বাংলা সিনেমার জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী সবসময়ই নিজের অভিনয় দক্ষতা আর স্পষ্টভাষী ব্যক্তিত্বের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। যেকোনও চরিত্রে ঢুকে পড়ার ক্ষমতা তাঁকে আলাদা জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে। ‘অহনা’ ছবিকে কেন্দ্র করে তিনি নিজের কাজের অভিজ্ঞতা, ব্যক্তিগত অনুভূতি ও সমাজ নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা শেয়ার করলেন, যা দর্শকদের আরও কাছ থেকে তাঁকে চিনতে সাহায্য করে।
প্রমিতা ভৌমিক পরিচালিত ‘অহনা’-তে নাম ভূমিকায় দেখা মিলবে সুদীপ্তার। ছবিতে অহনা একজন লেখিকা, যার কলম তাকে এনে দেয় খ্যাতি—কিন্তু সহ্য করতে পারেন না তার প্রফেসর স্বামী রুদ্রনীল। স্বামীর ইনফার্টিলিটি থেকে শুরু করে দাম্পত্যের দূরত্ব—এই চরিত্রের ভেতর দিয়ে ফুটে উঠেছে মানসিক টানাপোড়েন। সুদীপ্তা বলেন, প্রমিতা ছবিটি লেখার সময় থেকেই তাঁকে ভেবে চরিত্র তৈরি করেছিলেন। এর আগে ‘পরিচয়’-এ কাজ করার পর এ ছবিতেও পরিচালকের প্রতি সেই আস্থাই তাঁকে যোগ দিয়েছে নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সাহস।
এরপরেই সমাজ-জীবন নিয়ে অভিনেত্রীর বক্তব্য যেন আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি জানান, ‘অহনা’ খুব ঠান্ডা মেজাজের চরিত্র, যেটা সাধারণত তাকে কেউ অফার করেন না। “সবসময় ঝগড়া করছি বা প্রতিবাদ করছি—এমন চরিত্রেই আমাকে লোকে দেখে,” বলেন সুদীপ্তা। তবে এই গল্পের সঙ্গে শহুরে জীবনে থাকা বহু নারী-পুরুষ মিল পাবেন বলেই মনে করেন তিনি। সুদীপ্তার কথায়, তিনি নারীবাদী নন—মানুষবাদী। প্রত্যেকে নিজের প্রাপ্য সম্মানটুকু পাক, এইটুকুই তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
একাকীত্ব নিয়েও অকপট অভিনেত্রী। দশ বছর একা থাকার অভিজ্ঞতায় তিনি শিখেছেন—শোনার লোক না থাকলে মনের কথা জমে থাকে। বিয়ের পর সেই শুনে নেওয়ার মানুষটিকে পেয়েছেন তিনি, পেয়েছেন মেয়ের সঙ্গ। কাজের চাপ বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু নিজের জন্য সময় বের করতে বর সবসময়ই তাঁকে সাহায্য করেন।
আরও পড়ুনঃ আমাকে ওঁর স্মরণসভা আয়োজন করতে হবে ভাবিনি! স্বামী ধর্মেন্দ্রকে স্মরণ করে ভেঙে পড়লেন ‘ড্রিম গার্ল’ হেমা মালিনী
আরজিকর-কাণ্ডে পথে নেমে প্রতিবাদ করেছিলেন সুদীপ্তা। সেই প্রতিবাদের ‘মূল্য’ও যে তাঁকে দিতে হয়েছে, তা স্বীকার করলেন অভিনেত্রী—গত এক বছরে তাঁর কোনও নাটক সরকারি হলে উঠেনি, কোনও সিনেমাও সরকারি হলে মুক্তি পায়নি। তবু তিনি দমে যাননি। জাতীয় পুরস্কারের প্রসঙ্গে বলেন—অঞ্জন দত্ত (‘এই রাত তোমার আমার’) এবং শ্রীলেখা মিত্র (‘মায়ানগর’) প্রাপ্য সম্মান অবশ্যই পাওয়ার যোগ্য।






