Tanushree Shankar; বাংলা নৃত্যশিল্প হোক বা অভিনয়ের জগৎ! তিনি অতুলনীয় সর্বত্র। তার নামে হয়তো অনেক ভূমিকাই দেওয়া যায় তবে সবটা যেন ছোট হয়ে যায় তার প্রতিভার কাছে। দুই পৃথিবী, হেমন্তের পাখি, আগুন, হামি, অপরাজিতা তুমি, অভিযাত্রিক, অরনি তখন, একটি তারার খোঁজে সহ একাধিক সিনেমায় অভিনয় করে তিনি জয় করেছেন সকলের মন। ভারতের নৃত্যশিল্পকে l তিনি তুলে ধরেছেন বিশ্বের মঞ্চে। স্টেজে নাচের মাধ্যমে তিনি বেঁধেছেন গল্পের মালা। তিনিই প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী(Dancer), কোরিওগ্রেফার (Choreographer) এবং অভিনেত্রী তনুশ্রী শঙ্কর( Tanushree Shankar)।
সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকারে তিনি তুলে ধরেছেন জীবনের নানা অঙ্গ। তিনি জানিয়েছেন “আমার বাড়ির কেউ নাচ শেখেননি কারণে সবাই ডাক্তার, উকিল। তবে আমার নাচ ছোট থেকেই ভালোলাগত। তারপর কলকাতায় এসে বাবা আমায় উদয় শঙ্কর কালচারাল সেন্টারে ভর্তি করিয়ে দেন পন্ডিত কমলেশ্বর শঙ্করের কাছে। সেখান থেকে নাচ শেখা শুরু।” সেখানেই তার আলাপ হয় বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী আনন্দ শঙ্করের (Ananda Shankar) সঙ্গে। চার বছর পর বিদেশ থেকে ফিরে আসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা।
নৃত্যশিল্পী তনুশ্রী শঙ্করের জানিয়েছেন স্বামী আনন্দশঙ্কর তার থেকে ১৩ বছরের বড়। যদিও সর্ম্পকে কোনদিনও পড়েনি ভাঁজ। এই বছর তাদের বিবাহ জীবনের ৫০ বছর পূরণ হল। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন তার স্বামী এবং শশুরবাড়ি তাকে অনেক সমর্থন করেছিলেন। “উনি (পন্ডিত আনন্দশঙ্কর) বলতেন তোমার মধ্যে যদি টেলেন্ট থাকে সেটা সবার মধ্যে ছড়াও, বৃথা যেতে দিও না। আমাদের সময় সমাজে নাচ একটা ট্যাবু ছিল। সেখানে দাঁড়িয়ে শুধু মাত্র আনন্দের সমর্থনের কারণেই আমি নাচটাকে কর্ম হিসেবে ভাবতে পেরেছি।”
নাচকে যারা কর্মজীবন হিসেবে ভাবছেন সেই সব নৃত্যশিল্পীদের উদ্দেশ্যে তিনি জানিয়েছেন “কেউ যখন জিজ্ঞাসা করে কি করো তখন বলি নাচ করি, উত্তরে লোকটি বলি নাচ তো করো আর কি করো। মানে নাচটাকে কেউ প্রফেশন হিসেবে ভাবতেই পারেনা। তোমায় আগে নিজেকে সেই জায়গায় যেতে হবে। ভালো করে শিখো। শেখা একদিন হবে না বছর বছর ধরে প্র্যাকটিস করতে করতে হবে। সবাই ভাবে একদিন সব করবো, যারা ওইভাবে ওঠে তারা তাড়াতাড়ি নেমেও যায়। এখন মেয়েরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কোম্পানির বস হচ্ছে তাহলে নৃত্যশিল্পী হবে না কেন।”
আরো পড়ুন: বিচ্ছেদ জল্পনার মাঝেই সুখবর! রাহুল- প্রীতির সংসারে আসছে নয়া সদস্য! সন্তানসম্ভবা অভিনেত্রী
তিনি এও বলেছেন “একজন ডাক্তার কাজ করে যেমন রাতে বাড়ি আসে একজন নৃত্যশিল্পীও আসে, তাতে সমস্যা কোথায়। সমাজে তোমাদের সেই জায়গাটা তৈরি করতে হবে। প্রতিযোগিতায় যাও। ইউটিউব দেখে শিখো না গুরুর কাছে যাও। যারা নাচকে প্রকৃত ভালোবাসে তারা চাকরি ছেড়েও নাচের প্রফেশনে এসেছে। সুতরাং মন থেকে ভালোবাসতে হবে। নাচের মধ্যেই তোমার ভারতীয় সত্তাকে ভুললে চলবে না। পন্ডিত উদয় শঙ্করও মর্ডান ছিলেন। তার থেকে শিখে সবাই নিজের মতো করে নৃত্যকে তুলে ধরেছে। যদিও এখন বাংলায় অনেকটাই উদয় শঙ্কর ঘরানার নাচ কদর হয়েছে। শিখতে হবে, চোখ খুলে দেখতে হবে। বাবা (উদয়শঙ্কর) বলতেন সব কিছুতে নাচ মুদ্রা আছে। শুধু তোমাকে জানতে হবে।” আগামী প্রজন্মকে এক অনবদ্য শিক্ষা দিয়েছেন তিনি। তিনি এইভাবেই ভারতীয় নৃত্যকে বিশ্বের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিন এইটাই কামনা করব।