যাঁকে একসময় টেলিভিশনের পর্দায় অত্যন্ত প্রাণবন্ত হিসেবেই সবাই দেখেছেন, আজ সেই মানুষটি মানসিকভাবে ভীষণ খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের (Sudipa Chatterjee) ভাইজির প্রিয় পোষ্য ‘গজু’, একটি পার্শিয়ান প্রজাতির বিড়াল— হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যায়। দুর্গাপুজোর পর বেড়াতে যাওয়ার সময় তিনি কুঁদঘাটের এক ক্রেশে (Pet Care Scandal) , সুদীপার পরামর্শেই ভাইজি বিড়ালটিকে রেখে যায়। কিন্তু ফিরে এসে জানতে পারে, গজুর আর খোঁজ নেই! ক্রেশের তরফে জানানো হয়, ভুল করে অন্য কারও বিড়ালের সঙ্গে গজুর অদলবদল হয়ে গেছে।
এমনকি গজুর বদলে অন্য বিড়াল দেওয়ার প্রস্তাবও আসে, কিন্তু তাতে রাজি হয়নি সুদীপার পরিবার। এই ঘটনাকে সাধারণ ভুল বলে মেনে নিতে পারছেন না অভিনেত্রী। বরং তাঁর বিশ্বাস, গজুর সঙ্গে কিছু অঘটন ঘটেছে, যা ইচ্ছাকৃতভাবে লুকোনো হচ্ছে। ফেসবুক লাইভে এসে তিনি ক্রেশের ভেতরের নোংরা অবস্থা, পশুদের প্রতি অবহেলা, এমনকি প্রাণী নির্যাতনের অভিযোগও তুলে ধরেন। সেখানকার পশুগুলিকে ছোট ঘরে গাদাগাদি করে রাখা, মৃ’ত প্রাণীদের গোপনে পুঁতে ফেলা, এসব দৃশ্য দেখে বহু মানুষই হতবাক।
আশেপাশের বাসিন্দারাও নাকি দীর্ঘদিন ধরেই দুর্গন্ধ আর আওয়াজে অতিষ্ঠ, কিন্তু তবুও কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি এতদিন। এই ঘটনার পরে রিজেন্ট পার্ক থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তদন্ত চলছে। এদিন এক সাক্ষাৎকারে সেই ক্রেশের বিরুদ্ধে আরও বিস্ফোরক সব তথ্য দিয়েছেন তিনি! তাঁর কথায়, “একটা অত্যন্ত ছোট ঘর, তার মধ্যে সাত থেকে নটা হাস্কি ব্রিডের কুকুরের বেআইনি ব্রিডিং চলছে। অন্য একটা ঘরে প্রায় ১০ থেকে ১২ টা বিড়াল গাদাগাদি করে রয়েছে। পাশের ঘরেও একই পরিস্থিতিতে ৩৬ টা কুকুর, ছাদ আর সিঁড়ি মিলিয়ে সব জায়গায় কুকুর-বিড়াল খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে।
দুর্গন্ধের ওখানে ঢোকা যায় না। মানে নরক দর্শন কাকে বলে? সেটাই আমার হয়েছে কালকে। হয়তো আগের জন্মের কোনও কৃতকর্মের ফল পেলাম আমি এটা! আমার দেওর যেহেতু সার্জেন (শল্যচিকিৎসক), তাঁকে ম’র্গেও যেতে হয় কাজের সূত্রে। এমনকি প্রচুর মৃ’তদে’হ দেখতে হয়, সে পর্যন্ত সহ্য করতে পারেনি কালকের দৃশ্য! এতই খারাপ অবস্থা যে আমার দু’বার বমি হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, অবলা প্রাণী গুলোকে ঠিকমতো খেতে পর্যন্ত দেওয়া হয় না, নিয়মিত অত্যাচার করা হয় খেতে চাইলেই।
বাজার থেকে আড়াই কেজি নাড়িভুঁড়ি কিনে এনে খেতে দেওয়া হয় ৪০টা প্রানকে, যেটা মুহূর্তেই বি’ষক্রিয়া ছড়াতে পারে আদরের পোষ্যদের শরীরে। পাশের বাড়ির লোকেরা আমাদের জানিয়েছেন, যখন ওই নাড়িভুঁড়ি রান্না করা হয়, টেকা যায় না গন্ধে। অথচ এই পরম আদরে থাকা পোষ্যগুলোর সামান্য কিছুদিন দায়িত্বের জন্য, প্রত্যেকটা অভিভাবকের কাছ থেকে ১০-১২ হাজার টাকা নেন তারা।” সুদীপা একা নন— এই যন্ত্রণার মধ্যে থেকেও তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন, যেন পশুপ্রেমীরা একজোট হয়ে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন।
আরও পড়ুনঃ দর্শকদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ফের ছোট পর্দায় দেখা যাবে ডোডো দা ম্যাজিক! আবারও ছোট পর্দায় ফিরছেন অর্পণ ঘোষাল? বিপরীতে কোন নায়িকা?
তাঁর কথায়, যেহেতু পশুরা নিজেদের পক্ষ নিতে পারে না, আমাদের দায়িত্ব তাঁদের হয়ে দাঁড়ানো। ‘গজু’ এখনও মেলেনি, কিন্তু সুদীপার বিশ্বাস, গজুর নিখোঁজ হয়ে যাওয়াই কোনও না কোনওভাবে সত্যি একদিন সামনে আনবেই। তিনি আরও প্রশ্ন তুলেছেন, এমন একটা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ক্রেশের জন্য লাইসেন্স পাওয়া কিভাবে সম্ভব? প্রশাসন কেন ঠিকমত পর্যবেক্ষণ করে না এসব বিষয়? শুধু পোষ্য নয়, এক একজনের কাছে এরা পরিবার। আর সেই পরিবারের এক সদস্যকে হারানোর বেদনা কতটা তীব্র, তা যেন অনেকেই এবার একটু ভালো করে বুঝলেন।
দুর্গাপুর ধ’র্ষণ কান্ডে মুখ্যমন্ত্রীর ‘রাত ৮টা’ মন্তব্যে ক্ষোভ টলিপাড়ায়, সোশ্যাল মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ঋদ্ধি-ঋত্বিক-রুদ্রনীলের