“বাংলায় খালি ম্যানেজ করার চেষ্টা, যেভাবেই হোক কাজ শেষ করতে হবে, আসল প্রতিভা খুঁজে আনার চেষ্টাই নেই, কিন্তু মুম্বইয়ে কাজ মানে নিখুঁত!”, টলিউডকে একহাত নিলেন গায়ক রাঘব চট্টোপাধ্যায়

বাংলা ও হিন্দি—দুই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেই দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন রাঘব চট্টোপাধ্যায়। কখনও সিনেমায় ব্যাকগ্রাউন্ড গান গেয়েছেন, কখনও নিজের অ্যালবামে শ্রোতাদের মন জয় করেছেন। কিন্তু এই দুই জগতের অভিজ্ঞতা তাঁকে বুঝিয়েছে এক বড় পার্থক্য—কাজের মান আর পেশাদারিত্বের মধ্যে ফারাক।

সম্প্রতি সঙ্গে সংগীতা পডকাস্টে রাঘব বলেন, মুম্বই ও বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বড় পার্থক্য হচ্ছে প্রফেশনালিজম। তাঁর কথায়, মুম্বইয়ে যতই সমস্যা হোক, সবাই চেষ্টা করে কাজটা নিখুঁতভাবে শেষ করতে। আগে যেমন ছিল, এখনও সেই মান বজায় আছে। কিন্তু বাংলায় সেটা হয় না। এখানে অনেক সময় “যেভাবে হোক কাজটা শেষ করো” মনোভাব চলে।

রাঘব উদাহরণ দিয়ে বলেন, বাংলায় যদি কোনও শুটিংয়ে সানাই বাজানোর মানুষ পাওয়া না যায়, তাহলে কিবোর্ডে সেই শব্দ ম্যানেজ করে নেওয়া হয়। কিন্তু হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে এটা হয় না। সেখানে ঠিক করে একজন দক্ষ সানাইবাদককে খুঁজে আনা হয়, তারপর কাজ হয়। তাঁর মতে, এটাই বাংলার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা।

তিনি আরও বলেন, ধরুন কোনও গান রেকর্ডিংয়ে একজন ভালো গজল শিল্পীর প্রয়োজন, মুম্বইয়ে তাঁরা রাজস্থানের কোনও গলিতেও গিয়ে সেই গায়ককে খুঁজে আনবেন। কিন্তু বাংলায় চেষ্টা থাকে “যেভাবে হোক ম্যানেজ” করার। ফলে কাজের মান নষ্ট হয়, আর সেই নিখুঁততার সৌন্দর্য হারিয়ে যায়।

রাঘবের সাম্প্রতিক এক ভিডিও সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, তিনি সেলুনে বসে চুল কাটছেন। ট্রিমারের শব্দ শুনে অনেকেই অবাক—কারণ তাতে যেন লুকিয়ে ছিল সুরের ছোঁয়া। রাঘব নিজেও হাসতে হাসতে ট্রিমারের আওয়াজে রেওয়াজ শুরু করেন। তাঁর সহকারী সেই দৃশ্য ভিডিও করে পোস্ট করেন, যা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ “আজকাল বাংলায় তেল মেরে মেরে আর চেটে কাজ পেতে হয়! আর তাই আমাদের মত যোগ্যদের এখানে কাজের অভাব” — কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে ডাক না পেয়ে বিস্ফো’রক সৌম্য চক্রবর্তী

এর আগেও রাঘব নৈহাটির এক অন্ধ ভিখারি দম্পতির ভিডিও পোস্ট করে প্রশংসা পেয়েছিলেন। ওই দম্পতি রাস্তায় মা কালীর গান গেয়ে ভিক্ষা করতেন। রাঘব সেই মুহূর্তকে “সত্যিকারের সঙ্গীতের স্পর্শ” বলে বর্ণনা করেছিলেন। তাঁর কথায়, এমন মানুষই তাঁকে বারবার মনে করিয়ে দেন, সঙ্গীত কেবল পেশা নয়—এ এক অনুভবের জগৎ।