একজনের মৃত্যু, ছ’জনের গুরুতর জখম। অথচ এখনও নির্বিকার চ্যানেল কর্তৃপক্ষ! ঠাকুরপুকুর দুর্ঘটনার (Thakurpukur Incident) রেশ এখনও টলিপাড়ায় টাটকা, কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—সান বাংলার (Sun Bangla) মত একটি জনপ্রিয় চ্যানেলের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হল না কেন? যে দুর্ঘটনার সূত্রে একাধিক নাম জড়িয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন সান বাংলারই পরিচালক ও প্রযোজক—তাদের কেউই এখনো সাসপেন্ড বা বরখাস্ত হননি।
শুধুমাত্র দর্শকদের চোখে ধুলো দিয়ে গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠছে নানা মহলে। ঠাকুরপুকুর কাণ্ডে গোটা টলিপাড়া যখন স্তব্ধ, তখন একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে—সান বাংলার কি কিছুই বলার নেই? ছ’জন আহত, একজনের মৃত্যু—তারপরও যাঁরা এই মর্মান্তিক ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে দেখা গেল না চ্যানেলকে। বরং ঘটনার পরেও চুপ করে বসে থেকেছে কর্তৃপক্ষ।
এখনও পর্যন্ত কোনও অফিসিয়াল বিবৃতি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি! এই নীরবতাই কি সব স্বীকার করে নেওয়ার সমান নয়? সন্ধান মিলেছে যে, ‘ভিডিয়ো বৌমা’ (Video Bouma) ধারাবাহিকের সাফল্য উদযাপন করতেই সেই পার্টির আয়োজন। আর সেখান থেকেই এই বিপর্যয়। পার্টির অতিথিদের তালিকায় ছিলেন পরিচালকের পাশাপাশি চ্যানেলের কার্যনির্বাহী প্রযোজক শ্রিয়া বসুও। ঘটনাস্থলে থাকা তিনজনের মধ্যে তাঁরও নাম রয়েছে। অথচ এখনও পর্যন্ত তাঁকেও সাসপেন্ড করা হয়নি! ভাবা যায়?
চ্যানেলের টিআরপি বাড়ানোর নেপথ্যে যারা ছিলেন, তাদের কৃতকর্মের দায় আজ পুরো ইন্ডাস্ট্রি বইছে। আরও আশ্চর্যের বিষয়, ইউটিউবার স্যান্ডি সাহা (Sandy Saha) ছাড়া এখনও পর্যন্ত কেউ-ই খোলাখুলি ভাবে অভিযুক্ত পরিচালকের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। অভিনেতা আরিয়ান ভৌমিক তো প্রথম দিনেই নিজের গা বাঁচাতে বলে দিয়েছেন তিনি কিছু জানেন না এবং ঘটনাটি কথা তিনি লোকমুখে শুটিং সেটেই শুনতে পেয়েছেন। যদিও সমাজমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিগুলিতে আরিয়ানকেও পার্টিতে দেখা গিয়েছিল।
শিল্পীদের এই ‘সেলফ-সেন্টার্ড’ মানসিকতা ও চ্যানেল পরিচালনার নির্বিকার নীরবতা যেন এক অন্যরকম কালো ছায়া ফেলে দিচ্ছে গোটা টেলিভিশন দুনিয়ায়।শুধুমাত্র মুখ চেনা হবার দরুন কি এমন পক্ষপাতিত্ব সহ্যযোগ্য? সান বাংলার এই নির্লজ্জ ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই দর্শকমহলে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। যাদের জন্য এই চ্যানেলগুলি চলে, তাদের মধ্যেই যদি মৃত্যু ঘটে এবং সেটার পরেও কোনও দায় স্বীকার না করে কর্তৃপক্ষ চুপ থাকে—তবে তো প্রশ্ন উঠেই।
আরও পড়ুনঃ “আজকাল যারা আসছে, তারা শিল্পী নয় সেলিব্রিটি হতে চায়! নয়া প্রজন্ম আসক্ত শুধুই নেশা, আর পার্টিতে।”–ঠাকুরপুকুর দুর্ঘটনা নিয়ে বিস্ফোরক ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়!
এটা কেবল এক দুর্ঘটনা নয়, বরং গোটা ইন্ডাস্ট্রির নৈতিকতার এক দেউলিয়াপনাও প্রকাশ করছে। এখন সময় এসেছে, যখন চ্যানেলগুলিকে বুঝতে হবে শুধুমাত্র টিআরপি নয়, জনসচেতনতা এবং নৈতিক দায়বদ্ধতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নইলে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি থামানো যাবে না। Sun Bangla যদি এখনও চুপ থাকে, তাহলে সেই নীরবতাকেই দর্শকরা তাদের সম্মতির স্বরূপ ধরে নেবে—এবং তার পরিণাম হয়তো আরও ভয়াবহ হবে।
খাওয়ানোর নাম করে মায়ের রান্না নিয়ে ব্যবসা? মায়ের স্বপ্নকে ঘিরে ব্যবসার অভিযোগ! নোংরা কটাক্ষের মুখে বাংলার জনপ্রিয় গায়িকা!