দেখতে দেখতে টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় দশ বছর পার করে ফেললেন অভিনেত্রী ‘তৃণা সাহা’ (Trina Saha), এখন তিন বিনোদনের মাধ্যমেই সমান সক্রিয়। ধারাবাহিক থেকে শুরু করে বড়পর্দা এবং ওটিটিতে তাঁর উপস্থিতি প্রমাণ করে যে– তিনি প্রতিভার উপর ভর করেই, নিজের সীমা ছাড়িয়ে রোজ স্বতন্ত্র স্থান তৈরি করছেন। তবে এত বছর কাজ করার পরও ছোটপর্দার শিল্পীদের (Television Actor) প্রতি সম্মানজনক মনোভাব না থাকা নিয়ে তার মনে গভীর সংশয় এবং ক্ষোভ থেকে গেছে। সম্প্রতি মুম্বইয়ের এক জনপ্রিয় টেলি অভিনেতার টেলিভিশন শিল্পীদের সম্মান নিয়ে তোলা প্রশ্ন তৃণাকে আরও ভাবিয়ে তুলেছে।
সম্প্রতি, হিন্দি ধারাবাহিক ‘অনুপমা’ খ্যাত বাঙালি অভিনেত্রী ‘রুপালি গাঙ্গুলী’ ধারাবাহিক শিল্পীদের জাতীয় পুরস্কার না পাওয়া নিয়ে সরব হয়েছিলেন। এরপরেই তৃণা নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে সেই কথাটি শেয়ার করে লিখেছেন, “খুব জরুরি প্রশ্ন! এর উত্তর কি আমরা পেয়েছি?” উল্লেখ্য, তৃণা সাহা তার অভিনয়ের যাত্রা শুরু করেছিলেন ছোটপর্দার হাত ধরেই। স্টার জলসার বিভিন্ন জনপ্রিয় ধারাবাহিকে তাঁর অভিনয় দর্শকদের মধ্যে প্রশংসিত হয়েছে বরাবর। যার মধ্যে রয়েছে ‘খোকাবাবু’, ‘জয় কালি কলকাত্তাওয়ালি’, ‘কলের বউ’ এবং ‘খড়কুটো’।
বর্তমানে তিনি স্টার জলসার ‘পরশুরাম- আজকের নায়ক’ ধারাবাহিকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন, যে ধারাবাহিকটি কয়েকটি সপ্তাহ ধরে টিআরপি তালিকায় শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। এত জনপ্রিয়তার পরেও তৃণার অনুভব, টেলিভিশন শিল্পীরা এখনও নানা ধরনের অবজ্ঞা ও অবহেলা ভোগ করেন। বিশেষ করে তাদের দক্ষতা ও পরিশ্রমকে যথেষ্ট মূল্যায়ন করা হয় না। করোনা মহামারীর সময় ছোটপর্দার কাজ অনেকাংশে অব্যাহত থাকলেও সিনেমা এবং সিরিজের কাজ বেশ কিছু সময় থমকে যায়। এমন কঠিন সময়ে ধারাবাহিক ‘খড়কুটো’ দর্শকদের বিনোদনে নিয়োজিত ছিল।
তৃণা মনে করেন, এই সময়টুকু শিল্পী ও ইন্ডাস্ট্রির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তারপরও টেলিভিশনের শিল্পীদের সম্মান কম থাকার বিষয়টি কেন আজও সমাধান হয়নি তা তিনি বুঝতে পারেন না। ছোটপর্দার শিল্পীরা দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রম করেন, অনেক সময় ২৩ ঘণ্টা শুটিং করতে হয়, কিন্তু তাদেরকে যেন সব জায়গাতেই অবহেলা করা হয়। তৃণা সাহা আরও বলেন, সিনেমা এবং টেলিভিশন দুই মাধ্যমেই কাজ করলেও প্রতিটি ক্ষেত্রেই শিল্পীদের গুরুত্ব থাকা দরকার। সিনেমায় কাজ হয় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য, কিন্তু ধারাবাহিকে নিয়মিত কাজ করতে হয়।
আরও পড়ুনঃ “তোমাদের ভালবাসা আর সমর্থনে আমি অপরাজেয়!”— রাখিবন্ধনের বিশেষ দিনে, দক্ষিণ কলকাতার ‘বৃহন্নলা দিদি’দের হাতে রাখি পড়লেন গৌরব! এই মুহূর্ত আজীবন হৃদয় রাখার প্রতিশ্রুতি অভিনেতা, প্রশংসায় পঞ্চমুখ সমাজ মাধ্যম!
এর কারণে টেলিভিশন শিল্পীদের পরিশ্রমও অনেক বেশি। তাই শিল্পীদের প্রতিও সমান সম্মান আর মর্যাদা দেওয়া উচিত যাতে ইন্ডাস্ট্রির ভারসাম্য বজায় থাকে। অভিনেত্রী আরও যুক্তি দিয়েছেন যে মডেলিং এবং বিজ্ঞাপনে যারা কাজ করেন তারাও শিল্পী হিসেবে সমান সম্মান পাওয়ার অধিকারী। কারণ সিনেমা, টেলিভিশন, বিজ্ঞাপন এবং মডেলিং— এসব মিলেই শিল্পের পূর্ণাঙ্গ চিত্র গড়ে ওঠে। এক্ষেত্রে কোনও এক মাধ্যম বা শিল্পীকে অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই। সবাইকে বোঝানো দরকার যে, এই সমান সম্মান ও স্বীকৃতিই শিল্পী সমাজকে শক্তিশালী করবে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।