বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের (Sabitri Chatterjee) নাম যেন এক অমলিন অধ্যায়। অভিনয়ের মাধুর্য আর যে কোনও চরিত্র ফুটিয়ে তোলার সহজাত ক্ষমতা তাঁকে বাঙালি দর্শকের হৃদয়ে বিশেষ জায়গা করে দিয়েছে। এক সময় রূপোলি পর্দার রানী তিনি। অসংখ্য ছবিতে নায়িকা থেকে পার্শ্ব চরিত্রে, সব জায়গাতেই নিজের আলাদা ছাপ রেখে গেছেন। বয়স ও সময়ের জন্য বড়পর্দা থেকে কিছুটা দূরে সরে গেলেও তাঁর জনপ্রিয়তা বা দর্শকের ভালোবাসা কিন্তু একটুও কমেনি।
বরং আজও তাঁকে ঘিরে নস্টালজিয়া, আবেগ আর শ্রদ্ধার ঢেউ সমানভাবে বয়ে দর্শকমনে। দীর্ঘ বিরতির পর ফের ছোটপর্দায় ফিরেছেন এই কিংবদন্তি অভিনেত্রী। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের ধারাবাহিক ‘চিরসখা’-য় নতুন করে দেখা মিলছে তাঁর অভিনয়ের। সম্প্রতি ছিল লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রযোজনা সংস্থার পনেরো বছরের উদযাপনে চাঁদের হাট বসেছিল। বাংলা টেলিভিশনের প্রায় সকল ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সাবিত্রী দেবীও হাজির হন কালো পোশাক, চোখে চওড়া কাজল।
সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে– ঠোঁটে উজ্জ্বল রঙের লিপস্টিক আর কানে অনেক বড় দুল। এই অনুষ্ঠানের স্মৃতি হিসেবে বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর সঙ্গে নানান অভিনেতা ছবি প্রকাশ করেন সমাজ মাধ্যমে। সেই সব ছবিতে অভিনেত্রী সাজ দেখে প্রশংসার বদলে কটাক্ষের ঝড় বয়ে আসে। উল্লেখ্য, এর কিছুদিন আগে পুজো কেন্দ্রিক একটি মিউজিক ভিডিওতে, অভিনেত্রীর লাল শাড়ি এবং রঙিন গয়না পরা নিয়েও সমালোচনা কম হয়নি। এমনকি ইন্ডাস্ট্রির অন্দরেও নাকি এই কথা ওঠে মাঝেমাঝে।
অনেকেই বলেন, “নব্বইয়ের দোর গোড়ায় বয়সে এত সাজ কেন!” ধারাবাহিকে তাঁকে সব সময় পরিপাটি ভাব দেখা যায়, লিপস্টিক পরতে তিনি কখনওই ভোলেন না। এই নিয়েও সমাজ মাধ্যমে প্রায় চলে নানান মজা-ঠাট্টা। কেউ বলেন, “ঠোঁট কই? গোঁফের মতো লাগছে লিপস্টিক!” আবার অন্যজন বলেন, “এই বয়সে বেশি বাহার দেখানো বন্ধ করে কীর্তন করুন!” “যে বয়সে যেটা মানায় না সেটা করতেই হবে কেন? খুব বাজে লাগে!”– এমনও বলেন অনেকে। চারিদিকে এত বিতর্ক আর কটাক্ষের শিকার হয়ে, অবশেষে মুখ খুললেন সাবিত্রী দেবী।
আরও পড়ুনঃ “শূন্য হয়ে গেল সব, আমার আর কিচ্ছু নেই!”— সাদা শাড়ি পরে ছবি দিয়ে লিখলেন সুস্মিতা! কিছুদিন আগেও নতুন জীবন নিয়ে হাসিখুশি ছিলেন, হঠাৎ এমন খারাপের ছবি দিয়ে লিখলেন কেন? হঠাৎ কী হল তাঁর?
এদিন সংবাদ মাধ্যমকে অকপটে তিনি জানালেন, “সাজতে আমি বরাবরই ভালবাসি। যদি কেউ নিন্দা করে তো করুক, মনকে এখনও তেমন বুড়ো করে ফেলিনি যে আর সাজব না। আমার চোখে এই সাজ যথেষ্ট মার্জিতই। সব সময়ে নতুন প্রজন্মের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি। এখন নিজেকে সচল রাখাই আমার মুখ্য উদ্দেশ্য। অনেক বাচ্চারা কাজ করছে, দেখে আমার ভাল লাগে।বার বার শট দিতে কষ্ট হয়, কিন্তু মন ভাল রাখতে রোজ শুটিংয়ে যাই।” অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করেও পর্দায় ফিরে, তিনি যেন প্রমাণ করছেন— সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের কাছে বয়স কেবল একটি সংখ্যা।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।