“দুই-আড়াই ঘণ্টা পারফর্ম করানোর পর খালি পেটে বাড়ি ফেরানো অপরাধের!” “মিনিমাম কন্টেইনারে খাবার দেওয়ার বিবেক-বুদ্ধি না থাকলে অনুষ্ঠান করবেন না!”— অনুষ্ঠান আয়োজনে পেশাদারিত্বের অভাব নিয়ে ক্ষুব্ধ সংগীত শিল্পী ইমন!

মঞ্চানুষ্ঠান (Stage Show) মানেই কেবল আলো, গান আর দর্শক নয়— এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে অনেক অনুষঙ্গ। শিল্পীরা যখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা মঞ্চে পরিবেশনা করেন, তাদের মানসিক ও শারীরিক পরিশ্রম থাকে সীমাহীন। সেই পরিশ্রমের পর যদি তাদের খাবারের ব্যবস্থাও না হয়, অন্তত বাড়ি ফেরার পথেও যদি পার্সেল করা খাবার না পায়, তাহলে সেটা কেবল অবমাননাই নয়, এক ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। অনেক আয়োজক আছেন, যারা সত্যিই আন্তরিকতার সঙ্গে সব ব্যবস্থা করেন।

সময়মতো খাবার, সুষ্ঠু পরিবেশ, এবং প্রয়োজনীয় যত্ন– সব কিছু মিলিয়ে শিল্পীদের কাজের প্রতি সম্মান জানানো হয়। এই দৃষ্টান্তগুলোই তো অনুপ্রেরণা জাগায়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, সবার মধ্যে সেই মানসিকতা দেখা যায় না। এক প্যাকেট খাবার ধরিয়ে দেওয়ার মতো সময়ও তাদের নেই, যেন টাকা দিলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়। শিল্পী ইমন সেন, যিনি নিজেও বহুদিন ধরেই সংগীত পরিবেশনের সঙ্গে যুক্ত, ফলে এই বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা ব্যক্তিগত এবং দীর্ঘদিনের।

সম্প্রতি তিনি একটি পোস্টে এই বিষয়ে কষ্ট এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যেখানে তিনি বলেন, “অনুষ্ঠান শেষে শিল্পীদের প্রতি যে অবহেলা দেখানো হয়, বিশেষ করে খাবারের ব্যাপারে, তা ন্যূনতম মানবিকতারও লঙ্ঘন!” তার মতে, পারফর্ম করার পর শিল্পীকে খালি পেটে বাড়ি ফেরাতে বাধ্য করা একপ্রকার অপরাধ। তাঁর এই সরব প্রতিবাদ কেবল নিজের জন্য নয়, বরং বহু শিল্পীর সম্মিলিত অভিজ্ঞতার প্রতিবিম্ব।

ইমন আরও জানান, তাঁর এই বক্তব্য কোনও একটি নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নয় বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখা বহু ঘটনার জমে থাকা অভিজ্ঞতা। তিনি স্পষ্ট করে দেন, সব আয়োজকই যে একরকম, তা নয়– অনেকেই যথেষ্ট যত্নবান এবং আন্তরিক। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে এখনও আয়োজকদের প্রস্তুতির অভাব, দায়িত্বহীনতা এবং শিল্পীদের প্রতি প্রয়োজনীয় সম্মানবোধের অভাব লক্ষ্য করা যায়। আয়োজকদের অনেক সময়ই অভিজ্ঞতার অভাব থাকে। ফলে কীভাবে শিল্পীর সঙ্গে আচরণ করা উচিত।

আরও পড়ুনঃ “তোর ভাই পারে, তুই কেন পারিস না? তোর দিদি করতে পারল আর তুই পারছিস না?”— তুলনা টানার মতো বাস্তব জীবনের কড়া সত্যি নিয়ে মুখ খুললেন কোয়েল মল্লিক! বর্তমান সমাজে ভাই বোনেদের মধ্যে ভালোবাসা থাকার বদলে কেন দূরত্ব বেড়েই চলেছে – সে বিষয়ে কি জানালেন অভিনেত্রী?

কিংবা অনুষ্ঠান চলাকালীন কী ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়-এসব বিষয়ে ধারণা স্পষ্ট থাকে না। অথচ সামান্য কিছু পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি থাকলেই পুরো অভিজ্ঞতা অনেক উন্নত করা সম্ভব। শিল্পীরা শুধু অনুষ্ঠানের ‘অংশ’ নন, তারা সেই অনুষ্ঠানকে প্রাণ দেন। তাদের প্রতি সেই গুরুত্বটাই সবচেয়ে জরুরি। ইমনের এই সচেতন প্রয়াস, হয়তো ভবিষ্যতের আয়োজকদের চোখ খুলে দিতে পারে-এটাই তাঁর প্রত্যাশা।