“সৃজনশীলতার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই.. রাজনীতি চূড়ান্ত সর্বনাশ করেছে ইন্ডাস্ট্রির, বাংলার শিল্পীরা মানবিকতা হারাচ্ছে” রাজনীতি শিল্পের শত্রু, টলিউডের অন্দরমহলের রাজনীতি নিয়ে মুখ খুললেন লাবণী সরকার!

টলিউডে রাজনীতির (Tollywood Politics) উপস্থিতি এখন আর আলাদা করে চোখে পড়ে না, বরং ধীরে ধীরে তা দৈনন্দিন বাস্তবতার অংশ হয়ে উঠেছে। একসময় যেখানে শিল্পীদের পরিচয় গড়ে উঠত কাজ, অভিনয় আর পর্দার সাফল্যের মাধ্যমে। সেখানে এখন অনেকেই রাজনৈতিক পরিচয়ে বেশি পরিচিত হয়ে উঠছেন। এই পরিবর্তনকে ভালো চোখে দেখছেন না অভিনেত্রী ‘লাবণী সরকার’ (Laboni Sarkar)। তাঁর মতে, সৃজনশীলতার সঙ্গে রাজনীতির সরাসরি কোনো যোগ নেই। অথচ সেই রাজনীতিই আজ ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে ঢুকে পরিবেশটাকে ভারী করে তুলেছে।

লাবণীর বক্তব্যে বারবার উঠে এসেছে এক ধরনের ক্ষয়ের কথা যা শুধু কাজের ক্ষেত্রেই নয়, মানুষের সম্পর্কের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। আগে সহশিল্পীদের মধ্যে যে স্বাভাবিক মানবিক যোগাযোগ, আন্তরিকতা আর সহযোগিতার আবহ ছিল, এখন তা অনেকটাই কমে গেছে বলে তিনি মনে করেন। রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হওয়ায় একে অপরের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে, কাজের বাইরে সম্পর্কগুলোও আর আগের মতো সহজ নেই। তাঁর চোখে, এই ভাঙনটাই সবচেয়ে বড় ক্ষতি!

তিনি আরও মনে করেন, অনেক অভিনেতা এবং অভিনেত্রী কাজের নিশ্চয়তা বা ক্ষমতার আশায় রাজনীতির পথে হাঁটছেন, যা শিল্পীর মর্যাদাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে! শিল্প যেখানে স্বাধীন চিন্তা আর সৃজনশীলতার জায়গা হওয়ার কথা, সেখানে রাজনৈতিক হিসেবনিকেশ ঢুকে পড়লে সেই স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হয়। লাবণীর মতে, রাজনীতির ময়দানে নামা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হলেও, তার প্রভাব পুরো ইন্ডাস্ট্রির উপর পড়ছে আর এই কথা অস্বীকার করার উপায় নেই।

উল্লেখ্য, নিজের জীবনের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও লাবণী বরাবরই স্পষ্ট ও অনড়। পর্দায় তিনি পারিবারিক চরিত্রে দর্শকের মন জয় করেছেন, কিন্তু বাস্তব জীবনে তিনি নিজের স্বাধীনতাকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। নিজে মা না হয়েও, স্বামী কৌশিক ব্যানার্জির প্রথম স্ত্রীর সন্তান এবং পরিবারকে আপন করে নিয়েছেন, দায়িত্ব এড়িয়ে যাননি। এই জীবনদর্শনই হয়তো তাঁকে রাজনীতির জটিলতা থেকে দূরে রেখেছে, যেখানে আপস আর হিসেব অনেক সময় সৃজনশীলতাকে ছাপিয়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ বেআ’ইনি বেটিং অ্যাপকাণ্ডে নতুন মোড়, ইডির পদক্ষেপে বিপাকে মিমি–অঙ্কুশ! বাজে’য়াপ্ত হল কোটি টাকার সম্পত্তি

তবে, যেটা না বললেই নয় যে লাবণী সরকারের বক্তব্য কোনো দল বা ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে নয়। বরং এটি একটি প্রবণতার প্রতি সতর্কবার্তা। তাঁর চোখে, টলিউডে রাজনীতির বাড়বাড়ন্ত শিল্পের স্বাভাবিক বিকাশকে থামিয়ে দিচ্ছে। অভিনয় এবং গল্প বলা আর মানবিক অনুভূতির জায়গায় যদি রাজনৈতিক সমীকরণ প্রাধান্য পায়, তাহলে সেই ইন্ডাস্ট্রি তার মূল শক্তিটাই হারাবে। তাই তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, শিল্পকে শিল্পের মতো থাকতে দেওয়াই সবচেয়ে জরুরি!

You cannot copy content of this page