টিভঙ্গির কোনও সম্পর্কই নেই! পোশাক পাল্টালেই যে সেই মানুষটাও পাল্টে যাবে, এটা নয়! তবে মেয়েদেরও, নিজেদের শালীনতা বজায় রাখতে হবে, নিজের শরীর নিয়ে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। তবে, আমরা যে স্বাধীনতার আর সভ্যতার দিক থেকে পিছিয়ে আছি, সেটা সত্যি।”
আরও পড়ুনঃ পর্দার গল্প যেন বাস্তব ছুঁল! ১১ বছর পর এক ফ্রেমে ‘মা’-এর ঝিলিক ও মা-বাবা, স্মৃতির পাতায় ফিরে গেলন দর্শকরা! ২৫তম জন্মদিনে পুনর্মিলন, আবেগঘন ছবি ভাগ করে কী লিখলেন অভিনেত্রী তিথি বসু?
অভিনেত্রী আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিলেন যে শুধুমাত্র ব্যক্তি বা তাদের পোশাক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সামাজিক সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব নয়। সভ্যতা, শিক্ষার মান এবং সামাজিক সচেতনতা মিলিয়ে একটি সমাজের প্রকৃত উন্নতি নির্ধারিত হয়। তিনি যেমন মেয়েদের আত্মরক্ষার শিক্ষা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা মানছেন, তেমনি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ও ট্যাবুগুলো পরিবর্তনেরও গুরুত্ব তুলে ধরছেন। স্বাধীনতা এবং সম্মান পেতে হলে শুধু আইন বা শাস্তি নয়, সচেতনতা, শালীনতা এবং একে অপরের প্রতি সম্মানও সমানভাবে জরুরি।






