আরজি কর কাণ্ডের বর্ষপূর্তিতে ফের আ’গুন জ্ব’ল’ছে রাজ্যে! এক বছর পেরিয়েও ন্যায় মেলেনি— ক্ষোভে কিঞ্জল, বাদশা, বিদীপ্তা, শ্রীলেখারা! তিলোত্তমার বিচার নেই, এদিকে আবার দুর্গোৎসব আসন্ন! বিনোদন জগতে ক্ষোভের ঝড়, কি বলছেন সকলে?

আরজি কর কাণ্ডের (R G Kar Medical College) আজ এক বছর পার হলেও সেই আ’গুন কি এখনও জ্ব’লছে শহরবাসী তথা সাংস্কৃতিক মহলের মনে? নাকি অচিরেই নিভে গেছে? তবে ন্যায়বিচারের দাবি করে গত বারো মাস ধরে নানা ধরনের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন একদল মানুষ। মূল উদ্দেশ্যটাও একটাই– শহরবাসী, বিশেষত প্রশাসন যেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত তরুণী চিকিৎসককে (One Year Of Tilottama) ভুলে না যায় এবং ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত হয়। এই প্রেক্ষাপটে আন্দোলনে গত বছর থেকেই সোচ্চার হয়ে ওঠেন বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী।

তাঁরা কি এখনও সেই আগের মতোই সক্রিয়? সংবাদ মাধ্যম সেই তালিকার কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে, প্রত্যেকেরই আওয়াজে একরকম হতাশা আর অনুরোধ মিলেছে। ‘বাদশা মৈত্র’ কর্মসূত্রে শহরের বাইরে আছেন, শনিবারই ফেরার কথা। তিনি জানান, যত দ্রুত সম্ভব আরজি কর হাসপাতালের মাঠে পৌঁছোনোর চেষ্টা করবেন এবং নিস্পৃহভাবে বিচার না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ অব্যাহত থাকা উচিত বলেই মনে করেন। তাঁর বক্তব্য একথাই—কেবল অভিযুক্তদের নয়, যারা পুরো ঘটনার ন্যায্য বিচার আটকে রেখেছে তাদেরকেও জনগণের ক্রোধের সম্মুখীন হতে হবে।

অন্যদিকে ধারাবাহিকের কাজে ব্যস্ত ‘বিদীপ্তা চক্রবর্তী’র কথাও একই আশঙ্কা ফুটে উঠলো। তিনি বলেন, শুরু থেকেই নির্যাতিতার পরিবারের পাশে ছিলেন মন থেকে এবং এখনও বিচার প্রক্রিয়ায় সন্তুষ্ট নন। শুটিং সূচির ভিড়ে বড় কোনও কর্মসূচিতে যোগদান করতে না পারলেও কাজ শেষে তিনি প্রয়োজনে মিছিলে যোগ দেবেন বলে জানান। অন্যদিকে দক্ষিণ ভারত থেকে ফিরে এসে শ্যামবাজারে অনশন-সমাবেশে উপস্থিতি দেখিয়েছেন অভিনেত্রী ‘মোক্ষ’ এবং ‘দেবলিনা দত্ত’ও, জনসমাবেশে সাধারণ মানুষদের সাথে কাঁধ মিলিয়েছেন।

প্রতিবাদের আরও এক মুখ হলেন চিকিৎসক-অভিনেতা ‘কিঞ্জল নন্দ’। বর্ষপূর্তির ঠিক দু’দিন আগে তিনি দ্বিতীয়বার পিতৃত্বের আনন্দ উপভোগ করলেও, আন্দোলনের মাত্রা কমাতে চাননি। নিজের বার্তায় তিনি আবেগ, ক্রোধ, হতাশা সব তুলে ধরে লেখেন যে তিনি কোনো রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা নিয়ে নয়, একজন নাগরিক হিসেবে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন এবং পরে যেসব অভিযোগ উঠেছিল, সেগুলোকে তিনি ইতিমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছেন। কিঞ্জলের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, কোনো ব্যক্তিত্বগত স্বার্থে তিনি বিক্ষোভ করেননি।

বরং সমাজকে সুস্থ করার আহ্বানই তাঁর মর্ম। উল্লেখ্য, শনিবার বিকেলে ‘কালীঘাট চলো’ কর্মসূচি একটি কেন্দ্রীয় মোড় হয়ে উঠছে—সেখানে হাঁটবেন ঊষসী চক্রবর্তী, দেবদূত ঘোষ, সৌরভ পালোধি, শ্রীলেখা মিত্র প্রমুখ। ফিল্ম-টেলিভিশন জগতের সঙ্গে নির্মাতা-অভিনেতা কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়েরও যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকা সৌরভ বলেন, পথ এখনও খোলা আছে—আগুন জ্বলে উঠেছে। দেবদূতও জানান, সোদপুরে হওয়া পথসভায় তিনি অংশগ্রহণ করবেন।

আরও পড়ুনঃ “টেলিভিশন ছাড়া বিনোদন অচল, তাও আমাদের প্রাপ্য সম্মান নেই!” “ছোটপর্দার শিল্পীদের অবহেলা বন্ধ হোক!”— টিভির তারকাদের প্রতি অবজ্ঞা নিয়ে তৃণা সাহার ক্ষোভ! সরাসরি অভিযোগ করে, শিল্পীদের সুরক্ষা চাইলেন তিনি!

দেবদূত বলেন, “কলকাতা এখনও ঐতিহাসিকভাবে এই ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সজাগ, শহরের বুকে বিদ্রোহের আগুন নিভে যায়নি।” শ্রীলেখা মিত্র অকপটে প্রশ্ন তুলেছেন,”একবছর পেরিয়েছে, আড়ালে গেল কী ন্যায়?” নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে তাঁর দেখা ও কথাবার্তাকে তুলে ধরে আরও তীক্ষ্ণ প্রশ্ন করেছেন। এক বছরে যদিও আন্দোলনের ধরণে বদল এসেছে, তবু একটিই দাবি অচল—সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হোক। এই দাবির কণ্ঠে এখন আরেকটু নির্দিষ্ট বলা হচ্ছে— কেবলমাত্র এক বা দু’জন অভিযুক্তকে দায়ী ধরলেই হবে না, পুরো প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ও বিচক্ষণভাবে এগুতে হবে।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।